Advertisement
১০ মে ২০২৪
পকসো-মামলার শুনানিতে পাঠানো হয়নি ধৃতদের

জেল সুপারকে শোকজ, কোর্টে হাজিরার নির্দেশ

গত বছরের গোড়ায় শ্যামপুরের একটি গ্রামের এক নাবালিকার শ্লীলতাহানির মামলায় পকসো আইনে ওই আদালতে শুনানি চলছে। অভিযুক্তের সংখ্যা ৩০। সকলের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করা হয়েছে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নুরুল আবসার
উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০১৯ ০৩:৪০
Share: Save:

কয়েকদিন আগে একটি পকসো মামলার শুনানির নির্দিষ্ট সময়ে অভিযুক্তদের হাজির করানো হয়নি। এ জন্য হাওড়া জেলা সংশোধনাগারের সুপারকে শোকজ করেছেন উলুবেড়িয়া আদালতের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক (পকসো) রূপাঞ্জনা চক্রবর্তী। কারণ, অভিযুক্তদের মধ্যে ধৃত ৯ জন ওই জেলেই রয়েছে। আজ, মঙ্গলবার সুপারকে ওই আদালতে হাজির হয়ে কেন তাঁর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ দায়ের করা হবে না, তার ব্যাখ্যা দেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।

গত বছরের গোড়ায় শ্যামপুরের একটি গ্রামের এক নাবালিকার শ্লীলতাহানির মামলায় পকসো আইনে ওই আদালতে শুনানি চলছে। অভিযুক্তের সংখ্যা ৩০। সকলের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ২৯ জন পুলিশের হাতে ধরাও পড়েছে। অবশ্য এই মামলায় সকলেই জামিন পেলেও ৯ জনের বিরুদ্ধে গত বছর শ্যামপুর থানার তৎকালীন ওসি সুমন দাস এবং সাব-ইন্সপেক্টর তরুণ পুরকায়স্থকে মারধর ও খুনের চেষ্টার অভিযোগও রয়েছে। ওই ৯ জনের মধ্যে রয়েছে মুন্সি মতিয়র রহমান। জামিন না-মেলায় তাদের বর্তমান ঠাঁই হাওড়া জেল। এই ৯ জনকেই গত ৯ এপ্রিল উলুবেড়িয়া আদালতে পকসো মামলার শুনানির সময়ে পাঠানো হয়নি। ফলে, সে দিন শুনানিও স্থগিত হয়ে যায়।

কিন্তু কেন?

এ নিয়ে জেল সুপারের বক্তব্য জানা যায়নি। তবে, পুলিশ জানিয়েছে, ওসি নিগ্রহ মামলাটির শুনানি চলছে হাওড়া জেলা আদালতে। ৯ এপ্রিল সেই আদালতের শুনানিতে মুন্সি মতিয়ারদের হাজির করানো হয়েছিল। জেল সুপার উলুবেড়িয়া আদালতের বিচারককে চিঠি লিখে জানান, যেহেতু হাওড়া আদালতে একই দিনে ওসিকে মারধর ও খুনের চেষ্টার মামলার শুনানি রয়েছে, তাই মুন্সি মতিয়র-সহ বাকিদের সেখানে হাজির করাতে হবে। সেই কারণে তাঁদের উলুবেড়িয়ায় পাঠানো যাবে না।

পুলিশ জানিয়েছে, ওই চিঠি পেয়েই ক্ষুব্ধ হন উলুবেড়িয়া আদালতের বিচারক। তিনি জানান, সুপারের চিঠির বয়ান অনুযায়ী হাওড়া আদালতে ওসিকে খুনের চেষ্টার মামলার শুনানি ছিল সকাল সাড়ে ১০টায়। তা হলে সেই শুনানি হয়ে গেলে বিকেলে তাঁদের উলুবেড়িয়ায় হাজির করানো যেত। ক্ষুব্ধ বিচারক আদালতে মন্তব্য করেন ‘অভিযুক্তদের পাঠানো যাবে না’, এ কথা বলার অধিকার জেল সুপারকে কে দিয়েছে? কারণ ওই ৯ জনকে হাজির করানোর জন্য উলুবেড়িয়া আদালত থেকে জেল সুপারের কাছে প্রয়োজনীয় পরোয়ানা পাঠানো হয়েছিল। সেই পরোয়ানা অমান্য করে অভিযুক্তদের আদালতে হাজির না-করানো আদালত অবমাননার শামিল বলেও মন্তব্য করেন বিচারক।

পুলিশ জানিয়েছে, ওইদিন উলুবেড়িয়া আদালতে মামলার বাকি অভিযুক্ত এবং শ্যামপুরের ওই নাবালিকা হাজির ছিল। পকসো মামলার দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য বিচারবিভাগ যখন চেষ্টা করছে, তখন হাওড়া জেল সুপারের এই গাফিলতি বিচার প্রক্রিয়াকে লঘু করে দেখানোর চেষ্টা বলেও মনে করেন বিচারক।

এ নিয়েও জেল সুপারের বক্তব্য জানা যায়নি। জেল সূত্রের খবর, বিচারক শোকজ করায় বিকেলেই তড়িঘড়ি অভিযুক্তদের উলুবেড়িয়া আদালতে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু অন্য অভিযুক্ত এবং সাক্ষীরা চলে যাওয়ায় শুনানি আর হয়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Court Show Cause Jail Super
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE