Advertisement
১১ মে ২০২৪

টোটো বিক্রি নিয়ে প্রতারণা, নাম জড়াল তৃণমূল নেতার

কয়েক মাস আগে কিস্তিতে টোটো গাড়ি বিক্রির অফিস খোলা হয় ডোমজুড় থানার জাপানি গেট এলাকায়। টোটো কেনার জন্য জমা পড়ে কয়েক লক্ষ টাকা। কিন্ত নির্দিষ্ট সময়ের পরেও টোটোর দেখা মেলেনি। অফিসে তালা দিয়ে চম্পট দিয়েছে সংশ্লষ্ট লোকজন। এই ঘটনায় নাম জড়িয়েছে ডোমজুড় পঞ্চায়েত সমিতির এক তৃণমূল সদস্য রঞ্জিত সাঁতরার।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ডোমজুড় শেষ আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০২:০৯
Share: Save:

কয়েক মাস আগে কিস্তিতে টোটো গাড়ি বিক্রির অফিস খোলা হয় ডোমজুড় থানার জাপানি গেট এলাকায়। টোটো কেনার জন্য জমা পড়ে কয়েক লক্ষ টাকা। কিন্ত নির্দিষ্ট সময়ের পরেও টোটোর দেখা মেলেনি। অফিসে তালা দিয়ে চম্পট দিয়েছে সংশ্লষ্ট লোকজন। এই ঘটনায় নাম জড়িয়েছে ডোমজুড় পঞ্চায়েত সমিতির এক তৃণমূল সদস্য রঞ্জিত সাঁতরার। যদিও রঞ্জিতবাবু নিজেকে পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য বলেই মানতে রাজি নন! ডোমজুড় থানায় প্রতারণার লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে। এখনও কেউ গ্রেফতার হয়নি।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, কয়েক মাস আগে জাপানি গেট এলাকায় কিস্তিতে টোটো কেনাবেচার অফিস খোলা হয়। অফিসের দায়িত্বে ছিল রবীন মণ্ডল নামে এক ব্যক্তি। তার বাড়ি বালটিকুরি খালধার পাড়ায়। ওই ব্যক্তি এলাকার বেকার যুবকদের কিস্তিতে টোটো কেনার ব্যবস্থা করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। ১২ জন তার কাছে এককালীন টাকা জমা দেন। সব মিলিয়ে টাকার পরিমাণ প্রায় ৫ লক্ষ। অভিযোগকারীদের দাবি, রবীন বাবু বলেছিলেন, অগস্ট মাসের মধ্যে সবাইকে টোটো দিয়ে দেওয়া হবে। পরে বলা হয়, ১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে টোটো ‘ডেলিভারি’ দেওয়া হবে। কিন্তু তার পর থেকেই সংস্থার অফিস তালাবন্ধ। রবীনবাবু্র ফোন ‘সুইচড্ অফ’। তিনি এলাকাছাড়া। ২ সেপ্টেম্বর মহম্মদ মুসিম আনসারি নামে এক ব্যক্তি ডোমজুড় থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তিনি বলেন, ‘‘আমরা গরিব মানুষ। ধার করে টোটোর জন্য ৫০ হাজার টাকা দিয়েছিলাম। কিন্তু এভাবে প্রতারিত হব বুঝতে পারিনি।’’

তদন্তকারী অফিসারেরা জানান, রবীন মণ্ডল অফিসে থাকলেও এই চক্রের মূল মাথা মহম্মদ জাহির খান ওরফে সাহিদ খান। পুরো পরিকল্পনা তার। ক্রেতাদের বলা হয়েছিল, টোটোর মূল দাম কমবেশি ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা। প্রথম কিস্তিতে ৫০ হাজার টাকা দিলেই টোটো হাতে পাওয়া যাবে। পরে মাসে মাসে বাকি টাকা দিলেই হবে। যাঁরা টাকা দিয়েছিলেন তাঁদের রসিদও দেওয়া হয়। সেখানে কোম্পানির নাম হিসেবে লেখা ছিল ‘টোটো অ্যান্ড গোল্ড ফাইনান্স’।

পুলিশ জানায়, মহম্মদ জাহির খান কয়েক দিন উত্তর ঝাঁপড়দহ এলাকার ডোমজুড় পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য তৃণমূলের রঞ্জিত সাঁতরার বাড়িতে ভাড়া ছিলেন। রঞ্জিতবাবুকে জিজ্ঞাসা করেছে পুলিশ। জেরায় তিনি দাবি করেছেন, জাহির খান তাঁর বাড়িতে কয়েকদিন ভাড়া ছিলেন। তবে তার আগে তিনি তাকে চিনতেন না। তবে আনন্দবাজারের অফিস থেকে রঞ্জিতবাবুকে ফোন করা হলে তিনি দাবি করেন, ‘আমি ডোমজুড় পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য নই।’’ যদিও ডোমজুড় পঞ্চায়েত সমিতির একাধিক কর্তা জানিয়েছেন, রঞ্জিতবাবু পঞ্চায়েত সমিতিরই সদস্য। তিনি স্থানীয় বিধায়ক আবুল কাশেম মোল্লার অনুগামী বলেই এলাকায় পরিচিত।

কাশেম মোল্লা অবশ্য বলেন, ‘‘এই ঘটনাটির বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। তবে গরিব মানুষের সঙ্গে যারা প্রতারণা করেছে তাদের শাস্তি হওয়া উচিত।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE