Advertisement
১৮ মে ২০২৪

পুলিশি ধরপাকড় ক্ষুব্ধ টোটো চালকেরা

আগে ছিল রিকশা, এখন হয়েছে টোটো। ব্যাটারি চালিত এই গাড়ির কারণে প্রতিনিয়ত বাধা পাচ্ছে হাওড়া শহরের গতি। শহরের প্রধান রাস্তা থেকে এলাকার অলিগলি, সর্বত্রই এখন টোটোর রমরমা। আর তাদের নিয়ন্ত্রণ করতে হিমশিম খাচ্ছে পুলিশও। তাই মাঝেমধ্যেই ধরপাকড় করতে হচ্ছে নিয়ম না মানা টোটোকে।

থানায় বিক্ষোভ। —নিজস্ব চিত্র।

থানায় বিক্ষোভ। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২২ অক্টোবর ২০১৬ ০১:১৯
Share: Save:

আগে ছিল রিকশা, এখন হয়েছে টোটো। ব্যাটারি চালিত এই গাড়ির কারণে প্রতিনিয়ত বাধা পাচ্ছে হাওড়া শহরের গতি। শহরের প্রধান রাস্তা থেকে এলাকার অলিগলি, সর্বত্রই এখন টোটোর রমরমা। আর তাদের নিয়ন্ত্রণ করতে হিমশিম খাচ্ছে পুলিশও। তাই মাঝেমধ্যেই ধরপাকড় করতে হচ্ছে নিয়ম না মানা টোটোকে।

পুলিশের এই ধরপাকড়ের প্রতিবাদে শুক্রবার দুপুরে হাওড়ার শিবপুর থানার সামনে জিটি রোড অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখালেন কয়েকশো টোটো চালক। পরিস্থিতি সামাল দিতে এক সময়ে পুলিশকে লাঠিচার্জও করতে হয়।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, এ দিন দুপুর দেড়টা নাগাদ শিবপুর থানার সামনে জড়ো হন কয়েকশো টোটো চালক ও মালিকেরা। তাঁদের অভিযোগ, ব়ৃহস্পতিবার নাবালক এক টোটো চালককে বেধড়ক মারধর করে পুলিশ। এ ছাড়াও বেশ কয়েক মাস ধরে শিবপুর এলাকায় টোটো আটক করে ৩০০ টাকা করে জরিমানা আদায় করছে পুলিশ। কিন্তু তার কোনও কাগজপত্র দেওয়া হচ্ছে না। এই সমস্ত ঘটনার প্রতিবাদে প্রথমে টোটো চালক ও মালিকেরা শিবপুর থানার সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে সেই বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে গোটা জিটি রোড জুড়ে। বন্ধ হয়ে যায় যান চলাচল। পুলিশকে লক্ষ্য করে টোটো চালকেরা ইট ছুঁড়তে শুরু করলে বেশ কয়েকটি মোটরবাইক ও বাসের কাচ ভেঙে যায়। এমনকী বিক্ষোভকারীরা বাসে ভাঙচুর চালান বলে অভিযোগ। শেষে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শিবপুর থানার পাশাপাশি পুলিশ লাইন থেকে বিশাল বাহিনী আসে ঘটনাস্থলে। নামানো হয় র‌্যাফ, কমব্যাট ফোর্স। বিক্ষোভকারীদের হঠাতে লাঠিচার্জ শুরু করে পুলিশ। ঘটনায় আহত হন পুলিশকর্মী-সহ বেশ কয়েকজন।

টোটো চালকদের কথায়, ‘‘পুলিশ জিটি রোডে টোটো চলতে দিচ্ছে না। কোনও কারণ ছাড়াই কেস দিচ্ছে, টাকা নিচ্ছে। তাহলে আমাদের টোটোর লাইসেন্স দেওয়া হল কেন?’’ তবে হাও়ড়া শহর জুড়ে টোটোর রমরমার কথা অস্বীকার করছেন না পুরকর্তা থেকে পুলিশ প্রশাসনও। এমনকী হাওড়া টোটো ওয়ার্কাস ইউনিয়নও স্বীকার করে নিচ্ছে টোটোর জন্য তৈরি হওয়া সমস্যার কথা। যেমন হাওড়া পুরসভার মেয়র পারিষদ তথা টোটো সংগঠনের কার্যকরী সভাপতি শ্যামল মিত্র বলেন, ‘‘শহর জুড়ে অনেক অতিরিক্ত টোটো চলছে। তার জেরে প্রতি মুহূর্তে শহরের গতি স্তব্ধ হয়ে পড়ছে। পুরসভার তরফে যখন টোটোর লাইসেন্স দেওয়া হত, তখন বিষয়টা আমাদের হাতেই ছিল। কিন্তু পুলিশ লাইসেন্স দেওয়া শুরু করার পরে আমাদের হাতে আর কিছু নেই।’’ পাশাপাশি শ্যামলবাবু আরও বলেন, ‘‘এ দিনের ঘটনাটি বিক্ষিপ্ত ঘটনা মাত্র। শহরকে গতিশীল করতে টোটো নিয়ন্ত্রণে পুলিশের সঙ্গে আলোচনা চলছে।’’

হাওড়া সিটি পুলিশের ডেপুটি কমিশনার (ট্রাফিক) সুমিত কুমার বলেন, ‘‘পুলিশ রসিদ ছাড়া টাকা নিয়েছে, এ কথা সত্য নয়। কেউ সেটা প্রমাণ করুক। টোটো কোনও নিয়ম মানছে না। নিজেদের মর্জি মতো যা খুশি করে চলেছে। আর সে জন্য তাদের আটক করলেই বিক্ষোভ করছে। শহরকে সচল রাখতে এ সব মেনে নেওয়া হবে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Toto driver Protest
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE