Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
৫১ আসনে টিএমসিপির ৮১

গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব শ্রীরামপুর কলেজে

গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব রুখতে বারে বারে বার্তা দিচ্ছেন তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। কলেজ ভোটে দ্বন্দ্ব সামাল দিতে মাঠে নামতে হচ্ছে দলীয় নেতৃত্বকে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শ্রীরামপুর শেষ আপডেট: ২৫ জানুয়ারি ২০১৭ ০০:৫১
Share: Save:

গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব রুখতে বারে বারে বার্তা দিচ্ছেন তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। কলেজ ভোটে দ্বন্দ্ব সামাল দিতে মাঠে নামতে হচ্ছে দলীয় নেতৃত্বকে। কিন্তু পরিস্থিতি বাগে আসছে না, তার প্রমাণ মিলেছে তারকেশ্বরের চাঁপাডাঙা কলেজ, রিষড়ার বিধানচন্দ্র রায় কলেজে। হুগলির এই দুই কলেজের সঙ্গে জুড়ল শ্রীরামপুর কলেজের নাম।

এই কলেজে ৫১টি আসনে ভোট হচ্ছে ৩১ জানুয়ারি। তৃণমূল সূত্রে খবর, এই কলেজে টিএমসিপি আড়াআড়ি বিভক্ত। এক পক্ষ কাউন্সিলর সন্তোষ সিংহ ও উত্তম রায়ের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। কলেজে এই গোষ্ঠীর নেতা ছাত্র সংসদের বিদায়ী সভাপতি সঞ্জিৎ রাম। অন্য পক্ষ কাউন্সিলর ঝুম মুখোপাধ্যায় ও দলের নেতা অন্বয় চট্টোপাধ্যায়ের গোষ্ঠীর বলে পরিচিত। এই শিবিরের নেতা বিদায়ী সাধারণ সম্পাদক সংখ্যায়ন দে। টিএমসিপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে এ বার কলেজে সোশ্যাল পর্যন্ত হয়নি। ছাত্রভোটে দু’পক্ষ মিলিয়ে ৪৭টি আসনের জন্য মোট ৮১ জন মনোনয়নপত্র জমা দেন। চারটিতে তারা মনোনয়ন জমা দিতে পারেননি। এসএফআই ১৭টি আসনে প্রার্থী দিয়েছে।

দিন কয়েক আগে তৃণমূল নেতৃত্বের তরফে দু’পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে প্রার্থী তালিকা নির্দিষ্ট করে দেন স্থানীয় বিধায়ক সুদীপ্ত রায়। একটি গোষ্ঠীর ২৪ এবং অপর গোষ্ঠীর ২৩ জনের তালিকা তৈরি হয়। ঠিক হয় বাকিরা মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেবেন। কিন্তু বাস্তবে একজন মাত্র মনোনয়ন প্রত্যাহার করেন। শহরের এক তৃণমূল নেতা বলেন, ‘‘আমাদের অন্তত ৩৩ জন বাড়তি প্রার্থী রয়েছে।’’ তৃণমূল সূত্রের খবর, বিধায়কের তৈরি করা তালিকা অনুযায়ী প্রার্থীদের অনুমোদন করা হবে। বাকিরা নির্দল প্রার্থী হিসেবে বিবেচিত হবেন।

সিদ্ধান্ত সত্ত্বেও কেন মনোনয়ন প্রত্যাহার করল না দুই গোষ্ঠী? সন্তোষ সিংহ ব‌লেন, ‘‘বিধায়কের তৈরি করা প্যানেলই চূড়ান্ত। আমাদের কিছু ছেলেমেয়ে যদি তালিকার বাইরে প্রার্থী হিসেবে থেকে যায়, তাদের বোঝান হবে, ওরা যেন হ্যান্ডবিল দিয়ে নিজেদের ভোট না দেওয়ার কথা প্রচার করে।’’ তাঁর যুক্তি, ‘‘তারা মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিত। কিন্তু নির্দিষ্ট দিনে কলেজের সামনে এসএফআইয়ের গোলমাল এবং শ্রীরামপুর গার্লস কলেজে ডিএসও-র ঝামেলা সামাল দিতে গিয়ে সময়সীমা পেরিয়ে যায়।’’ ঝুমদেবী ও অন্বয়বাবুদের বক্তব্য, ‘‘আমরাও বিধায়কের তৈরি তালিকা অনুযায়ী প্রার্থীদের ভোট দেওয়ার আবেদন জানাব। এর বাইরে আমাদের কোনও প্রার্থী নেই। নির্দিষ্ট তালিকা সংবলিত প্রচারপত্রে ছাত্র সংসদের বিদায়ী সাধারণ সম্পাদক সংখ্যায়ন দে এবং সভাপতি সঞ্জিৎ রাম দু’জনেরই সই থাকবে।’’

তবে কলেজে টিএমসিপি-র এক নেতার কথায়, ‘‘সব পক্ষই নিজের ওজন ভারী করতে চেয়েছিল। মনোনয়ন যাঁরা তোলেননি, তাঁরা তো কোনও না কোনও একটি গোষ্ঠীর অংশ। দল কী ভাবে বিষয়টা সামাল দেয়, দেখা যাক।’’ এর আগে মনোনয়ন তোলাকে কেন্দ্র করে করে চাঁপাডাঙা কলেজে বোমাবাজি হয়। রিষড়ার বিধান কলেজে টিএমসিপিরই একটি গোষ্ঠীর ছেলেরা আদালতের দ্বারস্থ হ‌ন। আদালত সেখানে নির্বাচন স্থগিতের নির্দেশ পর্যন্ত দিয়েছে। হাজার চেষ্টা সত্ত্বেও গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব যে এড়ানো গেল না শ্রীরামপুর কলেজেও তা এক নেতার কথায় স্পষ্ট। ওই নেতা বলেন, ‘‘এসএফআই অল্প কয়েকটি আসনে লড়ছে। মূল লড়াইটা তো আমাদের নিজেদের মধ্যেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Serampore College TMCP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE