Advertisement
E-Paper

বাজি দূষণেই স্বাগত নতুন

সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছিল, বর্ষবরণে রাত ১২টা থেকে ১৫ মিনিট শুধুমাত্র আলোর বাজি পোড়ানো যাবে। শব্দবাজি পুরোপুরি নিষিদ্ধ। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেল উল্টো ছবি।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০২ জানুয়ারি ২০১৯ ০২:৩৫

নতুন বছরকে স্বাগত জানাল শব্দবাজির তাণ্ডব! বর্ষবরণের আনন্দের নামে মাঝরাত পর্যন্ত হুগলি জেলা জু়ড়ে চলল নিয়ম ভাঙার খেলা— সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশকে বুড়ো আঙুল দেখিয়েই। বাসিন্দাদের অভিযোগ, পুলিশ বা দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ ঠুঁটো জগন্নাথ হয়েই রইল।

সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছিল, বর্ষবরণে রাত ১২টা থেকে ১৫ মিনিট শুধুমাত্র আলোর বাজি পোড়ানো যাবে। শব্দবাজি পুরোপুরি নিষিদ্ধ। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেল উল্টো ছবি। সোমবার রাত ১২টার আগে থেকেই হুগলির চারটি মহকুমার বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে শব্দবাজি ফাটল নিয়ন্ত্রণহীন ভাবে। গঙ্গাপাড়ের উত্তরপাড়া থেকে শ্রীরামপুর, চন্দননগর, চুঁচুড়া হয়ে বাঁশবেড়িয়া পর্যন্ত ১০টি পুরসভায় শব্দবাজির দাপটে নাজেহাল বাসিন্দারা। দেদার শব্দবাজি ফেটেছে আরামবাগ শহরেও। শব্দবাজির সঙ্গে ‘যোগ্য’ সঙ্গত করেছে পাড়ায় পাড়ায় ডিজে বাজিয়ে পিকনিকের আয়োজন।

শব্দের এই জোড়া ‘আক্রমণে’ সাধারণ মানুষ, বিশেষত বয়স্কদের যথেষ্ট অসুবিধা হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উত্তরপাড়ার এক প্রবীণ শিক্ষক বলেন, ‘‘নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে নানা আয়োজন হতেই পারে। কিন্তু শব্দবাজি এবং আলোর বাজির ধোঁয়া বাতাসের পক্ষে মারাত্মক। দিল্লির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এই রাজ্যে বায়ুদূষণ ভয়াবহ চেহারা নিচ্ছে। মানুষ আর কবে বুঝবেন!’’ কোথাও কোথাও রাত ১টা-দেড়টা পর্যন্ত শব্দবাজি ফেটেছে বলে অভিযোগ। আরামবাগের বাসিন্দা চিন্ময় ঘোষ, বাসন্তী পাঁজাদের অভিযোগ, ‘‘রাত পর্যন্ত শব্দবাজি ফেটেছে।’’

চন্দননগরের পুলিশ কমিশনার অজয় কুমার বলেন, ‘‘শব্দবাজি নিয়ে কমিশনারেট এলাকার কোনও থানায় কেউ অভিযোগ জানাননি।’’ একই বক্তব্য জেলা (গ্রামীণ) পুলিশ সুপার সুকেশ জৈনেরও।

পরিবেশবিদ বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায় অবশ্য বলেন, ‘‘আশ্চর্য হয়ে দেখলাম, নতুন বছরকে স্বাগত জানানো হল সুপ্রিম কোর্টের বিধি পুরোপুরি লঙ্ঘন করে। নতুন বছর শুরুই হল নিয়ম ভাঙা দিয়ে।’’ তাঁর অভিযোগ, যথেচ্ছ শব্দবাজি ফাটার খবর পাওয়া গিয়েছে হুগলি-সহ সারা রাজ্যেই। পুলিশ, দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ দর্শক হয়েই ছিল। বিশ্বজিৎবাবুর সংযোজন, ‘‘ডিজি, স্বরাষ্ট্র সচিব-সহ সংশিষ্ট সব আধিকারিককে লিখিতভাবে বিষয়টি জানাব।’’

রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের চেয়ারম্যান কল্যাণ রুদ্র বলেন, ‘‘আমাদের লোকবল কম। তাই রাজ্য জুড়ে নববর্ষের রাতে নজরদারি রাখা সব ক্ষেত্রে সম্ভব হয়নি।’’

শ্রীরামপুরের শব্দদূষণ বিরোধী নাগরিক উদ্যোগের সদস্য গৌতম সরকার বলেন, ‘‘আমরা জেলার নানা পুরসভায় চিঠি দিয়েছি। পুলিশকেও অনুরোধ করেছি। কিন্তু নববর্ষের রাতে এ ভাবে বাজি ফাটবে, তা রণা করতে পারিনি। ডিজের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। বিষয়টি নিয়ে পুস্তিকা তৈরি করে বিলি করার কথা ভাবছি।’’

Cracker Pollution Sound Pollution New Years Celebration
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy