Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
বোর্ড গঠন ঘিরে উলুেবড়িয়ায় বন্ধ রইল স্কুল, অবরোধ চলল আন্দুল রোডেও

দেদার পড়ল ইট-বোমা, পুড়ল বাইক

সারাদিন চলল বোমাবাজি, ইট বৃষ্টি। চলল অভিযোগের চাপান-উতোরও। দিনের শেষে বোর্ড দখল করল বিজেপি। উলুবেড়িয়া ২ ব্লকের তুলসিবে়ড়িয়া পঞ্চায়েতের ঘটনা। 

নজির: তুলসিবেড়িয়ায় তৃণমূল ও বিজেপি কর্মীদের হাতাহাতি নিজস্ব চিত্র

নজির: তুলসিবেড়িয়ায় তৃণমূল ও বিজেপি কর্মীদের হাতাহাতি নিজস্ব চিত্র

নুরুল আবসার
উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ২৯ অগস্ট ২০১৮ ০১:৫১
Share: Save:

সারাদিন চলল বোমাবাজি, ইট বৃষ্টি। চলল অভিযোগের চাপান-উতোরও। দিনের শেষে বোর্ড দখল করল বিজেপি। উলুবেড়িয়া ২ ব্লকের তুলসিবে়ড়িয়া পঞ্চায়েতের ঘটনা।

অভিযোগ, এ দিন সকাল থেকেই পঞ্চায়েত কার্যালয়ের ১০০ মিটারের মধ্যে শিবির করে বসেছিলেন তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা। বিজেপির দাবি, তাঁরা আসলে বিজেপি কর্মীদের আটকানোর চেষ্টাই করছিলেন। যদিও অশান্তির আশঙ্কায় কড়া পুলিশি প্রহরার ব্যবস্থাও করা হয়েছিল।

এই পঞ্চায়েতে ১০টি আসন পেয়েছে বিজেপি, তৃণমূল ৭টি। বেলা ১১টা নাগাদ বিজেপি সদস্যরা মিছিল করে পঞ্চায়েত কার্যালয়ের দিকে আসতে শুরু করেন। তখনই অশান্তি শুরু হয়। অভিযোগ, দু’পক্ষকের বিবাদ থেকে শুরু হয় মারামারি। পরস্পরের দিকে ইট ছুড়ে মারতে থাকেন দু’দলের কর্মীরাই। বেশ কয়েকটি মোটরবাইকে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। তারপর শুরু হয় বোমাবাজি।

তৃণমূলের স্থানীয় নেতা ও তুলসিবেড়িয়ার প্রাক্তন প্রধান হাসিবুল রহমান বলেন, ‘‘এই পঞ্চায়েতে বিজেপির সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকলেও পঞ্চায়েত সমিতির চারটি আসনেই আমরা জিতেছি। সেই হিসাবে বোর্ড গঠনের দাবিদার ছিলাম আমরাও। শান্তিপূর্ণ ভাবেই শিবির করে বসেছিলাম।’’ বিজেপির গ্রামীণ জেলা সভাপতি অনুপম মল্লিক বলেন, ‘‘এই ভাবে বোর্ড গঠন করা যায় নাকি? আসলে জোর করে আমাদের আটকানোর জন্যই তৃণমূল এইসব করেছে।’’

ব্লক প্রশাসনের কর্তারাও জানান, গ্রাম পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠন করার অধিকার আছে শুধুমাত্র পঞ্চায়েত সদস্যদের। তৃণমূলের অভিযোগ, বিজেপির কর্মী সমর্থকেরা তাঁদের উপরে চড়াও হয়ে মারধর করে। বিজেপির পাল্টা অভিযোগ, তৃণমূলের শিবির থেকেই তাদের উদ্দেশে বোমা ছোড়া হয়। বিজেপির গ্রামীণ জেলা সভাপতির গাড়ি ভাঙচুর করে তাঁকে মারধর করারও অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। দু’জন কর্মী আহত হয়েছেন বলে দলীয় নেতাদের অভিযোগ। এই ঘটনায় অবশ্য কেউ গ্রেফতার হয়নি বলে পুলিশ জানিয়েছে। দিনের শেষে অবশ্য পঞ্চায়েত প্রধান হয়েছেন বিজেপির অশ্বিনী মালিক।

সাঁকরাইলের ঝোড়হাট পঞ্চায়েতে আবার তৃণমূলের কোন্দলই উঠে এল প্রকাশ্যে। প্রধান নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে জিতলেন নির্দল প্রার্থী। এই পঞ্চায়েতের মোট আসন সংখ্যা ১৫। তৃণমূল ৯, নির্দল সদস্য ৪ এবং সিপিএমের সদস্য ২ জন। চার নির্দল সদস্য আসলে বিক্ষুব্ধ তৃণমূল। এ বার ভোটে দলীয় টিকিট না পেয়ে নির্দল হিসাবে ল়ড়ে জিতেছেন।

এ দিন তৃণমূল প্রধান হিসাবে সুনীতা ভট্টাচার্যের নাম প্রস্তাব করে। বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠী মিনতি সেনাপতি নামে এক নির্দল প্রার্থীকে প্রধানের পদে দাঁড় করিয়ে দেয়। ভোটাভুটিতে মিনতীদেবী ৮-৬ জিতে যান।

উপপ্রধান পদেও জয়ী হন নির্দল রূপম সাধুখাঁ। তিনি গত বার তৃণমূলের টিকিটে জিতে প্রধান হয়েছিলেন। কিন্তু এ বার দল তাঁকে প্রার্থী করেনি। উপপ্রধান পদে সঞ্জয় অধিকারীর নাম প্রস্তাব করে তৃণমূল। তিনি রপমবাবুর কাছে ৮-৫ ভোটে হেরে যান।

এ দিন রূপমবাবু বলেন, ‘‘আমরা সকলে তৃণমূল কর্মী। এই জয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে উৎসর্গ করলাম।’’

সদর জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা সমবায়মন্ত্রী অরূপ রায় বলেন, ‘‘বেশিরভাগ পঞ্চায়েত সদস্য যাঁকে চাইবেন তিনিই প্রধান হবেন। পঞ্চায়েতে এটাই নিয়ম।’’

দুইল্যা পঞ্চায়েতে এ দিন প্রধান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন দলের প্রার্থী শুক্লা দাস। কিন্তু তাঁর বিরোধিতা করেন তৃণমূলেরই পঞ্চায়েত সদস্য বাপ্পা দাস। বাপ্পা অবশ্য ভোটাভুটিতে হেরে গিয়েছেন। আর তার পরেই তাঁর অনুগামীরা পাকুড়িয়াতে আন্দুল রোড প্রায় এক ঘণ্টা অবরোধ করেন। পুলিশ এসে অবরোধ তুলে দেয়।

থানামাকুয়া, রঘুদেববাটি, নলপুর এবং দক্ষিণ সাঁকরাইলে আবার প্রধান পদে দলীয় প্রার্থীদের পরাজিত করে সদস্যদের গরিষ্ঠ অংশ নিজেরাই সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রধান নির্বাচন করেছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Political Violence Panchayat TMC BJP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE