জমা জল ঠেলেই যাতায়াত। মঙ্গলবার, হাওড়ায়। —নিজস্ব চিত্র।
একে মান্ধাতা আমলের নিকাশি ব্যবস্থা, তার উপরে নিকাশি নালাগুলি সংস্কারও হয় না নিয়মিত। তার জেরে ভাসল হাওড়ার বিস্তীর্ণ এলাকা।
নিকাশি ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তনে যে ফল মেলে তার প্রমাণও কিন্তু এবার পেল এই শহর। এই প্রথম এমন কিছু এলাকায় জল জমলো না যেখানে প্রতিবছর সামান্য বৃষ্টিতেই হাঁটু জল জমে যায়।
সমবার রাতভর বৃষ্টিতে হাওড়া পুরসভার অনেকগুলি ওয়ার্ডের রাস্তাঘাট ছিল বানভাসি। পুরসভার ৫০টি ওয়ার্ডের মধ্যে সব থেকে নিচু এলাকা বলে পরিচিত পঞ্চাননতলা রোড, বেলিলিয়াস লেন, বেলিলিয়াস রোড ও টিকিয়াপাড়ায় প্রায় হাঁটু জল জমে যায়। নর্দমা উপচে জল ঢুকে পড়ে বাড়িতে।
বাসিন্দাদের অভিযোগ, বর্ষার আগে পুরসভা নর্দমা থেকে পলি ও প্ল্যাস্টিক না তোলায় আগে থেকেই ওই এলাকার নর্দমাগুলির গভীরতা কমে গিয়েছিল। তাই এই ভারী বৃষ্টিতে জল বেরোবার রাস্তা না থাকায় এলাকার বাস্তাঘাট ভেসে গিয়েছে। একই অবস্থা হয়েছে পুরসভার ৭, ৯, ২২, ২৪, ৪৮, ৪৯, ৫০ নম্বর ওয়ার্ড সহ উত্তর হাওড়ার টিএল জায়সবাল হাসপাতাল ও হাসপাতাল সংলগ্ন রাস্তাঘাট ও এলাকা। ওই হাসপাতালে এদিন ইমার্জেন্সি বিভাগ সহ বর্হিবিভাগে জল জমে যায়। দেখা যায় অনেক রোগীই বিছানায় পা তুলে বসে আছেন। রোগীর পরিবারের লোকজনকে জমা জলে পা ডুবিয়েই যাতায়াত করতে হচ্ছে।
জমা জলে ব্যাহত হয়েছে ট্রেন চলাচলও। এ দিন সকালে টিকিয়াপাড়ার কাছে ইএমইউ কারশেডে জল জমে থাকায় বাতিল করতে হয় মেন লাইনের ৬টি লোকাল ট্রেন। পূর্ব রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, বেলা ১১টার মধ্যে রেল লাইন থেকে জল নেমে যাওয়ায় ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়ে যায়। পুরসভার অভিযোগ, বর্ষার আগে ওই এলাকার নর্দমাগুলি থেকে পাঁক তোলা হয়েছিল। কিন্তু পূর্ব রেলের সমস্ত জল নোনাপাড়া দিয়ে বেরোবার জন্যই পুর এলাকায় জল জমে গিয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলের পরে ফের বৃষ্টি নামায় রেল কর্তারা প্রমাদ গোনেন।
হাওড়ার ভোগান্তি বাড়িয়েছে ইস্টওয়েস্ট মেট্রোর কাজও। ওই কাজের জন্য বন্ধ হয়ে গিয়েছে বেশ কিছু নিকাশি নালা। তার জন্য এ দিন চার্চ রোড ছিল প্রায় দেড় ফুট জলের তলায়। হাওড়া পুরসভা দাবি, এ দিন বাসস্টান্ডে জল জমলেও তা অতি দ্রুত নেমেও গিয়েছে।
বেনারস রোড, ইস্ট ওয়েস্ট বাইপাস, বেলগাছিয়া এলাকা অপেক্ষাকৃত নিচু অঞ্চল বলে পরিচিত। ওই সব এলাকায় কিন্তু জল জমেনি এবার। পুরসভার দাবি, ওই সব নিচু এলাকার জল বেলগাছিয়া ভাগাড়ের জলাধারে পড়ে। সেই জলাধারের আমূল সংস্কার করা হয়েছে। তারই ফল মিলেছে।
হাওড়ার মেয়র রথীন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘হাওড়ার পুরানো নিকাশি ব্যবস্থার আমূল বদল ছাড়া জল জমা বন্ধ করা সম্ভব নয়। তবে আমরা ৩০ শতাংশ ক্ষেত্রে সফল হয়েছি। জল জমার পরিমাণ অনেকটাই কমানো গিয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy