Advertisement
১১ মে ২০২৪

রকমারি থিমে নজর টানছে রিষড়া

এক মণ্ডপ জুড়ে আলোর বিচ্ছুরণ তো আর এক মণ্ডপে বিরসা মুন্ডার সগর্ব উপস্থিতি। কোথাও বাঙালির প্রিয় দুই চরিত্র গুগা-বাবা জুটি।

ব্যাঙের ছাতা দিয়ে মণ্ডপ। —নিজস্ব চিত্র।

ব্যাঙের ছাতা দিয়ে মণ্ডপ। —নিজস্ব চিত্র।

প্রকাশ পাল
রিষড়া শেষ আপডেট: ১০ নভেম্বর ২০১৬ ০১:৩৮
Share: Save:

এক মণ্ডপ জুড়ে আলোর বিচ্ছুরণ তো আর এক মণ্ডপে বিরসা মুন্ডার সগর্ব উপস্থিতি। কোথাও বাঙালির প্রিয় দুই চরিত্র গুগা-বাবা জুটি। কোথাও আবার সাহিত্যিকের বিখ্যাত উপন্যাসের খণ্ডচিত্র। কোথাও শুধুই কবিতা। থিমের ভাবনায় অনেক জায়গাতেই ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে সামাজিক মূল্যবোধ বা সচেতনতার বার্তা।

ডেঙ্গি এ বার রিষড়া শহরকে ভালই বেগ দিয়েছে। শহরের অনেক মানুষ এখনও জ্বরে আক্রান্ত। ডেঙ্গি প্রতিরোধে কী করা উচিত তা নিয়ে সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে ‘জাগৃতি’ হাতিয়ার করেছে তাদের মণ্ডপকেই। নিউ বর্ণালি চক্রের মণ্ডপে পরিবেশ বাঁচানোর আর্তি। গাছের সবুজ পাতায় মোড়া সুদৃশ্য মণ্ডপ।কানে আসবে তাদের পাখিদের কুজন। সবই কৃত্রিম। তবে, বিষয়টিকে প্রাণবন্ত করতে অরণ্যের অধিকারের বার্তা নিয়ে হাজির থাকছেন ‘বিরসা মুণ্ডা স্বয়ং’। থাকছে ধামসা-মাদল নিয়ে আদিবাসী নাচ। শহুরে মানুষের কাছে ব্যাঙের ছাতা এখন প্রায় অবলুপ্ত। জাগরণের মণ্ডপে গেলে আক্রান্ত হতে পারেন ছেলেবেলার নস্টালজিয়ায়। পুজো উদ্যোক্তাদের বক্তব্য, হারিয়ে যেতে বসা এমন প্রাকৃতিক দৃশ্যাবলী তুলে আনার পাশাপাশি পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষারও বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন তাঁরা। বাঁশতলা যুবগোষ্ঠী খেটেখাওয়া মানুষকে সম্মান জান‌ানোর চেষ্টা করেছে‌ন তাঁদের পুজো ভাবনায়। মণ্ডপসজ্জার উপকরণ হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে রাজমিস্ত্রীদের নানা যন্ত্রপাতি। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘ওরা কাজ করে’ কবিতাকে তুলে এনেই এই ভাবনা, জানালেন পুজোর কর্মকর্তারা। সমাজের বাধা অতিক্রম করে কী ভাবে একটি সম্পর্ক টিকে থাকে, সেই ভাবনাই স্পষ্ট করতে চেয়েছে নবারুণ সঙ্ঘ। থিমপুজোয় রবীন্দ্র সঙ্ঘের চমক দেড় হাজার হাতের জগদ্ধাত্রী।

লেনিন মাঠ যুবগোষ্ঠী, পার্ক তরুণ দল, চারবাতি ইয়ং স্টার, বন্ধুগোষ্ঠীর মতো পুরনো পুজোগুলিতেও জাঁকজমকের অভাব নেই। পার্ক তরুণ দল, বন্ধুগোষ্ঠী বা যুবগোষ্ঠীর পুজোকে কেন্দ্র করে রীতিমতো মেলা বসেছে এ বারেও। ঠাকুর দেখার ফাঁকে মেলার স্টল থেকে ঝালমুড়ি-ভেলপুরি থেকে এগরোল, চাউমিন, মোগলাইয়ে রসনা তৃপ্তি থেকে পিছিয়ে নেই কিশোরী থেকে প্রৌঢ়া।

হরিসভা যুবগোষ্ঠী বা সাধনকানন অঙ্কুরের মণ্ডপ যে‌ন শুধুই আলোর ঠিকানা! ইউথ অ্যাসোসিয়েশন বা কোরাস ক্লাবের ভাবনায় আবার স্বপ্নালু পরিবেশ। ইউথ অ্যাসোসিয়েশনের মণ্ডপে দেবী রয়েছেন নৌকায়। আলোর কারিকুরিতে দেখা যাবে সমুদ্র। কোরাসের মণ্ডপে হাঁসেদের অবাধে ওড়ার ছাড়পত্র। নিউ তরুণ দলের পুজোমণ্ডপ যেন আস্ত একটা মৌমাছি। সুভাষনগর উত্তরপল্লির পুজোয় উপস্থিত ‘গুপি গাইন, বাঘা বাইন’। যুগের সঙ্গে তাল রেখে সারদামাতা ফরওয়ার্ড ক্লাবের মণ্ডপে রয়েছে থ্রি-ডি এফেক্ট। পুজোর কর্তাদের দাবি, নির্দিষ্ট জায়গা থেকে দেখার প্রয়োজন নেই। যে কোনও প্রান্ত থেকেই দর্শকের চোখে ‘হিট’ তাঁদের মণ্ডপ। মণ্ডপটি তৈরি করা হয়েছে বোতাম দিয়ে।

হুগলির গঙ্গাপাড়ের শহর রিষড়া এখন থিমের জোয়ারে ভাসছে! সৌজন্যে জগদ্ধাত্রী।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Rishra Jagatdhatri Puja Theme
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE