Advertisement
E-Paper

দলের নেতাকে হেনস্থা তৃণমূল প্রধানের দলবলের

মুখ্যমন্ত্রী নিয়মিত বলে চলেছেন দলের মধ্যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব কোনওমতেই বরদাস্ত করা হবে না। কিন্তু নেত্রীর সেই বার্তা যে দলের নীচুতলা পর্যন্ত পৌঁছচ্ছে না হুগলির তারকেশ্বরের ঘটনায় ফের তা দেখা গেল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০১:১৬

মুখ্যমন্ত্রী নিয়মিত বলে চলেছেন দলের মধ্যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব কোনওমতেই বরদাস্ত করা হবে না। কিন্তু নেত্রীর সেই বার্তা যে দলের নীচুতলা পর্যন্ত পৌঁছচ্ছে না হুগলির তারকেশ্বরের ঘটনায় ফের তা দেখা গেল।

বিভিন্ন অনিয়ম নিয়ে দলীয় পঞ্চয়েত প্রধানের সঙ্গে কথা বলতে গিয়েছিলেন তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি। অভিযোগ, তাঁকে ঘাড়ধাক্কা দিয়ে বের করে দেয় প্রধানের লোকজন। শুধু তাই নয়, তাঁর সঙ্গে থাকা দলের কয়েকজন জনপ্রতিনিধিকেও মারধর করা হয়। সভাপতির দলবলের বিরুদ্ধে পাল্টা পঞ্চায়েত দফতরে ভাঙচুর চালানোর অভিযোগও উঠেছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে এমনই ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে ওঠে তারকেশ্বরের ভঞ্জিপুর পঞ্চায়েত। অঞ্চল সভাপতির দাবি, ঘটনার পর থানায় গেলে তাঁদের বিডিওকে সব জানাতে বলা হয়। পুলিশের অবশ্য বক্তব্য, কোনও পক্ষই লিখিত অভিযোগ দায়ের করেনি। তবে সমস্ত ঘটনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

পঞ্চায়েত ও স্থানীয় সূত্রের খবর, এ দিন দুপুর একটা নাগাদ ভঞ্জিপুর অঞ্চল তৃণমূল সভাপতি রামকৃষ্ণ পাল, পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যা ভবানী চট্টোপাধ্যায়, পঞ্চায়েত সদস্য গোবিন্দ মাঝি-সহ কয়েক জন তৃণমূল নেতা পঞ্চায়েতে যান। রাস্তা তৈরি না করে সেই বাবদ টাকা তোলা, একশো দিনের কাজে অনিয়ম-সহ নানা অভিযোগ নিয়ে প্রধান অশোক আঁশের সঙ্গে কথা বলতে গিয়েছিলেন তাঁরা। তাঁদের অভিযোগ, সেই সময় প্রধানের অনুগামী বেশ কিছু তৃণমূল কর্মী তাঁদের উপরে চড়াও হয়। রামকৃষ্ণবাবু-সহ অন্যদের চড়-থাপ্পর মারতে মারতে পঞ্চায়েতের বাইরে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেও তাঁদের মারধর করা হয়।

তারকেশ্বরে দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নিয়ে এমনিতেই জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব বিব্রত। এর আগে একাধিক ঘটনায় তারকেশ্বরের পুরপ্রধান স্বপন সামন্ত এবং উপ-পুরপ্রধান উত্তম কুণ্ডুর অনুগামীদের মধ্যে দ্বন্দ্ব সামনে এসেছে। স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব সূত্রে খবর, এ দিনের গোলমালও তারকেশ্বরের পুরপ্রধান স্বপন সামন্ত এবং উপ-পুরপ্রধান উত্তম কুণ্ডুর অনুগামীদের মধ্যে। গোবিন্দবাবুরা স্বপন সামন্তের এবং প্রধান উত্তমবাবুর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত।

যদিও গোবিন্দবাবুর দাবি, ‘‘অনিয়মের কোনও অভিযোগ আমরা পাইনি। উল্টে মারধর করা হল।’’ আর রামকৃষ্ণবাবুর কথায়, ‘‘আমার ৮৪ বছর বয়স। এই বয়সে দলের ছেলেদের হাতে মার খেতে হবে, স্বপ্নেও ভাবিনি। বিডিও-কে সমস্ত ঘটনা জানাব।’’

ব্লক প্রশাসনের এক কর্তা অবশ্য বলেন, ‘‘ঘটনার বিষয়ে কিছু জানি না। খোঁজ নিয়ে দেখছি। অনিয়মের অভিযোগ পেলে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হবে।’’

পঞ্চায়েত প্রধান অবশ্য মারধরের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁর পাল্টা অভিযোগ, ‘‘কিছু লোক আমার কাছে এসেছিলেন। ওঁদের বলি, লিখিত ভাবে জানাতে। তখন ওরা খেপে গিয়ে উপপ্রধানের উপর চড়াও হওয়ার চেষ্টা করে। গালাগাল করে। আমাদের মারতে উদ্যত হয়। চেয়ার-টেবিল উল্টে দেয়। এখন মিথ্যা অভিযোগ করছে।’’ থানায় না যাওয়ার প্রশ্নে তাঁর দাবি, ‘‘আমাদের দলের ব্লক সভাপতি এসে বিষয়টি মিটমাট করে দিয়েছেন।’’

তারকেশ্বরের তৃণমূল বিধায়ক রচপাল সিংহের সঙ্গে চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি। এ দিনের গোলমাল প্রসঙ্গে দলের এক জেলা নেতা জানান, ঠিক কী ঘটেছিল, সে ব্যাপারে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।

TMC Lynch
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy