Advertisement
০৬ মে ২০২৪

টাকা পেতে হন্যে হয়ে এক এটিএম থেকে অন্যটায়

আর পাঁচটা রবিবারে মতো ছিল না ১৩ নভেম্বর। খাওয়া-দাওয়া আর বিশ্রামের পরিচিত ছবিটা উধাও। ছুটির মেজাজটাকে শিকেয় তুলে সকাল থেকেই ব্যাঙ্কের সামনে ভিড় মানুষের। কেই এসেছেন পুরনো পাঁচশো, হাজারের নোট জমা দিতে, কেউ সংসার চালানোর খরচের টাকা তুলতে।

ব্যাঙ্কের সামনে দিনভর ছিল এমনই লাইন। উঠেছে টাকা না মেলার অভিযোগও।—নিজস্ব চিত্র।

ব্যাঙ্কের সামনে দিনভর ছিল এমনই লাইন। উঠেছে টাকা না মেলার অভিযোগও।—নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৪ নভেম্বর ২০১৬ ০১:২৩
Share: Save:

আর পাঁচটা রবিবারে মতো ছিল না ১৩ নভেম্বর। খাওয়া-দাওয়া আর বিশ্রামের পরিচিত ছবিটা উধাও। ছুটির মেজাজটাকে শিকেয় তুলে সকাল থেকেই ব্যাঙ্কের সামনে ভিড় মানুষের। কেই এসেছেন পুরনো পাঁচশো, হাজারের নোট জমা দিতে, কেউ সংসার চালানোর খরচের টাকা তুলতে। বেলা বাড়তে ভিড়ও বাড়ল। কিন্তু দুপুরের পর থেকেই শুরু বিভিন্ন ব্যাঙ্কের সামনে ক্ষোভ-বিক্ষোভ। ক্ষোভ-বিক্ষোভ বহু এটিএমের সামনেও। কারণ সেখানে টাকা নেই। লাইনে দাঁড়িয়ে ব্যাঙ্কে টাকা জমা বা তুলতে না পারার সংখ্যাটাও কম নয়। রবিবার সকাল থেকে সন্ধে এমন ছবি দেখা গিয়েছে হাওড়ার উলুবেড়িয়া, বাগনান, শ্যামপুর, আমতা, পাঁচলা, ফুলেশ্বর এলাকায়। একই ছবি হুগলির শ্রীরামপুর, উত্তরপাড়া, কোন্নগর, চন্দননগর, চুঁচুড়া, ব্যান্ডেল, পান্ডুয়ার মতো এলাকাতেও।

তবে অন্য ছবিও দেখা গিয়েছে। বাগনানের একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক থেকে একজন গ্রাহক ১০ হাজার টাকা তোলেন। দেখা গেল সবটাই তাঁকে একশো টাকার নোটে দেওয়া হয়েছে। অন্য একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের বাকসিহাট শাখায় এক গ্রাহক ১০ হাজার টাকা তুললে তাঁকে দেওয়া হয়েছে চারটি ২ হাজার টাকার নোট এবং কুড়িটি ১০০ টাকার নোট। কুলগাছিয়ার মান‌িকপুরে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক এদিন বিকেল ৪টের আগেই বন্ধ হয়ে যায় বলে গ্রাহকদের অভিযোগ। ফলে অনেকেই টাকা জমা দেওয়া বা তুলতে পারেননি। ডালিয়া সরকার আদক নামে এক গ্রাহক বলেন, ‘‘গাড়ির কিস্তি জমা দিতে এসেছিলাম। বিকেল ৪টের আগে এলেও আমাকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়।’’ উলুবেড়িয়া, বাগনানের মতো শহরে কিছু এটিএম খোলা থাকলেও সেখানে টাকা শেষ হয়ে যাওয়ায় হয়রানিতে পড়তে হয় গ্রাহকদের।

শ্রীরামপুরের তারাপুকুর, চুঁচুড়া, চন্দননগর, উত্তরপাড়া, ব্যান্ডেল এলাকার এটিএমগুলিতে কোথাও ঝোলানো ‘নো ক্যাশ’ আবার কোথাও দেখা গেল নিরাপত্তারক্ষী হাত জোড় করে জানাচ্ছেন ‘এখানে টাকা নেই। অন্য কোথাও চেষ্টা করুন’। সকাল ৮টা থেকেই বিভিন্ন ব্যাঙ্কের সামনে দীর্ঘ লাইন পড়ে যায়। লাইন পড়েছিল এটিএম গুলিতেও। এদিন টাকা পাওয়ার জন্য স্কুটারে এক এটিএম থেকে আর এক এটিএমে ঘুরে বেড়িয়েছেন উত্তরপাড়া বাসিন্দা নরেন হাইত। বললেন, ‘‘বাড়িতে জরুরি কাজে টাকার দরকার। তাই দু’টো এটিএম কার্ড নিয়ে বেরোই। কিন্তু অনেক এটিএম থেকেই খালি হাতে বেরোতে হয়েছে।’’ তবে দিনের শেষে তাঁর পরিশ্রম সফল। কারণ হাজার টাকা শেষ পর্যন্ত পকেটস্থ করতে পেরেছেন বলে জানালেন নরেনবাবু।

চুঁচুড়ার বাসিন্দা টুকটুকি গুঁইন বলেন, ‘‘কয়েকদিন পরেই মেয়ের বিয়ে। বিয়ের বাজার করতে গিয়ে বিপদে পড়েছি। টাকা বদলের জন্য সব কাজ ছেড়ে সকাল থেকে ব্যাঙ্কে লাইন দিয়ে যা পেলাম তাতে আবার লাইন না দিলে গভীর সঙ্কটে পড়ব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Money ATM Bank Rupee
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE