‘অটো ও টোটো’ দৌরাত্ম্যের প্রতিবাদে শুক্রবার থেকে বাস বন্ধ রেখে আন্দোলনে নামলেন চুঁচুড়ার বাসকর্মীরা। একই পথে হাঁটার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন শ্রীরাপুরের বাসকর্মীরা। তাঁরা আগামী সোমবার থেকে পথে নামার হুমকি দেন। এ দিকে, চুঁচুড়া বাসস্ট্যান্ড থেকে কোনও বাস না চলায় গন্তব্যস্থলে পৌঁছতে সেই অটো, টোটোতে বাদুড়ঝোলা হয়ে যাত্রীদের যাতায়াত করতে হচ্ছে। হুগলি জেলা বাস অ্যাসোসিয়েশনের কার্যকরী সভাপতি দেবব্রত ভৌমিক বলেন, ‘‘অবিলম্বে এই সমস্যার সমাধান না হলে বাস উধাও হয়ে যাবে।’’
কোথাও দৌরাত্ম্য টোটোর, রুট ভেঙে চলা অটো। কোথাও আবার দাপট ট্রেকারের। অথচ নিয়ন্ত্রণ নেই প্রশাসনের। বেড়ে চলা ছোট গাড়ির রমরমায় হুগলির জেলায় সঙ্কটে বাসশিল্প। গত কয়েক দিনে জেলার একাধিক রুটের বাস বন্ধ করে দিয়েছেন মালিকরা। জেলা জুড়ে লাগাতার বাস ধর্মঘটের হুমকি দিয়েছিল জেলা বাস মালিকদের সংগঠন। বাস মালিকেরা যাতে ধর্মঘটের পথে না যান সে জন্য প্রশাসনের তরফ থেকে অনুরোধ করা হয়েছিল। কিন্তু সেই অনুরোধ কাজেই এল না। সিদ্ধান্ত মতোই চুঁচুড়ার মালিকেরা এ দিন বাস পথে নামালেন না। এ দিন দেখা গেল, বাসস্ট্যান্ডের ভিতরে এবং বাইরে সার বেঁধে দাড়িয়ে রয়েছে বাস। চুঁচুড়া থেকে ১, ২, ৪, ৮, ১৭, ১৮, ২৩, ৪৫(কোরলা-মগরা), ১১(পান্ডুয়া-সিংয়ের কোন), ১৩(পান্ডুয়া-কালনা), ১১এ(গুড়াপ-কালনা) প্রভৃতি রুটের বাস এদিন সকাল থেকে বন্ধ। এতে বিপাকে পড়েছেন যাত্রীরাই। ধনেখালির এক বাসিন্দা জানান, এ দিন বাস বন্ধ থাকায় বাড়ি থেকে কর্মস্থলে পোঁছতে দেরি হয়ে গিয়েছে।
তবে বাস মালিকদের অভিযোগ, পেশা বাঁচাতে বার বার তাঁরা সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরের দ্বারস্থ হয়েছেন। কিন্তু কোনও সুফল মেলেনি। তাঁদের দাবি, উল্টে যত দিন যাচ্ছে তত বেআইনি গাড়ির সংখ্যা ক্রমশই বাড়ছে। বাসকর্মীদের অভিযোগ, এক সময়ে বাসের উপর নির্ভর করেই মানুষ যাতায়াত করতেন। সম্প্রতি টোটো, অটো-সহ ছোট গাড়ি রাস্তায় নামায় বাসে যাত্রী কমছে। ফলে বাসশিল্প সঙ্কটের মুখে। বাসকর্মীদের ক্ষোভ, জেলা পরিবহণ দফতর মাঝেমধ্যে ধড়পাকড়ের নামে অভিযান চালায়। সেটা শুধু নামমাত্র। অভিযান বন্ধ হয়ে গেলে আবার যে কে সেই। জেলা সদর শহরে রাস্তার গতি কমেছে একমাত্র নিয়ন্ত্রণহীন টোটো অটোর দাপটে। ৪ নম্বর রুটের সম্পাদক অনুদ্যুতি চক্রবর্তী বলেন, ‘‘বেআইনি অটো-টোটোর বিরুদ্ধে অনেক আন্দোলন করা হয়েছে। কিন্তু কোনও কিছুতেই সুরাহা হয়নি। জেলাশাসক আমাদের ডেকেছেন সমস্যা সমাধানের জন্য। দেখা যাক কী হয়।’’
জেলা আঞ্চলিক পরিবহণ দফতরের অধিকর্তা সুজয় সাধু বলেন, ‘‘বাসমালিক ও কর্মীরা তাঁদের অভিযোগ জানিয়েছেন। আমরা চেষ্টা করছি যত শীঘ্র সম্ভব সমস্যা সমাধান করার। বেআইনি অটো-টোটোর বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হয়। আগামী দিনে এই সমস্যা সমাধানের জন্য অভিযান চালানো হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy