হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এক তৃণমূল কর্মী।—নিজস্ব চিত্র
এলাকা দখল নিয়ে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর লোকজনের সংঘর্ষে জেরে শনিবার রাতে উত্তপ্ত হয়ে উঠল বাগনানের দেউলটির নাচক। সংঘর্ষে দু’পক্ষের অন্তত ১৫ জন জখম হয়েছেন। আহতদের মধ্যে ৬ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। গণ্ডগোলের মদত দেওয়ার অভিযোগ এনে স্থানীয় তৃণমূল নেতা প্রদ্যোৎ ঘোষ-সহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে বাগনান থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন ওরফুলি পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান শ্রীকান্ত সরকারের অনুগামীরা। অন্যদিকে শ্রীকান্ত সরকারের দলবলের বিরুদ্ধেও পাল্টা অভিযোগ করেছেন প্রদ্যুৎ ঘোষের অনুগামীরা। যদিও এই ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই বলে দাবি করেছেন তৃণমূলের জেলা নেতৃত্ব। হাওড়া জেলা (গ্রামীণ) তৃণমূল সভাপতি পুলক রায় বলেন, “একেবারেই ব্যক্তিগত কারণে নিজেদের মধ্যে কেউ কেউ গণ্ডগোল করলে দল তার জন্য দায়ী নয়। তা সত্ত্বেও দলের পক্ষ থেকে ঘটনার তদন্ত হচ্ছে। দোষীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” তবে যুযুধান দুই গোষ্ঠীই একে অন্যের বিরুদ্ধে এলাকা দখলের অভিযোগ করেছে।
পুলিশ ও তৃণমূল সূত্রের খবর, শনিবার রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ নাচকের একটি ক্লাবে বসে জানা পঁচিশেক তৃণমূল কর্মী-সমর্থক টিভিতে ত্রিকেট দেখিছিলেন। স্থানীয় ভাবে এঁরা সকলেই তৃণমূল নেতা শ্রীকান্ত সরকারের অনুগামী বলে পরিচিত। হঠাৎই প্রায় ৩০ জনের একটি দল লাঠি-রড নিয়ে ওই ক্লাবঘরে চড়াও হয়। কয়েকজন পালালেও বাকিদের বেধড়ক মারধর করা হয়। শ্রীকান্তবাবুর অভিযোগ, “প্রদ্যুৎ ঘোষের লোকজন হামলা চালায়। খবর পেয়ে আমাদের ছেলেরা এলে ওরা পালিয়ে যায়।” তিনি আরও জানান, প্রদ্যুত এক সময় সিপিএম করত। তার পরে কংগ্রেসে যোগ দেয়। সম্প্রতি মুকুল রায়ের কাছে গিয়ে তৃণমূলে যোগ দেয়। তারপরেই এলাকায় প্রভাব খাটাতে গোলমাল বাধাচ্ছে।
প্রদ্যুতবাবুর অভিযোগ, “গত ২৮ অগস্ট বিকেলে দেউলটির তামুলতলায় মুকুলবাবু মেদিনীপুর যাওয়ার পথে গাড়ি থামিয়ে আমাদের সঙ্গে কথা বলেছিলেন। সেই থেকেই শ্রীকান্তর লোকেরা নাচকের লোকদের নানা ভাবে ভয় দেখাচ্ছিল।” তিনি জানান, শনিবার সন্ধ্যায় দলের কিছু ছেলে ফিস্টের আয়োজন করছিল। সেই সময় শ্রীকান্তর লোকজন তাতে বাধা দেয়। তা নিয়েই বচসা থেকে হাতাহাতি। পরে শ্রীকান্তর লোকজন থানায় গিয়ে তাঁদের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ করে। তাঁর দাবি, শ্রীকান্তর লোকজনের আচরণে অতিষ্ট হয়ে অনেকেই তাঁর দিকে চলে আসছিলেন। এটাতেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওরা এই হামলা চালিয়ছে।
জেলার পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) ইন্দ্র চক্রবর্তী বলেন, “বাগনানে একটা গণ্ডগোলের ঘটনা ঘটেছে। ২৬ জনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগও দায়ের হয়েছে। তদন্ত চলছে। এলাকায় পুলিশি টহলের ব্যবস্থা করা হয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy