এটাই প্রতিদিনের ছবি। জগৎবল্লভপুরের মুন্সিরহাটে তোলা নিজস্ব চিত্র।
মেরেকেটে এক কিলোমিটার রাস্তা। আর সেটুকুই এখন আতঙ্কের হয়ে দাঁড়িয়েছে জগৎবল্লভপুরের মুন্সিরহাট-সহ বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষের কাছে।
মুন্সিরহাট- আমতা রুটে মুন্সিরহাট বাজার থেকে চাঁদনিমোড় পর্যন্ত রাস্তার অংশটুকু মূল রাস্তার প্রায় অর্ধেক হয়ে গিয়েছে জবরদখলের কারণে। এতটাই সরু হয়ে গিয়েছে যে গাড়িঘোড়ার মাঝে সাদারণ মানুষের পথচলাই দায় হয়ে পড়েছে। তার উপর হাট-বাজার বসলে সকাল-সন্ধে চলাফেরা করাই মুশকিল হয়ে দাঁড়ায়। সরু রাস্তায় অটো, ম্যাজিক, ট্রেকারের দাপাদাপিতে পথচারীদের প্রাণান্তকর অবস্থা। তা ছাড়া বড় বড় মালবোঝাই লরিও ঢুকে পড়ে। পরিণামে যানজট। সকালে ব্যস্ত সময়ে এ হেন অবস্থায় নাভিশ্বাস ওঠার জোগাড় হয় নিত্যযাত্রী থেকে সাধারণ মানুষ, রোগী নিয়ে হাসপাতালের পথে অ্যাম্বুল্যান্সের।
এলাকার মানুষের অভিযোগ, রাস্তার এমন অবস্থা সম্পর্কে জগৎবল্লভপুরের বিডিও, পঞ্চায়েত সমিতি, পূর্ত দফতর নানা জায়গায় জানানো হয়েছে। কিন্তু হুঁশ ফেরেনি প্রশাসনের। পুলিশের দাবি, তাঁরা ওখানে সিভিক ভলান্টিয়ার মোতায়েন রেখে যতটা সম্ভব যানজট সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু সমস্যা হল জবরদখল। স্থানীয় বাসিন্দা ইউসা আব্বাসী, কলেজ ছাত্রী শর্মিষ্ঠা মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সকাল-সন্ধ্যা ওই এলাকা থেকে যাতায়াত আমাদের কাছে আতঙ্কে পরিণত হয়েছে। সাধারণ মানুষের স্বার্থে দ্রুত সমস্যার সমাধান করা উচিত প্রশাসনের।
হাওড়া-মুন্সিরহাট রোড ও হাওড়া-আমতা রোডের মধ্যে সংযোগকারী এই রাস্তা প্রায় সাড়ে ১২ কিলোমিটার দীর্ঘ। এর মধ্যে সাড়ে এগারো কিলোমিটার রাস্তা বেশ চওড়া, ঝাঁ চকচকে। বছর খানেক আগে ওই অংশ প্রায় ৬ কোটি টাকা ব্যয়ে সংস্কার করেছে পূর্ত দফতর। কিন্তু দুয়োরানির দশা এক কিলোমিটার অংশের। আর ওই এক কিলোমিটারই যন্ত্রণা হয়ে দাঁড়িয়েছে এলাকার মানুষ, যানচালকদের কাছে। দু’পাশ দখল হতে হতে রাস্তা এখন মাত্র ফুট দশেকে এসে ঠেকেছে। তার উপর অনেক জায়গায় রাস্তা উঁচুনিচু খানা-খন্দে ভরা। মুন্সিরহাট বাজার থেকে দু’টি বাইপাস থাকলেও সেই দু’টি রাস্তাও খুব সংকীর্ণ। ফলে ওই রাস্তা লোকজন এড়িয়ে চলেন। ফলে জগৎবল্লভপুর থানা, গ্রামীণ হাসপাতাল সহ বিভিন্ন প্রশাসনিক ভবন যাওয়ার একমাত্র রাস্তা কার্যত এটিই। কিন্তু সংকীর্ণ রাস্তায় বড় বড় মালবোঝাই লরি ঢুকে পড়ে। ফলে তখন দু’দিকই যানজটে অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে।
পূর্ত দফতরের বক্তব্য, মাত্র বছর খানেক আগে তাঁরা রাস্তাটির সিংহভাগ অংশের সংস্কার করলেও ওই অংশটুকু সংস্কার করা যায়নি। কারণ রাস্তার দু’পাশ থেকে জবরদখল হটানো যায়নি। এ ক্ষেত্রে স্থানীয় প্রশাসন ও পঞ্চায়েত সমিতিরও ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা। রাস্তা জবরদখলের জন্য সমস্যার কথা স্বীকার করেছেন জগৎবল্লভপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি হাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, ‘‘শীঘ্রই বিষয়টি নিয়ে সমিতিতে আলোচনা করে দ্রুত ব্যবস্থা নেব।’’ যদিও এতদিন কেন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি তার কোনও সদুত্তর মেলেনি। পূর্ত দফতরের এক কর্তা জানান, রাস্তার ওই অংশ সংস্কারের জন্য পরিকল্পনা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy