Advertisement
০৪ মে ২০২৪
খারাপ রাস্তায় বাস বন্ধ সাতদিন

ভোগান্তিতেও প্রশাসনের টনক নড়ে না, অভিযোগ

রাস্তা জুড়ে খানাখন্দ। পিচের বিন্দুমাত্র অস্তিত্ব নেই। কোথাও আবার অনেকটা জায়গা জুড়ে গভীর গর্ত। বছরের পর বছর ধরে এমন বেহাল রাস্তা দিয়েই যাতায়াত করতে হচ্ছে গোঘাটের নকুন্ডা এবং গোঘাট পঞ্চায়েত এলাকার অন্তত ১২টি গ্রামের মানুষকে। সাইকেল ও মোটর বাইক, ভ্যানরিকশা থেকে বাস সবই চলছে ওই রাস্তা দিয়েই।

বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন গ্রামবাসীরা। সোমবার। — নিজস্ব চিত্র

বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন গ্রামবাসীরা। সোমবার। — নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
গোঘাট শেষ আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০১৬ ০১:৪৪
Share: Save:

রাস্তা জুড়ে খানাখন্দ। পিচের বিন্দুমাত্র অস্তিত্ব নেই। কোথাও আবার অনেকটা জায়গা জুড়ে গভীর গর্ত। বছরের পর বছর ধরে এমন বেহাল রাস্তা দিয়েই যাতায়াত করতে হচ্ছে গোঘাটের নকুন্ডা এবং গোঘাট পঞ্চায়েত এলাকার অন্তত ১২টি গ্রামের মানুষকে। সাইকেল ও মোটর বাইক, ভ্যানরিকশা থেকে বাস সবই চলছে ওই রাস্তা দিয়েই।

হুগলির গোঘাট-১ ব্লকের ভিকদাস থেকে কোটা পর্যন্ত জেলা পরিষদের ১৩ কিলোমিটার দীর্ঘ ওই রাস্তার মধ্যে ১১ কিলোমিটারের অবস্থাই শোচনীয়। যার পরিণামে মাঝেমধ্যেই ঘটে দুর্ঘটনা। রাস্তা সারানোর দাবি জানিয়‌ বন্ধ হয় বাস চলাচল। তখনকার মতো স্থানীয় মানুষের ক্ষোভ সামাল দিতে পঞ্চায়েত বা পঞ্চায়েত সমিতি থেকে কোনওমতে তাপ্পি দেওয়া হলেও কিছুদিন পরেই রাস্কতার অবস্থা ফের যে কে সেই। নকুন্ডা এবং গোঘাট পঞ্চায়েত এলাকার ১২ টি গ্রামের মানুষের সঙ্গে শহরের বা অন্যত্র যোগাযোগের একমাত্র উপায় এই রাস্তা। নকুন্ডা পঞ্চায়েত এলাকাটি আবার বন্যা কবলিত। স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, রাস্তার জন্য সংলগ্ন গ্রামগুলির অর্থনৈতিক উন্নতিও থমকে আছে। এমনকি বিয়ে ভেঙে যাওয়ার নজিরও রয়েছে।

তাঁদের আরও অভিযোগ, রাস্তাটির পূর্ণাঙ্গ সংস্কারের দাবিকে কোনও গুরুত্বই দেয় না পঞ্চায়েত-প্রশাসন। দিন কয়েক আগে ফের দুর্ঘটনা ঘটায় গত ১২ অক্টোবর থেকে ওই রাস্তায় বাস চলাচল পুরোপুরি বন্ধ করে দিয়েছেন বাসমালিকরা। শুধু বাস চলাচলই নয়, রাস্তা খারাপের কারণে অ্যাম্বুল্যান্স বা মাতৃযানের মতো জরুরি পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হতে হচ্ছে এলাকার মানুষকে। কেউ অসুস্থ হলে প্রচণ্ড সমস্যা পড়ছেন রোগীর বাড়ির লোকজন। রাস্তাটি অবিলম্বে মেরামত এবং বাস চলাচল শুরুর দাবিতে সোমবার কয়েকশো মানুষ স্থানীয় নকুন্ডা পঞ্চায়েত ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখান। গোঘাট ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মৃণাল আলু ১০ দিনের মধ্যে রাস্তাটি অস্থায়ীভাবে মেরামতের আশ্বাস দিলে বিক্ষোভ ওঠে।

মৃণালবাবু বলেন, ‘‘রাস্তার স্থায়ী মেরামত অত্যন্ত জরুরি। বিষয়টা নিয়ে জেলা পরিষদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে। বিধায়ক তদবিরও করছেন।” গোঘাটের বিধায়ক মানস মজুমদার বলেন, ‘‘গ্রামবাসীদের বিক্ষোভ সঙ্গত। রাস্তাটির পূর্ণাঙ্গ সংস্কার জরুরি। বর্তমানে জেলা পরিষদের সেই আর্থিক সঙ্গতি নেই। এর জন্য রাস্তাটি পূর্ত দফতরকে হস্তান্তর করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।’’

ব্লক প্রাশসন সূত্রে জানা গিয়েছে, রাস্তাটি জেলা পরিষদ নির্মাণ করে ১৯৮৯ সালে। ভিকদাস থেকে সানবাঁধি পর্যন্ত তিন কিলোমিটার কিছুটা অক্ষত থাকলেও বাকি ১১ কিলোমিটার একেবারেই বেহাল। ওই রুটের বাস মালিক সংগঠনের সম্পাদক বৈদ্যনাথ নন্দী বলেন, “প্রায় প্রতিদিন বাসের যন্ত্রাংশ ভাঙছে। দুর্ঘটনা ঘটছে। বহুবার বাস বন্ধ রেখে প্রতিবাদ করেছি। প্রশাসন কথা দেয় কিন্তু কোনও পদক্ষেপ করে না। তাই বাধ্য হয়ে আমরা বলেছি রাস্তা মেরামত না হলে যাত্রী নিয়ে বাস চালানোর ঝুঁকি নেব না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

distress
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE