চুঁচুড়ায় হুগলি স্টেশনে রোড অবরোধ করেছেন বাসিন্দারা। বৃহস্পতিবার তাপস ঘোষের তোলা ছবি।
পাণ্ডুয়া, ভদ্রেশ্বরের পর এবার চুঁচুড়া—গরম পড়তে না পড়তেই জলের দাবিতে বিক্ষোভ ক্রমশ বাড়ছে হুগলিতে। সমস্যা সমাধানে পুরসভা প্রতিশ্রুতি পালন না করায় জলের দাবিতে বৃহস্পতিবার সকালে তিন ঘণ্টা রাস্তা অবরোধ করলেন হুগলি-চুঁচুড়া পুরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দারা। এ দিন সকাল ৯টা থেকে ১২টা পর্যন্ত কয়েকশো বাসিন্দা হুগলি স্টেশন রোড অবরোধ করেন। অফিস টাইমে ব্যস্ত সময়ে আচমকা অবরোধে সমস্যায় পড়ে যান সাধারণ মানুষ।
পুরপ্রধান গৌরীকান্ত মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ওই এলাকার ভৌগোলিক অবস্থা এমনই যে কিছুটা এলাকা পঞ্চায়েতের আর কিছুটা এলাকা পুরসভার অর্ন্তগত। তা ছাড়া ওই এলাকার জল সরবরাহের জন্য যে পাইপ লাইন রয়েছে তা দীর্ঘদিনের পুরনো হওয়ায় ময়লা জমে সরবরাহে বাধা সৃষ্টি করছে।” তিনি আরও জানান, বাঁশবেড়িয়া জলপ্রকল্পের জল সরবরাহ শুরু হয়ে গেলে চেষ্টা করা হবে পুরনো পাইপ লাইন বদলে নতুন পাইপ বসানোর।”
গরম এখনও সে ভাবে না পড়লেও জেলার বিভিন্ন এলাকায় ইতিমধ্যেই জল নিয়ে হাহকার শুরু হয়ে গিয়েছে। গত ১৬ মার্চ ভদ্রেশ্বর পুরসভার ২১ নম্বর ওয়ার্ডে একই দাবিতে দীর্ঘক্ষণ রাস্তা অবরোধ করেছিলেন বাসিন্দারা। তার আগে ১১ মার্চ পাণ্ডুয়ার বেনেপাড়া গ্রামেও জলের দাবিতে বিক্ষোভ হয়।
হুগলি-চুঁচুড়া পুরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের অর্ন্তগত কৃষ্ণপুর, লোহাড়পাড়া, শান্তিপল্লি, নন্দনকানন এবং তিনপল্লিতে প্রায় কয়েক হাজার মানুষের বাস। গত দু’বছর ধরে এই সব অঞ্চলের মানুষ জলকষ্টে ভুগছেন। পুরসভার ট্যাপকল থাকলেও তা থেকে জল প্রায় মেলে না বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের। তাঁরা জানান, যে ক’টি নলকূপ রয়েছে তার অধিকাংশই ভাঙা। স্নান করার জল যেমন পাচ্ছেন না তেমনই পানীয় জলের সঙ্কট দেখা দিয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা নীলম সিংহ বলেন, ‘‘ হুগলির মোড় থেকে হুগলি স্টেশন পর্যন্ত কত মানুষের বাস। গত কয়েক বছর ধরে এখানে জলের সমস্যা বাড়তে বাড়তে এখন চরমে পৌঁছেছে। আগেও একবার আন্দোলন হয়। তখন পুরসভা আশ্বাস দিয়েছিল যে খুব শীঘ্রই সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে। কিন্তু দু’বছর কেটে গেলেও তা হয়নি। উল্টে জলসঙ্কট আরও তীব্র হয়েছে।’’
একই কথা শোনা গিয়েছে সীতা পাসোয়ান, সুরেশ পাসোয়ানের গলাতেও। তাঁদের অভিযোগ, আগে পুরসভার পক্ষ থেকে পানীয় জলের গাড়ি পাঠানো হত। পরে তাও বন্ধ হয়ে যায়। তাঁদের হুমকি, অবিলম্বে জলের ব্যবস্থা না হলে তাঁরা ভোটেও অংশ নেবেন না। বেলা ১২টা নাগাদ স্থানীয় কাউন্সিলার ঘটনাস্থলে গিয়ে জল সমস্যা সমাধানের প্রতিশ্রুতি দিলে অবরোধ উঠে যায়। তবে ব্যস্ত সময়ে রাস্তা অবরোধের ফলে অফিস যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy