Advertisement
১৭ মে ২০২৪

বহুমুখী হিমঘরে তালা, বঞ্চিত চাষিরা

নানা রকম সব্জি, ফল সংরক্ষণের লক্ষ্যে ২০১১ সালের নভেম্বর মাসে সাড়ম্বরে উদ্বোধন হয়েছিল বহুমুখী হিমঘরের। মাঝে কেটে গিয়েছে চার চারটে বছর। কিন্তু তারকেশ্বরের চাঁপাডাঙায় সরকারি অর্থানুকূল্যে তৈরি বহুমুখী হিমঘরটি এখনও তালাবন্ধই পড়ে রয়েছে।

আসছে ঈদ। চলছে কেনাকাটা। উলুবেড়িয়ায় সুব্রত জানার তোলা ছবি।

আসছে ঈদ। চলছে কেনাকাটা। উলুবেড়িয়ায় সুব্রত জানার তোলা ছবি।

পীযূষ নন্দী
শেষ আপডেট: ২৫ জুন ২০১৬ ০৭:০৯
Share: Save:

নানা রকম সব্জি, ফল সংরক্ষণের লক্ষ্যে ২০১১ সালের নভেম্বর মাসে সাড়ম্বরে উদ্বোধন হয়েছিল বহুমুখী হিমঘরের। মাঝে কেটে গিয়েছে চার চারটে বছর। কিন্তু তারকেশ্বরের চাঁপাডাঙায় সরকারি অর্থানুকূল্যে তৈরি বহুমুখী হিমঘরটি এখনও তালাবন্ধই পড়ে রয়েছে।

যাবতীয় পরিকাঠামো থাকা সত্ত্বেও বহুমুখী হিমঘরটি থেকে কোনও পরিষেবা না পেয়ে স্থানীয় চাষিরা বিভিন্ন সময়ে ক্ষোভ-বিক্ষোভেও সামিল হয়েছেন। সরকারি উদাসীনতার অভিযোগ তুলে তারকেশ্বর এবং পুরশুড়া ব্লকের চাষিদের ক্ষোভ, হিমঘরটির উদ্বোধনের সময় রাজ্যের কৃষি বিপণন মন্ত্রী অরূপ রায় জানিয়েছিলেন, ৬ মাসের মধ্যেই চাষিদের ফসলের ন্যায্য দাম পাওয়ার ব্যবস্থা করে দেবেন তাঁরা। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে কিছু হয়নি। স্বার্থরক্ষার নামে তাঁদের ভাঁওতা দেওয়া হয়েছে। অধিক ফলন হলে বা অবিক্রিত সব্জি সংরক্ষণের কোনই উপায় নেই। ফলে তাঁদের অবস্থারও কোনও পরিবর্তন হয়নি।

প্রশাসন সূত্রে খবর, রাজ্য কৃষি বিপণন পর্ষদ ও চাঁপাডাঙা নিয়ন্ত্রিত বাজার সমিতির যৌথ উদ্যোগে বহুমুখী হিমঘরটি তৈরি হয়। খরচ হয়েছিল ১ কোটি ৬০ লক্ষ টাকা। হিমঘরের ধারণ ক্ষমতা ৮৭ মেট্রিক টন। জেলা কৃষি বিপণন দফতরের হিসাবে হুগলিতে প্রায় ৬ লক্ষ মেট্রিক টন শাকসব্জি উৎপাদিত হয়। উৎপাদন থেকে উপভোক্তাদের কাছে পৌঁছনোর প্রক্রিয়ায় ৩০ শতাংশর মতো সব্জি নষ্ট হয়। হিমঘর চালু করা গেলে এই অপচয় বন্ধ হবে।

কিন্তু যাবতীয় পরিকাঠামো মজুত থাকা সত্ত্বেও বহুমুখী হিমঘরটি চার বছরেও কেন চালু করা গেল না?

জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, বহুমুখী হিমঘরটি উদ্বোধনের আগেই সেটি পরিচালনার জন্য একটি খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ সংস্থাকে লিজ দেওয়া হয়েছিল। লিজ নেওয়া সত্ত্বেও কেন তারা হিমঘরটি চালায়নি তা জানা যায়নি। পাশাপাশি বেসরকারি কোনও সংস্থাকে বহুমুখী হিমঘর লিজ দেওয়া নিয়ে স্থানীয় চাষিদেরও আপত্তি রয়েছে। তাঁদের বক্তব্য, “বেসরকারি সংস্থা সরাসরি চাষিদের মাল রাখবেন কি না তার নিশ্চয়তা নেই। বাজারে কম দাম থাকার সময় সংস্থাটি নিজেরাই বাজার থেকে ফসল কিনে হিমঘর ভর্তি করে রাখলে চাষিরা বঞ্চিতই থেকে যাবে।”

হুগলি জেলা কৃষি বিপণন দফতরের আধিকারিক তথা হুগলি জেলা নিয়ন্ত্রিত বাজার সমিতির সম্পাদক প্রবীরকুমার বিশ্বাস বলেন, “বহুমুখী হিমঘরটি যাতে চালু করা যায় তার চেষ্টা হচ্ছে।’’ কৃষি ও বিপণন দফতরের মন্ত্রী তপন দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘বর্তমানে হিমঘরটি কী অবস্থায় আছে তা বিস্তারিত জেনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Warehouse Farmers
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE