আর্থিক ভাবে স্বনির্ভর হওয়ার পথে আরও এক ধাপ এগিয়ে গেলেন ভোলানাথ স্বয়ম্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা। একশো দিনের প্রকল্পে তাঁদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে একটি জৈব সার তৈরির ট্যাঙ্ক। তাঁদের তৈরি জৈব সার কিনে নিচ্ছে কৃষি দফতর। তারাই ওই সার চাষিদের মধ্যে বিলি করছে। কৃষি দফতর সূত্রের খবর, বাগনান ২ ব্লকের মুগবেনাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে ওই প্রকল্পে চাষিদের মধ্যে জৈব সার ইতিমধ্যেই বেশ জনপ্রিয় হয়েছে।
একশো দিনের প্রকল্পে বিভিন্ন দফতরের সঙ্গে সমন্বয় করে স্থায়ী সম্পদ বৃদ্ধি করার কথা বার বার বলছে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার। সেই নীতি মেনেই প্রকল্পটি তৈরি করতে এগিয়ে আসে মুগবেনাপুর গ্রাম পঞ্চায়েত। তারাই ১০০ দিনের কাজের সঙ্গে যুক্ত করে স্বয়ম্ভর গোষ্ঠী উন্নয়ন বিভাগ এবং কৃষি দফতরকে।
পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, মুগকল্যাণ গ্রামে একটি ১২ ফুট লম্বা, ৩ ফুট চওড়া এবং ৩ ফুট উঁচু ট্যাঙ্ক তৈরি করে দেওয়া হয়। মাথায় দেওয়া হয় টিনের ছাউনি। এর খরচ করা হয় ১০০ দিনের প্রকল্প থেকে। তারপরে ট্যাঙ্কটি তুলে দেওয়া হয় ভোলানাথ স্বয়ম্ভর গোষ্ঠীর হাতে। গোষ্ঠীর মহিলারা ট্যাঙ্কে জৈব সার তৈরি করতে শুরু করেন। কৃষি দফতরের সঙ্গে বাগনান ২ পঞ্চায়েত সমিতি একটি চুক্তি করে। তাতে বলা হয়, স্বয়ম্ভর গোষ্ঠীর কাছ থেকে ওই সার কিনে নেবে কৃষি দফতর। পরে তারা সরাসরি বিক্রি করবে চাষিদের কাছে।
শুধু ভোলানাথ স্বয়ম্ভর গোষ্ঠী নয়, বাগনান ২ ব্লকের বিভিন্ন গ্রাম পঞ্চায়েতের একাধিক স্বয়ম্ভর গোষ্ঠীকে একই ভাবে জৈব সার তৈরিতে উৎসাহিত করেছে ব্লক প্রশাসন। মোট আটটি প্রকল্প তৈরি হয়েছে। বাণিজ্যিকভাবে যাতে এই জৈব সার মহিলারা বিক্রি করতে পারেন তার জন্য সারের বিশেষ ব্র্যান্ড বানানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাগনান ২-এর বিডিও প্রণবকুমার মণ্ডল। তিনি বলেন, ‘‘এই ব্র্যান্ডটির জন্য আমরা প্রয়োজনীয় অনুমোদন নিয়েছি সংশ্লিষ্ট দফতর থেকে। বিভিন্ন গোষ্ঠী এই সার তৈরি করলেও, তা বিক্রি হবে এই বিশেষ ব্র্যান্ডের নমেই।’’ বাগনান ২ ব্লকে মোট ৭৫টি জৈব সার তৈরির প্রকল্প বানানো হবে বলে ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে।
ভোলানাথ স্বয়ম্ভর গোষ্ঠী সূত্রে জানানো হয়েছে, ইতিমধ্যে প্রথম পর্যায়ে ২৫০ কিলোগ্রাম জৈব সার তৈরি করে ফেলেছেন তাঁরা। পুরোটাই কৃষি দফতর কিনে নিয়েছে। গোষ্ঠীর সদস্য মহুয়া গিরি, সুপর্ণা ঘোষ বলেন, ‘‘আমাদের গোষ্ঠীর জমানো টাকা দিয়ে কেঁচো কিনতে হচ্ছে। এই সার তৈরির অন্যা উপাদান যেমন তরকারির খোসা, কলাগাছের কাণ্ড, কচুরিপানা আমরা নিজেরাই সংগ্রহ করে আনি। তারপর বিশেষ পদ্ধতিতে সে সব পচিয়ে তৈরি করা হয় জৈব সার।’’ গোষ্ঠী সূত্রে জানানো হয়েছে, শুধু কৃষি দফতর নয়, চাষিরাও সরাসরি তাঁদের কাছে আসছেন সার কিনতে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy