ঢক্কানিনাদই সার!
প্রশাসনের হাজার আশ্বাস সত্ত্বেও বন্ধ হয়নি ট্রাকে ওভারলোডিং।
এই অনিয়ম বন্ধের জন্য দীর্ঘদিন ধরেই গলা ফাটাচ্ছেন এক শ্রেণির ট্রাক মালিক। বারে বারেই পুলিশ-প্রশাসনের নানা মহলে আবেদন নিবেদন করেছেন তাঁরা। কিন্তু কাজের কাজ হয়নি। শনিবার হুগলির চণ্ডীতলায় ট্রাক মালিকদের সংগঠন ‘হুগলি ইউনাইটেড ট্রাক ওনার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন’-এর পঞ্চম জেলা সম্মেলনে এই সমস্যার কথাই শোনা গেল সব থেকে বেশি।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক প্রবীর চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘খোদ মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে এখন ‘সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ’ স্লোগান নিয়ে নিরাপদে গাড়ি চালানো নিয়ে উঠেপড়ে লেগেছে প্রশাসন। অথচ ওভারলোডিং বন্ধ হচ্ছে না। এটা কী করে হয়?’’ সম্মেলনে কৃষি বিপণন মন্ত্রী তপন দাশগুপ্ত অবশ্য আশ্বাস দেন, ওভারলোডিং বন্ধ করতে প্রশাসন সচেষ্ট হবে।
চণ্ডীতলার বিদ্যাসাগর কমিউনিটি হলে ওই সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী তপনবাবু, শ্রীরামপুরের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, জেলা সভাধিপতি মেহবুব রহমান প্রমুখ। ছিলেন ফেডারেশন অব ওয়েস্ট বেঙ্গল ট্রাক অপারেটার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মহেন্দ্র সিংহ গিল, সম্পাদক সুভাষচন্দ্র বসু। এ ছাড়াও অন্যান্য জেলা থেকেও বেশ কিছু ট্রাক মালিক সম্মেলনে যোগ দেন।
ট্রাক মালিক সংগঠনের বক্তব্য, ওভারলোডিং রুখতে বছর দু’য়েক আগে নির্দেশিকা জারি করে রাজ্য সরকার। বিভিন্ন জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়, ওভারলোডিং রুখতে রাস্তায় নজরদারি চালাতে হবে। ট্রাক দাঁড় করিয়ে অতিরিক্ত মাল নামিয়ে ফেলতে হবে। জরিমানা করতে হবে। কিন্তু আদপেই তা কার্যকর হয়নি। জরিমানা করা হলেও তার সিংহভাগ সরকারি কোষাগারে পৌঁছচ্ছে না। রাজ্যে ছোট বড় মিলিয়ে প্রায় আড়াই লক্ষ ট্রাক রয়েছে। ট্রাক চালকদের বক্তব্য, ওভারলোডিং যেন নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। এতে তাঁদের কোনও ভূমিকা থাকে না। অথচ রাস্তায় পুলিশ ট্রাক আটকে তাঁদের হেনস্থা করে।
ট্রাক চালকেরা জানান, বহণ ক্ষমতার প্রায় দ্বিগুণ পণ্য ট্রাকে বোঝাই করা হয়। ফলে, সব সময় গাড়ির নিয়ন্ত্রণ রাখা সম্ভব হয় না। রাস্তার ক্ষতি হয়। বেহাল রাস্তায় ট্রাকের যন্ত্রাংশ বিকল হয়ে পড়ে। সব মিলিয়ে দুর্ঘটনার আশঙ্কা বাড়ে। কিন্তু সরকারকে কর ফাঁকি দিতে ট্রাকে অতিরিক্ত পণ্য পরিবহণ চলতেই থাকে। ট্রাক মালিকদের অভিযোগ, ‘উপরি’ আদায়ের জন্য পুলিশ-প্রশাসনের একাংশ ওভারলোডিং বন্ধে ব্যবস্থা নেয় না। ট্রাক চালকদের কাছ থেকে আদায় করা জরিমানার টাকার একটা বড় অংশ ওই সমস্ত সরকারি কর্মীর পকেটে যায়।
ওভারলোডিং রুখতে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের ওপর ওয়েব্রিজ (পণ্যবোঝাই ট্রাক ওজনের ব্যবস্থা) তৈরি করা হয়েছে। সেখানে কোনও ট্রাকে অতিরিক্ত পণ্য থাকলে মোটা টাকা জরিমানা দিতে হচ্ছে। ট্রাক মালিকদের বক্তব্য, জাতীয় সড়কটির মতোই অন্যান্য রাস্তাতেও এই ধরণের ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy