শ্রীরামপুরের মতো উত্তরপাড়াও গত গ্রীষ্ম ও বর্ষার স্মৃতি এখনও ভুলতে পারেনি। গত বছর এই দুই সময়ে উত্তরপাড়া পুর এলাকায় মশা বাহিত জ্বর ভয়ঙ্কর ভাবে ছড়িয়েছিল। ডেঙ্গিতে একজন মারাও গিয়েছিলেন। উত্তরপাড়া হাসপাতালে মশা বাহিত জ্বরে আক্রান্ত হয়ে বহু মানুষ ভর্তিও হন।
কিন্তু তার পরেও এ বার মশা নিধনে জেলা স্বাস্থ্য দফতর বা পুরসভার সেভাবে হেলদোল নেই বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বাসিন্দারা। পুর এলাকা ঘুরে দেখা গেল, নর্দমা আবর্জনায় ভর্তি। ওয়ার্ডও অপরিচ্ছন্ন। এখানেই শেষ নয়। যে পুকুরগুলি এখনও অবশিষ্ট আছে তার প্রতিটিই কচুরিপানা আর আবর্জনায় ভর্তি। দিন বা রাত— যে কোনও সময়ে ওই সব পুকুর পাড়ে গেলে মশার কামড়ে নাজেহাল হতে হয়।
উত্তরপাড়া পুরসভায় ২৪টি ওয়ার্ড আছে। পুর কর্তৃপক্ষ প্রতিটি বাড়ি থেকে আবর্জনা আর ময়লা নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করেছেন। পুরকর্মীদের অভিযোগ, একশ্রেণির বাসিন্দা এলাকা পরিষ্কার রাখার ব্যাপারে সচেতন নন। তাঁরা সময় মতো ময়লার গাড়িতে আবর্জনা ফেলেন না। পুরকর্মীরা এলাকা ছাড়লে তাঁরা সে সব নোংরা রাস্তায় ফেলেন। আবার বহু ক্ষেত্রেই তাঁরা আবর্জনা নর্দমায়ও ফেলে দেন। এর ফলে নর্দমায় জল আটকে যায়। মশার উপদ্রব হয়। পুরসভার তরফে জানানো হয়েছে, বর্তমানে উন্নত পদ্ধতিতে ময়লা পরিষ্কার করা হয়। কিন্তু নর্দমায় ফেলা প্লাস্টিক সেই যন্ত্রকেও থামিয়ে দিচ্ছে। ফলে বিঘ্নিত হচ্ছে নর্দমা পরিষ্কারের কাজ।
এ ছাড়া এখন ঘরে ঘরে এসি রয়েছে। এসির প্লেটে জমা জলে মশা জন্মায়। মানুষ ওই জল ফেলে দেন না। বহু ক্ষেত্রেই দেখা যায়, ফাঁকা জমিতে জঙ্গল ভর্তি হয়ে রয়েছে। জমির মালিকেরা নিয়মিত জমি পরিষ্কার করেন না। কাউন্সিলররা সচেতন না হওয়ায় এলাকা অপরিষ্কার থাকার অন্যতম প্রধান কারণও।
পুর কর্তৃপক্ষের অবশ্য দাবি, একমাত্র বর্ষার সময় বাদে সারা বছরই মশার তেল খোলা নর্দমায় দেওয়া হয়। পুরপ্রধান দিলীপ যাদব বলেন, ‘‘মশার আঁতুড়ঘর হিসেবে ৬টি ওয়ার্ডকে বেছে নিয়ে তেল দেওয়া হয়। কিন্তু খোলা নর্দমা মশার পক্ষে সহায়ক হয়। এ পর্যন্ত মাত্র ১০ থেকে ১৫ শতাংশ নর্দমাকে ঢাকা দেওয়া গিয়েছে। খোলা নর্দমা যত কমবে মশার উপদ্রবও ততই কমানো যাবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy