Advertisement
E-Paper

গা-ছাড়া মনোভাবই দায়ী, দাবি দমকলের

 দমকল বারবার সতর্ক করছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের উদ্বেগ বাড়ছে। কিন্তু অগ্নি-সুরক্ষায় ডানকুনি শিল্পতালুকের কারখানা-মালিকেরা ব্যবস্থা নিচ্ছেন কই?

প্রকাশ পাল ও দীপঙ্কর দে

শেষ আপডেট: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৪:৩৪

দমকল বারবার সতর্ক করছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের উদ্বেগ বাড়ছে। কিন্তু অগ্নি-সুরক্ষায় ডানকুনি শিল্পতালুকের কারখানা-মালিকেরা ব্যবস্থা নিচ্ছেন কই?

অধিকাংশ কারখানাতেই অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা নেই। যেখানে আছে, সেখানেও ঠিকমতো ব্যবহার হয় না। পরিকাঠামোর গলদই শুধু নয়, অভাব রয়েছে আগুন মোকাবিলার প্রশিক্ষণেও। রবিবার দুপুরে শিল্পতালুকের একটি সোফার গুদামে এবং তা থেকে ভোজ্য তেলের কারখানায় আগুন লাগার পরে এমনটাই মনে করছে দমকল। একই দাবি স্থানীয় লোকজনেরও। ওই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে দমকলের রাত হয়ে যায়। কেউ হতাহত না-হলেও প্রচুর ক্ষতি হয়।

তবে, এত বড় অগ্নিকাণ্ড এই প্রথম নয়। মাসখানেক আগে বন্দের বিলে একটি ছাতা কারখানায় আগুন লাগে। তাতে এক মহিলা শ্রমিক শ্বাসকষ্টে মারা যান। সম্প্রতি প্রসাধনী সামগ্রী তৈরির একটি কারখানায় আগুন লাগে। বছর পাঁচেক আগে একটি প্লাস্টিক কারখানায় টানা তিন দিন আগুন‌ নেভেনি।

ডানকুনিতে দিল্লি রোড এবং দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের দু’ধারে ছোটবড় সাড়ে তিনশোরও বেশি কারখানা আছে। আগুন লাগলে দ্রুত পরিস্থতি সামাল দেওয়ার জন্য বছর দুয়েক আগে এখানে দমকল কেন্দ্র চালু হয়। কিন্তু তাতেও পরিস্থিতির বিশেষ হেরফের হয়নি। ওই কেন্দ্রের আধিকারিকদের অভিযোগ, অনেক ক্ষেত্রে কারখানাগুলি দমকল থেকে ‘কাঁচা’ ছাড়পত্র নিয়েই দায় সারে। সেই সময় দমকলের তরফে জলাধার তৈরি-সহ যে সব ব্যবস্থা নিতে বলা হয়, তা করে না। চূড়ান্ত শংসাপত্রও নেয় না। আবার কোথাও অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা থাকলেও ঠিকমতো রক্ষণাবেক্ষণ হয় না। আগুন নেভানো বা উদ্ধারকাজ চালানোর ‘নকল পরীক্ষা’ও (মক ড্রিল) করা হয় না। সব মিলিয়ে গা-ছাড়া মনোভাবেই বিপদ বেড়ে চলেছে।

কিছু কারখানার মালিকের বক্তব্যেও গা-ছাড়া মনোভাব স্পষ্ট। রবিবার যে সোফার গুদামে আগুন লেগেছিল, তার মালিক জানান, গুদামে আগুন নেভানোর ব্যবস্থার প্রয়োজন নেই বলে তাঁর ধারণা ছিল। ভোজ্য তেলের কারখানাটি অগ্নি নির্বাপণ যন্ত্র কাজেই আসেনি বলে দাবি দমকলে। ছাতা কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের সময়েও সে‌খানকার ওই যন্ত্র কাজে আসেনি বলে দমকল জানিয়েছিল। চাকুন্দির এক পাইপ-গুদামের ম্যানেজার বলেন, ‘‘সম্প্রতি আমরা এখানে এসেছি। অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা এখনও করে উঠতে পারিনি। তবে শীঘ্রই করে নেব।’’

দমকল আধিকারিকদের বক্তব্য, বারবারেই কারখানাগুলিকে সতর্ক করা হয়। কিন্তু মালিকেরা কর্ণপাত করেন না। ফলে, কারখানায় জলের ব্যবস্থাই থাকে না। আগুন লাগলে গাড়ির জল ফুরোলে অন্য উৎস খুঁজতে হয় দমকলকর্মীদের। ফলে, সময় নষ্ট হয়। দমকলের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘হুগলি শিল্পাঞ্চলে চটকলগুলিতে আগুন নেভানোর নিজস্ব ব্যবস্থা আছে। সেখানে জলের সমস্যা হয় না। কিন্তু শিল্পতালুকের বহু কারখানাই জলের ব্যবস্থা করে না।’’

স্থানীয় বাসিন্দা এবং ব্যবসায়ীদের একাংশ অবশ্য এর সঙ্গে দমকলের পরিকাঠামোগত অভাবের কথাও তুলেছেন। কর্মীর সংখ্যা কম থাকায় নিয়মিত নজরদারিতে যে কিছুটা ঘাটতে থেকে যায় তা দমকলও মানছে।

Fire Dankuni Fire Brigade Industrial Area
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy