Advertisement
E-Paper

জামিনে মুক্ত, কিন্তু কমিশনের নজরে

ওদের নামের তালিকা খুব একটা ছোট নয়। অভিযোগ, ওই তালিকার সকলেই আবার শাসক দলের ঘনিষ্ঠ বলেই নিজের নিজের এলাকায় পরিচিত।

শিবাজী দে সরকার

শেষ আপডেট: ২৭ মার্চ ২০১৬ ০০:৩৮

ওদের নামের তালিকা খুব একটা ছোট নয়। অভিযোগ, ওই তালিকার সকলেই আবার শাসক দলের ঘনিষ্ঠ বলেই নিজের নিজের এলাকায় পরিচিত।

বেলেঘাটা এলাকায় তৃণমূল নেতা কানপুরিয়া শঙ্করের দুই ছেলে গাবলু-গদাই, কসবা-তিলজলার সোনা পাপ্পু-মুন্না পাণ্ডে, হরিদেবপুরের দুই ভাই কালীপ্রসাদ সিংহ-দুর্গাপ্রসাদ সিংহ, হরিদেবপুরের নান্টি, বেলেঘাটা-নারকেলডাঙা-মানিকতলার রাজু নস্কর-রবি নস্কর, কাশীপুরের স্বপন চক্রবর্তী-আনোয়ারেরা সকলেই কিছুদিন আগে জামিনে ছাড়া পেয়েছে। নির্বাচন কমিশনের গুঁতোয় এ বার ভোটের আগে ওই দাগিদের প্রত্যেকের উপরে বিশেষ নজরদারির নির্দেশ দিল লালবাজার।

লালবাজার সূত্রের খবর, ওদের সকলের নাম ধরে ধরে নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, ভোটের সময়ে ওই দুষ্কৃতীরা কোনও গোলমালে জড়ালে তার দায় বর্তাবে সংশ্লিষ্ট থানাগুলির উপরেই। তাই ওই দুষ্কৃতীদের সব গতিবিধির হিসেব রাখার জন্য সংশ্লিষ্ট থানাগুলিকে নির্দেশ দিল লালবাজার। শুধু নিজেরা হিসেব রাখলেই হবে না, নিয়মিত তা জানাতে হবে নির্বাচন কমিশনকেও।

পুলিশের একাংশের অভিযোগ, নির্বাচন কমিশনের গুঁতোয় গ্রেফতার করা হলেও এরা খুব সহজেই জামিন পেয়ে যায় পাকড়াও হওয়ার কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই। একই ভাবে গ্রেফতার হওয়ার কিছু দিনের মধ্যে খুব সহজে জামিন পেয়েছে বেলেঘাটার তৃণমূল নেতা ও বহু সমাজবিরোধী কার্যকলাপে অভিযুক্ত নেতা কানপুরিয়া শঙ্করের দুই ছেলে। বেআইনি অস্ত্র-সহ গ্রেফতার হওয়ার কিছু দিনের মধ্যেই গবলু ও গদাই নামে ওই দু’জন জামিন পায়। শুধু বিরোধীরাই নন, স্থানীয় অনেকেরই অভিযোগ, লোকসভা ভোট এবং পুরসভা ভোটে শাসকদলের হয়ে এরাই ‘ভোট করিয়েছিল’ বেলেঘাটা এলাকায়। কানপুরিয়া শঙ্কর নিজেও জামিনে মুক্ত। স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য এদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার অভিযোগ মানতে নারাজ।

কসবা-তিলজলা এলাকার দুষ্কৃতী সোনা পাপ্পু, মুন্না পাণ্ডের মতো দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে গুলি চালানো, তোলাবাজি, মারধর-সহ একগাদা অভিযোগ থাকলেও তারা এখন জামিনে মুক্ত। পুলিশ সূত্রে খবর, হরিদেবপুরের পানশালা-কাণ্ডে অভিযুক্ত দুই ভাই কালীপ্রসাদ সিংহ-দুর্গাপ্রসাদ সিংহ কিছু দিন আগে জামিনে ছাড়া পেয়েছে। পুলিশের একাংশের অভিযোগ, ওই দু’জনের মাথায় শাসকদলের এক নেতার হাত আছে। হরিদেবপুরের ওই ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত নান্টিও সদ্য জামিনে ছাড়া পেয়ে এলাকায় ঘুরছে। ঘটনার পরেই নান্টির পরিবারের তরফে দাবি করা হয়েছিল, সে এক তৃণমূল কাউন্সিলরের ঘনিষ্ঠ। একই ভাবে জামিন পেয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে বেলেঘাটা-নারকেলডাঙা-মানিকতলার দাগি দুষ্কৃতী রাজু নস্কর-রবি নস্করেরা। তবে তৃণমূল কংগ্রেস সোনা পাপ্পু, কালীপ্রসাদ, নান্টি, রাজুদের কারও দায় নিতে চাইছে না।

পুলিশের একাংশের অভিযোগ, শাসকদলের ছত্রচ্ছায়ায় থাকা ওই দুষ্কৃতীদের অনেকেরই গ্রেফতারি শুধু লোক দেখানো নয়, স্রেফ ভাঁওতা। শাসক দলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার সুবাদে কেস ডায়েরিতে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে তেমন কোনও উল্লেখ্যযোগ্য প্রমাণ রাখার চেষ্টাই করেননি তদন্তকারীরা। এই ভাবে ভোটের আগে একের পর এক দাগি দুষ্কৃতীদের ছাড়া পাওয়ার ঘটনাকে অনেকেই ‘জামিন রাজনীতি’ বলছেন। যাতে নির্দিষ্ট রাজনৈতিক পরিচয় থাকার ফলে খুব সহজেই জামিন পাওয়া যায়। আর এতেই নির্বাচন কমিশন রাশ টানতে চাইছে বলে মনে করছে লালবাজারের একাংশ।

কলকাতা পুলিশের এক শীর্ষকর্তার কথায়, ‘‘প্রতি থানা এলাকায় সম্প্রতি জামিনে ছাড়া পাওয়া ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্তের সংখ্যা কম নয়। নির্বাচন কমিশনের কাছে এদের বিস্তারিত তথ্য আছে। জামিনে মুক্ত থাকার সময়ে তারা যাতে কোনও গোলমাল না করতে
পারে, তাই নির্বাচন কমিশন নজরদারি চালাতে বলেছে।’’

bail commission
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy