শুভেন্দু অধিকারী।
অপেক্ষার অবসান হল। শনিবার বহু প্রতীক্ষিত শ্রীরামপুর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাসের দ্বারোদঘাটন করলেন পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী এবং স্থানীয় সাংসদ তথা এইচআরবিসি-র চেয়ারম্যান কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। নথিপত্র সংক্রান্ত কিছু কাজ শেষের পরে আগামী ১৭ জানুয়ারি থেকেই পুরোদমে চালু করে দেওয়া হবে ওই টার্মিনাস। শীঘ্রই এখান থেকে দিঘা, পুরী যাওয়ার বাসও মিলবে বলে জানান শুভেন্দু।
শ্রীরামপুরের অমূল্যকানন এলাকায় পুরসভার জমিতে প্রকল্পটি তৈরি হয়েছে। বছর চারেক আগে টার্মিনাসের কাজ শুরু হলেও নানা জটিলতায় মাঝেমধ্যেই প্রকল্পের কাজ থমকেছে। সম্প্রতি বাসস্ট্যান্ড, পার্কিং প্লেস এবং একতলার কাজ শেষ হয়। কল্যাণ জানান, প্রকল্পটি গড়ে উঠেছে (বেসমেন্ট বাদে) ১ লক্ষ ৬৩ হাজার ২৭৫ বর্গফুট চৌহদ্দিতে। খরচ হয়েছে প্রায় ৫৭ কোটি টাকা। দোতলায় ঝাঁ-চকচকে বিশাল হল হয়েছে। সেখানে যাত্রী প্রতীক্ষালয়, আধুনিক মানের শৌচাগার থাকছে। পুরসভার উদ্যোগে ক্যান্টিনও চলবে।
কল্যাণ বলেন, ‘‘তিন, চার এবং পাঁচ তলার কাজ মাস পাঁচেকের মধ্যে শেষ হবে। ওই তিনটি তল বাণিজ্যিক ভাবে ব্যবহার করা হবে ভবনের খরচ তোলার জন্য। সেখানে রেস্তোরাঁ-সহ বিনোদনের ব্যবস্থা হবে।’’
পরিবহণমন্ত্রীকে কাছে পেয়ে এই শহর থেকে দিঘা, পুরী এবং ধানবাদ, রাজগির হয়ে বিহার পর্যন্ত বাস চালানোর আর্জি জানান শ্রীরামপুরের সাংসদ। শুভেন্দু জানান, এক মাসের মধ্যেই শ্রীরামপুর-দিঘা রুটে বাতানুকূল ভলভো বাস চলবে। বাসে বায়ো-টয়লেট থাকবে। পুরী এবং বিহার যে হেতু ভিন্ রাজ্য, সে জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তৈরিতে কিছুটা সময় লাগবে। সেই কাজ মিটিয়ে ওই দু’টি রুটেও বাস চালু হবে। বাসস্ট্যান্ড সাজানো-গোছানো এবং আলো লাগানোর পরিকল্পনা নেওয়া হলে পরিবহণ দফতর টাকা দেবে বলেও মন্ত্রী আশ্বাস দেন।
পুরসভা সূত্রের খবর, টার্মিনাসের বেসমেন্টে ‘পার্কিং ফি’র বিনিময়ে গাড়ি রাখতে পারবেন। এতে শহর যানজটমুক্ত হবে। অনুষ্ঠানে ছিলেন এইচআরবিসি-র ভাইস-চেয়ারম্যান সাধনরঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়, রাজ্য পরিবহণ দফতরের অতিরিক্ত সচিব তপন গঙ্গোপাধ্যায়, জেলাশাসক সঞ্জয় বনশল, চন্দননগরের পুলিশ কমিশনার অজয় কুমার, শ্রীরামপুরের পুরপ্রধান অমিয় মুখোপাধ্যায়।
১৯৯১ সালে শহরে উড়ালপুলের উদ্বোধন করতে এসে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু জানিয়েছিলেন, পুরসভা জমির বন্দোবস্ত করলে সরকার বাস টার্মিনাস তৈরি করে দেবে। এর পরেই পশ্চিম শ্রীরামপুরের জায়গাটিকে বাছা হয়। কিন্তু নানা কারণে প্রকল্প ঘিরে জটিলতা হয়। এক সময় শ্রীরামপুরের তৎকালীন সাংসদ আকবর আলি খন্দকর উন্নয়ন তহবিল থেকে কয়েক লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন বাস টার্মিনাসের জন্য। রাজ্য সরকারও টাকা দিয়েছিল। কিন্তু কাজের কাজ হয়নি। কয়েক বছর আগে ওই জমি শ্রীরামপুর পুরসভার হাতে আসে। এর পরেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে বাস টার্মিনাসের কাজে হাত দেয় এইচআরবিসি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy