Advertisement
E-Paper

একঘেয়েমি বৃষ্টিতে প্রস্তুতিতে ব্যাঘাত, কেনাকাটায় ভাটা

কখনও ইলশেগুঁড়ি, কখনও মাঝারি থেকে ভারী দু’দিন ধরে নিম্নচাপের বৃষ্টিতে ব্যাহত হল পুজোর প্রস্তুতি। কেনাকাটাই হোক বা প্রতিমা তৈরি, মণ্ডপ নির্মাণই হোক বা চাঁদা তোলা লাগাতার বৃষ্টির জন্য সেই চেনা ছন্দটাই উধাও হয়ে গেল শনি ও রবি পর পর দু’দিন। পুজো কমিটির উদ্যোক্তাদের মুখ ভার। মাথায় হাত পোশাক বিক্রেতাদের। রবিবার দুপুরের পর অনেক জায়গায় বৃষ্টি থামলেও কাদা মাড়িয়ে আর বাজারমুখো হননি ক্রেতাদের অনেকেই।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০০:২৭
খরিদ্দারের আশায়। রবিবার সকালে আরামবাগে তোলা নিজস্ব চিত্র।

খরিদ্দারের আশায়। রবিবার সকালে আরামবাগে তোলা নিজস্ব চিত্র।

কখনও ইলশেগুঁড়ি, কখনও মাঝারি থেকে ভারী দু’দিন ধরে নিম্নচাপের বৃষ্টিতে ব্যাহত হল পুজোর প্রস্তুতি। কেনাকাটাই হোক বা প্রতিমা তৈরি, মণ্ডপ নির্মাণই হোক বা চাঁদা তোলা লাগাতার বৃষ্টির জন্য সেই চেনা ছন্দটাই উধাও হয়ে গেল শনি ও রবি পর পর দু’দিন। পুজো কমিটির উদ্যোক্তাদের মুখ ভার। মাথায় হাত পোশাক বিক্রেতাদের। রবিবার দুপুরের পর অনেক জায়গায় বৃষ্টি থামলেও কাদা মাড়িয়ে আর বাজারমুখো হননি ক্রেতাদের অনেকেই।

এ ছবি হাওড়া-হুগলি দুই জেলারই। এর মধ্যে গ্রামীণ হাওড়ার উলুবেড়িয়া পুর এলাকার কিছু জায়গায় জমে গিয়েছে জলও। ফলে, সমস্যায় পড়ছেন সাধারণ মানুষ। পুজোর আর দশ দিন বাকি। এর মধ্যেই সারতে হবে সব কিছু। তাই সকলের প্রার্থনা, বৃষ্টি যেন আর না হয়। আর তা হলে সময়ে আদৌ কাজ শেষ হবে কি না, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন পুজো উদ্যোক্তারা।

আরামবাগের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের তালারপাড় মিলন সঙ্ঘের মণ্ডপে একহাঁটু জল দাঁড়িয়ে গিয়েছে। রবিবার তিনটি পাম্পের সাহায্যে সেই জল বের করা হচ্ছিল। সেই জলেই ডুবে রয়েছে দেওঘর থেকে আনা তিন ট্রাক মৃত সঞ্জীবনী গাছ। এ বারে এখানে পুজোর থিম ‘সিন্ধু সভ্যতা’। পুজো কমিটির সম্পাদক প্রভাত মণ্ডল বলেন, “বৃষ্টিতে কাজ তো পিছিয়ে গেলই, মৃত সঞ্জীবনী গাছ বাঁচানো যাবে কিনা সন্দেহ!”

জল জমে যাওয়ায় মণ্ডপ তৈরির কাজ বন্ধ হয়ে গিয়েছে আরামবাগের বিবেকানন্দ পল্লি, তিনের পল্লি, দুয়ের পল্লি বা মশাটের কিছু পুজোর। গুপ্তিপাড়ার একটি পুজো কমিটির এক কর্তা বলেন, “শনি-রবিবার বাড়ি বাড়ি চাঁদা কাটার দিন। বৃষ্টিতে সব চৌপাট হয়ে গেল।” বৃষ্টির কারণে প্রস্তুতিতে যে বিঘ্ন ঘটছে, তা মেনে নিয়েছেন মাহেশ জগন্নাথ ঘাট লেন সর্বজনীন (লক্ষ্মীঘাট)-এর কর্মকর্তা দিব্যেন্দু বালিয়ালও। একই রকম সমস্যায় পড়েছেন গ্রামীণ হাওড়ার বেশ কিছু পুজো উদ্যোক্তারাও।

সাধারণত, পুজোর অন্তত একমাস আগে থেকেই শনি-রবির ছুটিতে কেনাকাটার জন্য বাজারগুলিতে ভিড় উপচে পড়ে। কিন্তু সেই ছবি গত দু’দিনে দেখা যায়নি। পোশাক বিক্রেতাদের অনেকেই জানান, এ বার বেচাকেনা অন্য বছরের তুলনায় কম। শ্রীরামপুরের পোশাক বিক্রেতা বিশ্বজিৎ সাহা, বিকাশ সাহাদের বক্তব্য, বৃষ্টি তাঁদের হতাশ করেছে। শনিবার দিনভর বাজারে তেমন লোক হয়নি। রবিবার সকালেও ছিল একই পরিস্থিতি। আরামবাগের নজরুল বাজারের বস্ত্র ব্যাবসায়ী নবকুমার মণ্ডলের আক্ষেপ, “শনিবার থেকে রবিবার বিকাল অব্দি শুধু বসে বসে বৃষ্টি দেখতে হল।” কপালে ভাঁজ পড়েছে উলুবেড়িয়ার ব্যবসায়ীদেরও।

দু’দিনের বৃষ্টিতে জল জমে গিয়েছে উলুবেড়িয়া পুরসভার চেঙ্গাইল, বাউড়িয়া, বাজারপাড়া-সহ কয়েকটি এলাকায়। নোংরা জল মাড়িয়েই বাসিন্দাদের যাতায়াত করতে হচ্ছে। এই অবস্থায় পুজো বাজার নিয়ে অনেকেই আর মাথা ঘামাতে চাইছেন না। জল জমেছে বাগনান-১ ব্লক গ্রামীণহাসপাতালের চিকিৎসকদের আবাসন চত্বরেও। চেঙ্গাইলের বাসিন্দা মাসুদ আলম বলেন, “নিকাশি-নালার উপর অবৈধ নির্মাণের জেরে জমা জল বেরোতে পারছে না। পুরসভাও ঠিকমতো নালা সংস্কার করছে না। ফলে, আমাদের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।” পুরসভা অবশ্য দ্রুত সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছে।

কিছুটা চিন্তায় রয়েছেন বিভিন্ন এলাকার মৃৎশিল্পীরাও। অনেক জায়গাতেই এখন দ্বিতীয়া বা তৃতীয়ায় পুজোর উদ্বোধন হয়ে যায়। ফলে, মৃৎশিল্পীদের ঘরে এখন চূড়ান্ত ব্যস্ততা। কিন্তু বৃষ্টিতে ব্যাহত হচ্ছে সেই কাজ। সিঙ্গুরের সমর পাল এ বার ৩২টি প্রতিমা তৈরির বরাত পেয়েছেন। তিনি বলেন, “কিছু প্রতিমার মাটি এখনও শুকোয়নি। রংও শুকোচ্ছে না। রোদের জন্য অপেক্ষা ছাড়া গতি নেই।” শ্রীরামপুরের চাতরা কুমোরপাড়ার মৃৎশিল্পী শঙ্কর পালের আশঙ্কা, নিম্নচাপ আরও ক’দিন থাকলে সমস্যা বাড়বে। তবে, চাঁপাডাঙার মৃৎশিল্পী কৃষ্ণচন্দ্র পাল বা পারুলের সুমন্ত রামের মতো কয়েক জন জানিয়েছে, অসুবিধের মধ্যেই তাঁরা কাজ চালাচ্ছেন। প্রতিমা মণ্ডপে পাঠানোর সময় যে এগিয়ে আসছে।

pujo rain pujo marketing boredom south bengal
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy