Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

বাধা কাটিয়ে ফের শুরু রবীন্দ্রভবন সংস্কার

১৯৮০ সালে চুঁচুড়ার গঙ্গার তীরবর্তী এলাকায় স্থাপিত হয়েছিল ৭১২ আসনের এই রবীন্দ্রভবন। কিন্তু দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় ক্রমশ বেহাল পড়েছিল এই সাংস্কৃতিক কেন্দ্র।

নবরূপে: জোর কদমে চলছে রবীন্দ্রভবন সংস্কারের কাজ। নিজস্ব চিত্র

নবরূপে: জোর কদমে চলছে রবীন্দ্রভবন সংস্কারের কাজ। নিজস্ব চিত্র

তাপস ঘোষ
চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ০৭ নভেম্বর ২০১৭ ০১:৪৭
Share: Save:

বেহাল চুঁচুড়ার রবীন্দ্রভবন সংস্কার শুরু হয়েছিল বছর খানেক আগে। কিন্তু সেই সময় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল টাকার সংস্থান। এখন সেই বাধা সরেছে। তবে এ বার সমস্যা দানা বেঁধেছে বিদ্যুৎ সংযোগ ঘিরে। যার জেরে পিছিয়ে যাচ্ছে নতুন কলেবরে ভবন উদ্বোধন।

১৯৮০ সালে চুঁচুড়ার গঙ্গার তীরবর্তী এলাকায় স্থাপিত হয়েছিল ৭১২ আসনের এই রবীন্দ্রভবন। কিন্তু দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় ক্রমশ বেহাল পড়েছিল এই সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। হলের ছাদ থেকে জল পড়ত। দর্শকাসন ছিল ভাঙা। এমনকী অনুষ্ঠান চলাকালীন বেশ কয়েকবার আসন ভেঙে দুর্ঘটনাও ঘটেছিল। আস্তে আস্তে বন্ধ হয়ে যায় এই কেন্দ্র। রবীন্দ্রভবন সংস্কারের দাবিতে এরপর আন্দোলন শুরু করেন এলাকার সংস্কৃতিপ্রেমী মানুষ, বিভিন্ন সংগঠন। এরপর রাজ্য সরকারের তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের উদ্যোগে রববীন্দ্রভবন সংস্কারে বরাদ্দ হয় ১ কোটি ৮ লক্ষ ৬১ হাজার ২০২ টাকা। তবে সার্বিক উন্নয়নের জন্য এই টাকা পর্যাপ্ত ছিল না বলে অভিযোগ ওঠে। ফলে কাজ বন্ধ হয়ে যায়।

সদর শহরের মধ্যে কোনও সাংস্কৃতিক ভবন না থাকায় সমস্যায় পড়ে সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলি। কোনও অনুষ্ঠান করতে গেলে ভরসা ছিল পাশের শহর চন্দননগরের রবীন্দ্রভবন। সেখানে যাতায়াত, খরচ মিলিয়ে আর্থিক সমস্যা দেখা দেয় স্থানীয় সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলির। এই অবস্থায় বিভিন্ন সাংস্কতিক সংস্থাগুলি ফের আন্দোলনে নামে। অবিলম্বে রবীন্দ্রভবন চালুর দাবিতে মিটিং মিছিল এবং জেলা প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপি জমা দেওয়া হয়।

প্রায় তিন বছর পর চুঁচুড়ার বিধায়ক অসিত মজুমদারের উদ্যোগে চলতি বছরের গত ১১ জুলাই ভবন সংস্কারের জন্য রাজ্য সরকারের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়। সেই মতো রাজ্য সরকারের তথ্য ও সংস্কৃতি দফতর ২ কোটি ২লক্ষ ১৩ হাজার ৮০০ টাকা অনুমোদন করে। এরপর জুলাইয়ের মাঝামাঝি থেকে ফের জোর কদমে শুরু হয় ভবন সংস্কার। কথা ছিল চলতি বছরের নভেম্বরের মধ্যে কাজ শেষ করা হবে। ভবনের উদ্বোধন হবে আগামী ডিসেম্বর মাসে।

এত কাজের মধ্যেও কপালে ভাঁজ ফেলছে বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়ে সমস্যা। প্রথমে ঠিক ছিল জেলাপ্রশাসনের নতুন ভবনের সংযোগকারী ট্রান্সফর্মার থেকে রবীন্দ্রভবনের বিদ্যুৎ সংযোগ করা হবে। কিন্তু রবীন্দ্রভবনে যে পরিমাণ বিদ্যুৎ প্রয়োজন তাতে ওই একই ট্রান্সফর্মার থেকে সংযোগ করলে বিপদের সম্ভাবনা থেকে যায়। ফলে তার জন্য নতুন ট্রান্সফর্মার লাগিয়ে তা থেকে ভবনের বিদ্যুৎ সংযোগের প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। আর এর জেরে কাজে কিছুটা দেরি হতে পারে অনুমান ঠিকা সংস্থার।

সংস্কৃতি অনুরাগী চুঁচুড়ার বাসিন্দা উৎপল ভট্টাচার্যর অভিযোগ, ‘‘অনেকদিন হল রবীন্দ্রভবন বন্ধ হয়ে পড়ে। এর ফলে সরকারের যেমন আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে, তেমনই আবার সমস্যায় পড়ছে সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলি। কবে সমস্যা মিটবে, বোঝাই যাচ্ছে না।’’

বিধায়ক অসিত মজুমদার জানান, কাজ যে গতিতে চলছিল তাতে এই বছরেই রবীন্দ্রভবন চালু হতে পারত। কিন্তু বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়ে একটা সমস্যা দেখা দেওয়ায় রবীন্দ্রভবন চালুর ক্ষেত্রে কিছুটা দেরি হবে। তবে তাঁর আশ্বাস, ‘‘এর ফলে অতিরিক্ত খরচের জন্য কিছুটা আর্থিক সঙ্কট দেখা দেবে। তবে আগামী বছরের প্রথম দিকেই রবীন্দ্রভবন চালু হবে, আশা করছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Rabindra Bhaban Reformation Chunchura
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE