Advertisement
১৮ মে ২০২৪
আলো নেই, জলের সমস্যা

চুঁচুড়ায় বেহাল পুলিশ আবাসন, আবাসিকরা ক্ষুব্ধ

দেওয়াল থেকে খসে পড়ছে পলেস্তারা। সন্ধের পর টর্চের আলোই ভরসা। কারণ রাস্তায় আলো নেই। পানীয় জলের চরম অব্যবস্থা। ছবিটা চুঁচুড়ার তালডাঙায় রামমোহন পুলিশ আবাসনের। চুঁচুড়ার তালডাঙা থেকে তোলাফটকে যাওয়ার পথে রাস্তার ধারেই পড়ে আবাসন। আবাসনে ঢোকার মুখেই একধারে সাইনবোর্ড।

এভাবেই জলের অপেক্ষায় থাকতে হয় আবাসিকদের।—নিজস্ব চিত্র

এভাবেই জলের অপেক্ষায় থাকতে হয় আবাসিকদের।—নিজস্ব চিত্র

তাপস ঘোষ
চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ২৭ ডিসেম্বর ২০১৪ ০১:৩৪
Share: Save:

দেওয়াল থেকে খসে পড়ছে পলেস্তারা। সন্ধের পর টর্চের আলোই ভরসা। কারণ রাস্তায় আলো নেই। পানীয় জলের চরম অব্যবস্থা। ছবিটা চুঁচুড়ার তালডাঙায় রামমোহন পুলিশ আবাসনের।

চুঁচুড়ার তালডাঙা থেকে তোলাফটকে যাওয়ার পথে রাস্তার ধারেই পড়ে আবাসন। আবাসনে ঢোকার মুখেই একধারে সাইনবোর্ড। তবে আগাছায় ঢাকা পড়ে যাওয়ায় তা কষ্ট করে খুঁজতে হয়। বস্তুত হুগলি জেলা সদরে পুলিশ আবাসনের এমন বেহাল চিত্র যেন রাজ্যের পুলিশ প্রশাসনের হতশ্রী চেহারারই প্রতীক। আবাসনের হাল নিয়ে আবাসিকদের অভিযোগের অন্ত নেই। আবাসনে জল সরবরাহের জন্য দু’টি পাম্প থাকলেও কয়েক মাস ধরে সেগুলি অচল। ফলে পুরসভার সরবরাহ করা জলই একমাত্র উপায়। ফলে সকাল হলেই বালতি নিয়ে জলের লাইনে ছুটতে হয়। দেওয়ালের পলেস্তারা জায়গায় জায়গায় খসে পড়ছে। আবাসিকদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন কোনও সংস্কার নেই।

জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) তথাগত বসু বলেন, “ওই পুলিশ আবাসনের শোচনীয় অবস্থার কথা জানি। শীঘ্রই টেন্ডার ডেকে আবাসনের সংস্কারের কাজ যাতে শুরু করা যায় তার চেষ্টা চলছে।”

আবাসিকরা মূলত জেলা পুলিশের কর্মী। আবাসনের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বও জেলা পুলিশেরই। কিন্তু ক্রমশ বেহাল হয়ে পড়লেও নজর নেই কারও। রামমোহন আবাসনের মধ্যে চারতলা করে চারটি ভবন রয়েছে। একেকটি ভবনে ১৬টি করে পরিবারের বাস। বর্তমানে আবাসনে ৫২টি পরিবার বাস করে। অধিকাংশ পরিবারের কর্তাকেই কাজের তাগিদে বাইরে থাকতে হওয়ায় যাবতীয় ঝামেলা মহিলাদেরই সামলাতে হয়। তাঁদের অভিযোগ, পানীয় জলের সমস্যা প্রাণান্তকর হয়ে দাঁড়িয়েছে। একে তো পুরসভার জলের গাড়ির উপরে নির্ভর করে থাকতে হয়। তার উপর যাঁরা দোতলা বা তিনতলায় থাকেন তাঁদের উপরে জল বয়ে নিয়ে যেতে কষ্টের সীমান থাকে না। ঘরের জানলা-দরজার অবস্থাও শোচনীয়। সব ভেঙে যাচ্ছে। দেওয়াল থকে প্লাস্টার থসে পড়ছে। বৃষ্টিতে জানলা বন্ধ না হওয়ার কারণে ঘরের জিনিসপত্র ভিজে যায়। শৌচাগারের দরজা ভেঙে যাওয়ায় অনেকেই লজ্জা ঢাকতে পর্দা টাঙিয়েছেন। রাস্তায় কোনও আলো না থাকায় সন্ধের পর টর্চের আলোই ভরসা। তা ছাড়া ঠিকমত সাফাই না হওয়ার জন্য চারপাশ ঝোড়ঝঝাড়ে ঢেকে যাওয়ায় সাপের আতঙ্ক রয়েছে। তা ছাড়া অন্ধকার নামলে আবাসন চত্বরে অচেনা লোকজনের আনাগোনায় নিরাপত্তার অভাবেও ভুগছেন বলে আবাসিকরা জানান। ফলে অন্ধকার নামলে অনেকেই বাড়ির বাইরে বেরোতে সাহস করেন না। স্থানীয় কাউন্সিলার থেকে শুরু করে পুরপ্রধান, জেলার পুলিশ সুপার সবার কাছেই দুর্দশার কথা জানানো হলেও কোনও কাজই হচ্ছে না বলে অভিযোগ আবাসিকদের।

এই অবস্থায় জনগণকে নিরাপত্তা দেওয়া যাঁদের দায়িত্ব, তাঁদের পরিবারের লোকজনই নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

tapash ghosh chinsurah southbengal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE