বিশাল: এমন মাছ বিকোলো মাছের মেলা। নিজস্ব চিত্র
সার দিয়ে রাখা রয়েছে ইলিশ, ভেটকি, কাতলা, বোয়াল। দরদাম করছেন ক্রেতারা। কোনও মাছের বাজার নয়, এটি একটি মেলার ছবি। তবে যে সে মেলা নয়, মাছের মেলা। সোমবার সরস্বতী নদীর পাড় ঘেষা ব্যান্ডেলের দেবানন্দপুরের কৃষ্ণপুরে এই মেলার আয়োজন করেছিল স্থানীয় বাসিন্দারা।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, মেলাটি ৫১১ বছরের পুরানো। কথিত আছে বহু বছর আগে গোস্বামী পরিবারের ছেলে রঘুনাথ দাস গোস্বামী ২৪ বছর বয়সে সন্ন্যাস নিয়েছিলেন। তার পর তিনি যখন প্রথম বাড়ি ফিরেছিলেন তখন তাঁর জন্য বিশেষ রান্নার ব্যবস্থা করা হয়। মাছের নানা পদ তৈরির জন্য স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ গোস্বামী বাড়ি সংলগ্ন মাঠে মাছমেলার আয়োজন করেছিলেন। দিনটি ছিল পয়লা মাঘ। তার পর থেকে প্রতি বছর মাঘ মাসের প্রথম দিনই একদিনের মাছ মেলা বসে। সকাল থেকে শুরু করে মেলা চলে রাত পর্যন্ত। মাঠ সংলগ্ন মন্দিরে চলে পুজোর কাজ। সারা দিন ধরে চলে বিকিকিনি। কাঁকড়া, চিংড়ির সঙ্গেই পাওয়া যায় ইলিশ, কাতলা, ভেটকি, পারসে বাটা, আড় ও বোয়াল। শুধু মাছ নয়, সংসারের নানা জিনিসও বিক্রি হয় ওই মেলায়। শুধু মাছ কিনে যাওয়া নয়, মাছ কিনে মাঠের পাশেই বনভোজনে বসে পড়েন অনেকে।
মন্দির কমিটির পক্ষে অমর চক্রবর্তী জানান, রঘুনাথ দাস গোস্বামীর স্মরণেই দীর্ঘদিন ধরে এই মেলা হয়ে আসছে। হুগলি ছাড়াও সংলগ্ন অন্য জেলার মানুষও এই মেলায় আসেন। মাছ বিক্রেতা বিষ্ণু মণ্ডল বলেন, ‘‘কয়েক বছর ধরে এই মেলায় মাছ বিক্রির জন্য আসছি। বিভিন্ন আকারের মাছ নিয়ে আসি। তবে এখানে লাভ-ক্ষতির হিসেব করে আসি না। সারা দিন মাছ বিক্রি করে রাতে ফিরে যাই।’’ মাছ কিনতে এসেছিলেন রানাঘাটের বাসিন্দা অন্নপূর্ণা হালদার। তিনি বলেন, ‘‘এত দিন শুধু মাছমেলার কথা শুনেছি। এ বার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে মেলায় এসেছি। মেলা থেকে মাছ কিনে এখানেই চড়ুইভাতিও করেছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy