Advertisement
২০ মে ২০২৪

অনলাইন সংস্থার জিনিস লুঠ, ধৃত ৩

একটিই মোবাইল। বিভিন্ন সময়ে তাতে ব্যবহার করা হয়েছে আটটি সিম কার্ড। আর আটটি নম্বরের কল ডিটেলস-এ একটিই ‘কমন’ নম্বর! একটি লুঠের ঘটনার তদন্তে নেমে এই বিষয়টিই নজর কাড়ে তদন্তকারীদের। ওই ‘কমন’ নম্বরের গ্রাহকের পিছনে ধাওয়া করেই কিনারা হল একটি অনলাইন বিপণন সংস্থার বাহককে মারধর করে কয়েক লক্ষ টাকার মালপত্র লুঠের ঘটনার।

শান্তনু ঘোষ
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ নভেম্বর ২০১৪ ০১:০৫
Share: Save:

একটিই মোবাইল। বিভিন্ন সময়ে তাতে ব্যবহার করা হয়েছে আটটি সিম কার্ড। আর আটটি নম্বরের কল ডিটেলস-এ একটিই ‘কমন’ নম্বর!

একটি লুঠের ঘটনার তদন্তে নেমে এই বিষয়টিই নজর কাড়ে তদন্তকারীদের। ওই ‘কমন’ নম্বরের গ্রাহকের পিছনে ধাওয়া করেই কিনারা হল একটি অনলাইন বিপণন সংস্থার বাহককে মারধর করে কয়েক লক্ষ টাকার মালপত্র লুঠের ঘটনার। ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে লিলুয়া থানার পুলিশ তিন যুবককে গ্রেফতার করেছে। এদেরই এক জন ওই ‘কমন’ নম্বরের গ্রাহক।

পুলিশ জানায়, ১৩ সেপ্টেম্বর অনলাইন বিপণন সংস্থার কর্মী সুদীপ ঘোষ একটি দামী মোবাইল ডেলিভারি করতে যান লিলুয়ার ভট্টনগরে। সেখানে তাঁকে মারধর করে প্রায় ৪৭ হাজার টাকা দামের মোবাইলটি ও আরও মূল্যবান জিনিস কেড়ে নেয় চকপাড়ার বাসিন্দা প্রিন্স সিংহ, অঙ্কিত সিংহ ও সুমন শীল।

পুলিশ জানায়, সেপ্টেম্বরেই ১৯-২০ বছর বয়সের ওই তিন যুবক একটি দামী মোবাইল হাতানোর ছক কষে। সেই মতো বেশ কয়েকটি ভুয়ো সিম কার্ড জোগাড় করে। কুন্তল পাণ্ডে নামে একটি ভুয়ো অ্যাকাউন্ট খুলে অনলাইন বিপণন সংস্থায় প্রায় ৪৭ হাজার টাকা দামের মোবাইলটি বুক করে প্রিন্স। সঙ্গে ভুয়ো সিম কার্ডের একটির নম্বর দেয়।

পুলিশ জানায়, ১৩ তারিখ বিকেলে নাগাদ মোবাইলটি ডেলিভারি দিতে লিলুয়ার বাসিন্দা সুদীপ ফোন করেন কুন্তল ওরফে প্রিন্সকে। কিন্তু বেশ কয়েকবার লিলুয়ার নানা জায়গায় ঘোরানোর পরে ভট্টনগরের কাছে প্রিন্স তাঁর সঙ্গে দেখা করে। তদন্তে পুলিশ জেনেছে, মোবাইলের দাম নিতে সুদীপকে তার বাড়িতে ডাকে প্রিন্স। সুদীপের বাইকে চেপেই প্রিন্স ভট্টনগর ভেড়ির কাছে যায়। ডেকে নেয় অঙ্কিত ও সুমনকে। ভেড়ির কাছে মোটরবাইক নিয়ে অপেক্ষা করছিল দু’জন। তিন জনে মিলে সুদীপকে মারধর করে দামী মোবাইলটি ও মালপত্র ভর্তি ব্যাগ কেড়ে নিয়ে চম্পট দেয় বলে অভিযোগ। ওই রাতেই লিলুয়া থানায় অভিযোগ করেন সুদীপ। লিলুয়া থানার আইসি মৃত্যুঞ্জয় বন্দ্যোপাধ্যায়, এসআই সইদুল হক গাজী ও ক্রাইম ইনচার্জ দীপঙ্কর সিংহরায় মিলে তৈরি হয় একটি বিশেষ দল।

পুলিশ জানায়, অনলাইন বিপণন সংস্থাটি গোলাবাড়ির একটি এজেন্সি মারফত মালপত্র বিলি করত। ঘটনার পর সেখান থেকে ওই দিন ব্যাগে থাকা সব মোবাইলের ‘আইএমইআই’ নম্বর নিয়ে নজরদারি শুরু করেন তদন্তকারীরা। দেখা যায় সবগুলি বন্ধ। ১৩ অক্টোবর পুলিশ দেখে দামী মোবাইলটি চালু রয়েছে ও আটটি নম্বর ব্যবহার হচ্ছে। তখন ওই নম্বরগুলির তথ্য আলাদা করে জোগাড় করে পুলিশ। দেখা যায় একটি মোবাইল নম্বর ‘কমন’। আটটি নম্বর থেকেই সেটিতে বহু বার কথা হয়েছে।

পুলিশ জানায়, তদন্তে জানা যায় ওই নম্বরটি প্রিন্সের নম্বর। তখন থেকে তার উপর নজরদারি শুরু করে পুলিশ। ৩ নভেম্বর প্রিন্সকে আটক করা হয়। তাকে জেরা করেই জানা যায় সুমন ও অঙ্কিতের নাম। এর পরে অঙ্কিতকে আটক করলে পুরো ঘটনাটি স্পষ্ট হয়। ধরা হয় সুমনকে। হাওড়া সিটি পুলিশের এসিপি (নর্থ ও ডিডি) সৌমিক সেনগুপ্ত বলেন, “বেশ কয়েকটি দামী মোবাইল, ক্যামেরার লেন্স, জুতো-সহ অনেক দামী জিনিস ছিল। সব কিছুই ওরা বিক্রি করে দিয়েছিল। সব জিনিস উদ্ধার হয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

santatu ghosh online
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE