ডাকাত কালীর মূর্তি।
দেবীর স্বপ্নাদেশ পেয়েই ডাকাত কালীর পুজো শুরু হয়েছিল হুগলির সিঙ্গুরের পুরুষোত্তমপুরে।
কথিত আছে, বহু বছর আগে ওই তল্লাটে ডাকাতের ভয়ে দিনের বেলাতেও গ্রামবাসীরা যাতায়াত করতে ভয় পেতেন। একদিন অসুস্থ রামকৃষ্ণদেবকে দেখতে কামারপুকুর থেকে দক্ষিণেশ্বরে যাচ্ছিলেন সারদাদেবী। সিঙ্গুরের উপর দিয়ে যাওয়ার সময় ডাকাত দল তাঁর পথ আটকায়। তখনই সারদার পিছনে কালী আবির্ভূতা হন। ডাকাতেরা তখন ভুল বুঝতে পারে। পুরুষোত্তমপুরের চালাঘরে সারদাদেবী রাত্রিবাস করেন। রাতে ডাকাতের স্ত্রী তাঁকে চাল-কড়াই ভাজা খেতে দেন।
এলাকার প্রবীণেরা জানান পরের দিন ডাকাতরাই তাঁকে দক্ষিণেশ্বরে রামকৃষ্ণদেবের কাছে পৌঁছে দেন। কয়েক দিন পরে ওই রাস্তা দিয়েই ব্যবসার কাজে শেওড়াফুলিতে যাচ্ছিলেন সিঙ্গুরের মোড়ল পরিবারের এক সদস্য। তিনি ক্লান্ত হয়ে পুরুষোত্তমপুরে পথের ধারেই ঘুমিয়ে পড়েন। তখন তিনি কালীর স্বপ্নাদেশ পান। এর পর সিঙ্গুরের চালকেবাটির মোড়লেরা মিলে চালাঘর ভেঙে মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। তখন থেকে ওই মন্দিরে পুজো আরম্ভ হয়। এর পরে নিত্যপুজোর জন্য বর্ধমানের রাজাকে স্বপ্নাদেশ দেন দেবী। সেই থেকেই মহা ধুমধাম করে পুজো চলে আসছে।
মন্দিরের সেবাইত রবীন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, কালীভক্ত ডাকাত সর্দার বর্গক্ষত্রিয় ছিলেন। তাই প্রতি বছর কালীপুজোর দিন বেলা বারোটার পরে বর্গক্ষত্রিয় পরিবারের পুরুষেরা গঙ্গা থেকে জল নিয়ে আসেন। দেবীঘটের জল পাল্টানো হয়। তখন মন্দিরে মহিলাদের প্রবেশ নিষিদ্ধ। এখানে দেবীর বিসর্জন হয় না। চার বছর অন্তর নবকলেবর হয়। পুজোর ন’দিন আগে থেকে শুরু হয়ে যায় চণ্ডীপাঠ। ছাগ বলি হয়।
পুজোয় প্রসাদ হিসেবে ফলমূলের সঙ্গে চাল-কড়াই ভাজা দেওয়া হয়। হয় ভোগ বিতরণ। বর্তমানে কালীপুজো উপলক্ষে তুবড়ি প্রতিযোগিতা হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy