Advertisement
০৪ মে ২০২৪

সিপিএম প্রধানকে হটাতে পঞ্চায়েতে অনাস্থা তৃণমূলের

বিধানসভা নির্বাচন পর্ব মিটতেই শ্যামপুর ২ ব্লকের খাড়ুবেড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব জমা দিল তৃণমূল কংগ্রেস। ২০১৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে এই পঞ্চায়েতে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছিল তৃণমূলই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শ্যামপুর শেষ আপডেট: ০৯ জুন ২০১৬ ০১:৩৪
Share: Save:

বিধানসভা নির্বাচন পর্ব মিটতেই শ্যামপুর ২ ব্লকের খাড়ুবেড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব জমা দিল তৃণমূল কংগ্রেস।

২০১৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে এই পঞ্চায়েতে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছিল তৃণমূলই। কিন্তু প্রধান পদটি সংরক্ষিত ছিল মহিলা (ওবিসি)-র জন্য। যেহেতু সংরক্ষিত পদে তৃণমূলের কোনও প্রার্থী জিততে পারেননি তাই সিপিএমের জেতা মহিলা ওবিসি সদস্যকে প্রধান পদে বসাতে হয়। পরিস্থিতির চাপে সিপিএমের প্রধানকেই মেনে নিতে বাধ্য হয় তৃণমূল। যদিও এই জটিলতা কাটাতে রণকৌশলও ঠিক করে তারা। তারই অঙ্গ হিসাবে জেতা একজন পুরুষ সদস্যকে পদত্যাগ করিয়ে তাঁরই স্ত্রীকে উপ নির্বাচনে জিতিয়ে আনার পরিকল্পনা করে তারা। ওই মহিলা ওবিসি সম্প্রদায়ভুক্ত। তাঁকে প্রধান পদে প্রার্থী করে সিপিএমের প্রধানকে ক্ষমতাচ্যুত করাই ছিল তৃণমূলের পরিকল্পনা।

কিন্তু তৃণমূলের বাড়া ভাতে ছাই পড়ে সরকারে আসীন তাদের দলের নীতির ফলে। সরকারের পক্ষ থেকে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়, পঞ্চায়েত গঠনের পর আড়াই বছরের আগে কোনও প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনা যাবে না। ফলে বছর খানেক আগে উপনির্বাচনে স্বামীর শূন্যস্থানে ওবিসি সম্প্রদায়ভুক্ত মহিলা জিতলেও প্রধানের কুর্সিতে বসতে পারেননি। তৃণমূলকেও থাকতে হয় শবরীর প্রতীক্ষায়। আর সরকারের নীতির সমর্থনে বহাল তবিয়তেই পঞ্চায়েত চালাতে থাকেন সিপিএম প্রধান। কিন্তু পঞ্চায়েতের মেয়াদ আড়াই বছর পূর্ণ হতেই তৎপর হয়ে ওঠে তৃণমূল। বিধানসভা নির্বাচন শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তারা শুরু করে দেয় সিপিএম প্রধানকে ক্ষমতাচ্যুত করার প্রক্রিয়া।

ব্লক প্রশাসন সূত্রে খবর, গত ১ জুন তৃণমূলের তরফে প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব জমা পড়ে। প্রস্তাবের উপরে ভোটাভুটি হওয়ার কথা আগামী ১৩ জুন। খা়ড়ুবেড়িয়া পঞ্চায়েতে মোট সদস্য ২১ জন। এর মধ্যে তৃণমূলের ১৩ ও বামফ্রন্টের ৮ জন সদস্য রয়েছেন। ফলে আপাত দৃষ্টিতে হার অনিবার্য হলেও লড়াইয়ের ময়দান ছাড়তে নারাজ সিপিএমের প্রধান কাকলি মান্না। তিনি বলেন, ‘‘আড়াই বছর সবাইকে সঙ্গে নিয়ে মিলেমিশে উন্নয়নের কাজ করেছি। অনাস্থা প্রস্তাবে আমাকে যদি হারিয়ে দেওয়া হয় সাধারণ মানুষ কী তা মেনে নেবেন। পঞ্চায়েত সদস্যরাও নিশ্চয় সে কথা মনে রেখেই ভোটাভুটিতে অংশ নেবেন।’’

কাকলীদেবীর এমন মন্তব্যে প্রমাদ গুনতে শুরু করেছেন তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশ। তাঁদের আশঙ্কা, সিপিএমের পক্ষ থেকে তৃণমূলে ফাটল ধরিয়ে তাদের পঞ্চায়েত সদস্যদের নিজেদের দিকে টেনে নিতে ইতিমধ্যেই চেষ্টা শুরু করেছে সিপিএম। যদিও সিপিএম নেতৃত্ব এই ধরনের কোনও চক্রান্তের সঙ্গে জড়িত থাকার সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়েছেন। তৃণমূল নেতা নদেবাসী জানা বলেন, ‘‘সংখ্যার বিচারে তৃণমূল এগিয়ে আছে। মানুষের রায় যে তৃণমূলের পক্ষে রয়েছে ২০১৩-র পঞ্চায়েত ভোটে স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। আইনের ফাঁক গলে সিপিএম প্রধানের পদ পেয়ে গেলেও গত আড়াই বছরে উন্নয়নমূলক কাজ হয়নি বললেই চলে। এর জন্য প্রধানের অপদার্থতাই দায়ী। অনাস্থা প্রস্তাবে প্রধানের পরাজয় শুধু সময়ের অপেক্ষা।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Panchayat TMC CPM
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE