Advertisement
০৪ মে ২০২৪

গ্রামেই বেশি দাপট ডিজের

আরও কয়েক জনকে মারধর করা হয়। উত্তেজনা ছড়ায়। দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ ফের ঘটনাস্থলে এসে লাঠি চালিয়ে গোলমালকারীদের সরিয়ে দেয়।

উদ্দাম: ডিজে চালিয়ে চলছে নাচ। আরামবাগে। নিজস্ব চিত্র

উদ্দাম: ডিজে চালিয়ে চলছে নাচ। আরামবাগে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৩:০১
Share: Save:

পুলিশ ছিল সর্বত্রই। কিন্তু হুগলির গ্রামাঞ্চলে বিশ্বকর্মা পুজোয় ডিজে-দৈত্যের দাপটে নাকাল হলেন সাধারণ মানুষ। তারস্বরে ডিজে বাজানোকে কেন্দ্র করে আরামবাগের গৌরহাটি মো়ড়ে মারধর, ভাঙচুর, পুলিশের লাঠিচার্জ কিছুই বাকি ছিল না সোমবার।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, সোমবার রাত ১০টা নাগাদ গৌরহাটিতে ছোট ট্রাকের চালক-খালাসিদের একটি পুজো কমিটির তরফে আরামবাগ লিঙ্ক রোডে তারস্বরে বক্স বাজিয়ে নাচানাচি চলছিল। তাতে রাস্তা কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। খবর পেয়ে আরামবাগ থানার পুলিশ এসে বক্স বন্ধ করে দেয়। অভিযোগ, পুলিশ ফিরে যাওয়ার পরে পুজোর উদ্যোক্তারা স্থানীয় এক দোকানদারকে মারধর এবং তাঁর দোকান ভাঙচুর করে। আরও কয়েক জনকে মারধর করা হয়। উত্তেজনা ছড়ায়। দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ ফের ঘটনাস্থলে এসে লাঠি চালিয়ে গোলমালকারীদের সরিয়ে দেয়। তিন জনকে গ্রেফতার করে হয়।

পুলিশ অবশ্য লাঠি চালানোর কথা মানেনি। মঙ্গলবার দুপুরে ওই পুজোর লোকজনই ডিজে বক্স সহকারে প্রতিমা নিরঞ্জন করতে যান বলে অভিযোগ। আরামবাগের পাশাপাশি চণ্ডীতলা, তারকেশ্বর, হরিপাল, সিঙ্গুর, পান্ডুয়া, খন্যান, মগরা— বিশ্বকর্মার ভাসানে সর্বত্রই কমবেশি ডিজে বেজেছে। হুগলির (গ্রামীণ) পুলিশ সুপার সুকেশ জৈন বলেন, ‘‘পুলিশ নজরদারি চালিয়ে কিছু জায়গায় ডিজে বক্স বাজেয়াপ্ত করেছে। অভিযোগ পেলে দ্রুত ব্যবস্থাও নিয়েছে।’’

বিশ্বকর্মা পুজোয় কল-কারখানা, রাস্তাঘাটে, মণ্ডপের সামনে ডিজে-বক্স বাজানো রীতিমতো রেওয়াজ হয়ে গিয়েছিল। হুগলির শিল্পাঞ্চলে অবশ্য এ বার ডিজে-র দাপট তুলনায় কম ছিল। তাতে খুশি সাধারণ মানুষ। সোমবার বিকেলে শ্রীরামপুর স্টেশনের টিকিট কাউন্টারের কাছে একটি পুজোয় ডিজে বেজেছে। ডানকুনির রঘুনাথপুরের আশপাশের এলাকাতেও ডিজে বেজেছে। পুলিশের বক্তব্য, তাদের কানে অভিযোগ এলেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সকালে পিয়ারাপুরের একটি হিমঘরে ডিজে বাজানোর খবর পেয়ে পুলিশ তা বন্ধ করে দেয়। উত্তরপাড়ার পুরপ্রধান দিলীপ যাদব বলেন, ‘‘এই এলাকায় ডিজে বাজানো নিষিদ্ধ। অভিযোগ পেলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিশ্বকর্মা পুজোয় অভিযোগও আসেনি।’’

ডিজে বন্ধের দাবিতে সম্প্রতি হুগলির বিভিন্ন পুরসভায় লিখিত আবেদন জানিয়েছে শ্রীরামপুরের ‘শব্দদূষণ বিরোধী নাগরিক উদ্যোগ’। তাঁদেরও বক্তব্য, শহরাঞ্চলে ডিজের দাপাদাপি অনেকটা নিয়ন্ত্রিত ছিল। এ বার বিভিন্ন পঞ্চায়েতেও ডিজে বন্ধের আর্জি জানানো হবে। হাওড়ার উলুবেড়িয়া, বাগনান, সাঁকরাইল, ডোমজুড়ে কোথাও ডিজে চালিয়ে মাতামাতি দেখা যায়নি। পুজো উদ্যোক্তাদের একাংশের বক্তব্য, ক্লাবের পুজোর মতো লাগামছাড়া উচ্ছ্বাস বিশ্বকর্মা পুজোয় দেখা যায় না। ডিজে ব্যবহারে তাঁরা সংযত থাকেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

DJ Sound Pollution Arambagh আরামবাগ
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE