জেরা শেষ হল আমতার মুক্তিরচক গণধর্ষণ কাণ্ডের অন্যতম নির্যাতিতার।
বুধবার আমতা আদালতের বিচারক শ্যামল রায়চৌধুরীর এজলাসে ওই নির্যাতিতার (জেঠশাশুড়ি) জেরা শেষ হয়। মঙ্গলবার তাঁর জেরা শুরু হয়েছিল। আজ, বৃহস্পতিবার এই ঘটনায় আরও এক নির্যাতিতাকে (বৌমা) জেরা করা হবে। এ দিন অভিযুক্ত পক্ষের আইনজীবী বিমল রক্ষিত ফের ফরেন্সিক রিপোর্ট। ডিএনএ পরীক্ষার রিপোর্ট নেই বলে শুনানি পিছিয়ে দেওয়ার জন্য বিচারকের কাছে আবেদন জানান। কিন্তু বিচারক সেই আবেদন খারিজ করে শুনানি চালু রাখার নির্দেশ দেন। প্রসঙ্গত, ফরেন্সিক রিপোর্ট না মেলায় মঙ্গলবার আদালতে উপস্থিত জেঠশাশুড়িকে প্রথমে জেরা করতে চাননি অভিযুক্ত পক্ষের আইনজীবী।
এ দিন বিমলবাবু বিচারককে জানান, নির্যাতিতার দেওয়া বয়ানে অসঙ্গতি রয়েছে। কারণ গোপন জবানবন্দিতে নির্যাতিতা বলেছিলেন, তাঁর হাত-মা-মুখ বেঁধে অভিযুক্তরা বারান্দায় এনেছিল। অথচ অন্যত্র তিনি বলেছেন, অভিযুক্তরা তাঁর হাত-পা বেঁধে বিছানায় ফেলে দিয়ে যায়। এ ব্যাপারে নির্যাতিতা জানান, তিনি সব জায়গাতেই একই কথা বলেছেন।
অভিযুক্ত পক্ষের আইনজীবী নির্যাতিতাকে প্রশ্ন করেন, ঘটনার পর জামাকাপড়-সহ কি কি জিনিস পুলিশ নিয়েছিল? উত্তরে নির্যাতিতা জানান, তিনি হাসপাতালে ছিলেন। ফলে বলতে পারবেন না। এরপরেই অভিযুক্ত পক্ষের আইনজীবী বিমলবাবু এই ঘটনার সঙ্গে রাজনৈতিক যোগ আছে বলে দাবি করেন। নির্যাতিতাকে তিনি বলেন, “ওরা তৃণমূল করে। আপনি সিপিএম করেন। তাই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে মিথ্যা কথা বলে ওঁদের জড়িয়েছেন।”
যদিও এর জবাবে নির্যাতিতা বলেন, “আমি কোনও মিথ্যা বলিনি। যা ঘটনা ঘটেছে সেটাই বলেছি। ” বিমলবাবু জানান, বিভিন্ন পরীক্ষার রিপোর্ট না পাওয়ায় জেরা করার ক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছে। প্রয়োজনে তাঁরা উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হবেন।
যদিও নির্যাতিতাদের আইনজীবী রেজাউল করিম বলেন, “কোনও সমস্যার ব্যাপার নেই। আদালত চাইছে বিচার প্রক্রিয়া চালিয়ে যেতে। অথচ অভিযুক্ত পক্ষের আইনজীবী অথচ বিভিন্ন রিপোর্টের প্রসঙ্গ তুলে বিচার প্রক্রিয়া বিলম্বিত করতে চাইছেন।”
২০১৪ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি রাতে এই গণধর্ষণের ঘটনা ঘটে। স্থানীয় তৃণমূল নেতা বরুণ মাখাল, রঞ্জিত মণ্ডল-সহ ১০ জন তৃণমূল কর্মী-সমর্থক রাতের অন্ধকারে নির্যাতিতাদের বাড়িতে চড়াও হয়। ঘরে ঢুকে মারধর, গণধর্ষণ করে লুঠপাট চালিয়ে চলে যায় বলে অভিযোগ। পুলিশ ৯ জনকে গ্রেফতার করে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy