Advertisement
E-Paper

ভাটোরা-ঘোড়াবেড়িয়া চিত্‌নান এখনও অনুন্নয়নের অন্ধকারে

চারপাশ ঘিরে রয়েছে রূপনারায়ণ আর মুণ্ডেশ্বরী নদী। যাতায়াত বলতে নদীপথই ভরসা। বিভিন্ন সময়ে জেলার উন্নয়ন নিয়ে নানা কর্মসূচী নেওয়া হলেও আজও অনুন্নয়নের অন্ধকারেই থেকে গিয়েছে হাওড়ার দ্বীপ এলাকা ভাটোরা-ঘোড়াবেড়িয়া চিত্‌নান। মূলত দ্বীপ এলাকা হওয়ায় যাতায়াতের সমস্যা রয়েছে। নদী পার হয়েও মেঠোপথই ভরসা। স্কুল কলেজের পড়ুয়া থেকে নিত্যযাত্রী এমনকী রোগী নিয়েও এই পথেই চলাচল জদদকরতে হয় বাসিন্দাদের। বর্ষায় দুর্দশা আরও বাড়ে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ জুলাই ২০১৪ ০১:৪০
দ্বীপ এলাকায় যাতায়াতে নদীপথই ভরসা। জয়পুরের কাছে ভাটোরায়। ছবি: রমাপ্রসাদ গঙ্গোপাধ্যায়।

দ্বীপ এলাকায় যাতায়াতে নদীপথই ভরসা। জয়পুরের কাছে ভাটোরায়। ছবি: রমাপ্রসাদ গঙ্গোপাধ্যায়।

চারপাশ ঘিরে রয়েছে রূপনারায়ণ আর মুণ্ডেশ্বরী নদী। যাতায়াত বলতে নদীপথই ভরসা। বিভিন্ন সময়ে জেলার উন্নয়ন নিয়ে নানা কর্মসূচী নেওয়া হলেও আজও অনুন্নয়নের অন্ধকারেই থেকে গিয়েছে হাওড়ার দ্বীপ এলাকা ভাটোরা-ঘোড়াবেড়িয়া চিত্‌নান।

মূলত দ্বীপ এলাকা হওয়ায় যাতায়াতের সমস্যা রয়েছে। নদী পার হয়েও মেঠোপথই ভরসা। স্কুল কলেজের পড়ুয়া থেকে নিত্যযাত্রী এমনকী রোগী নিয়েও এই পথেই চলাচল জদদকরতে হয় বাসিন্দাদের। বর্ষায় দুর্দশা আরও বাড়ে। রাজ্য সরকারের উদ্যোগে গত ৭ জাঋনুয়ারি ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে উত্তর ভাটোরায় শুরু হয়েছিল ঢালাই রাস্তা তৈরির কাজ। স্বাধীনতার ৬৭ বছর পরে দ্বীপাঞ্চলে ঢালাই রাস্তার কাজ শুরু হওয়ায় যারপরনাই আশায় বুক বেঁধেছিলেন ৪০ হাজার গ্রামবাসী। ভেবেছিলেন, তাঁদের এত বছরের দুর্দশা ঘুচতে চলেছে। হয়তো গ্রামের মূল রাস্তাগুলিও ঢালাই রাস্তা হবে। কিন্তু টাকার অভাবে কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তাঁদের সেই আশা জলে গিয়েছে।

পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, উত্তর-ভাটোরা বাগবাজার থেকে ভাটোরা পঞ্চায়েত অফিস পর্যন্ত এক কিলোমিটার ঢালাই রাস্তা তৈরির পরিকল্পনা করা হয় প্রাথমিক ভাবে। প্রথম পর্যায়ে ২৭০ মিটার ঢালাই রাস্তা তৈরির সিদ্ধান্ত নেয় পঞ্চায়েত। ব্যয় ধরা হয়েছিল প্রায় ৫ লক্ষ টাকা। গত ৭ জানুয়ারি থেকে কাজও শুরু হয়ে যায়। কিন্তু দেখা যায় মাত্র ৩৫ মিটার রাস্তা তৈরিতেই খরচ হয়ে গিয়েছে ২ লক্ষ টাকার বেশি। ফলে কাজ বন্ধ হয়ে যায়। কিছু মালপত্র থেকে গেলেও তা দিয়ে বাকি রাস্তা তৈরি সম্ভব নয় বলে পঞ্চায়েত কর্তাদেরই দাবি। এ ছাড়া, ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পের নিয়ম অনুযায়ী, মালপত্র কেনার জন্য ৬০ শতাংশের বেশি টাকা ব্যয় করতে পারছে না পঞ্চায়েত। ফলে তহবিল থাকছে না। তার উপরে মড়ার উপরে খাঁড়ার ঘা-এর মতো হয়ে দাঁড়িয়েছে মালপত্রের বহন খরচ। প্রথমে গাড়ি, পরে নৌকা, তার পরে মাথায় করে মাল বয়ে নিয়ে আসতে হয়। ফলে, অন্যত্র বহন খরচের থেকেও ১০ গুণ বেশি খরচ হচ্ছে এখানে মাল নিয়ে আসতে। লোকসানের ভয়ে ঠিকাদারেরাও কাজ করতে চাইছেন না। ফলে, ভাটোরার মানুষের দীর্ঘদিনের রাস্তার স্বপ্ন বা,্তবে রূপ পাবে কি না তা নিয়েই সন্দেহ দেখা দিয়েছে। যদিও পঞ্চায়েত প্রধান অর্ধেন্দু আলু এ ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী। তাঁর কথায়, যে ভাবেই হোক রাস্তা তৈরি হবেই।

এ দিকে, পাকা সড়কের অভাবে স্বাধীনতার ৬৭ বছর পরেও দুর্দশার শিকার এই দ্বীপ এলাকার মানুষ। কলকাতা থেকে মাত্র ৮০ কিলোমিটার দূরে ভাটোরা। পূর্ব দিকে হাওড়ারই একটি অংশ কাশমলি। পশ্চিম দিকে পশ্চিম মেদিনীপুরের গোপীগঞ্জ। উত্তরে রয়েছে হুগলির মাড়োখানা। এই তিনটি এলাকাতেই যোগাযোগ ব্যবস্থা যথেষ্ট উন্নত। মাঝখানের এই দ্বীপের মানুষজন মূল ভূখণ্ড থেকে প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়েই বাস করছেন। এলাকার মূল সড়ক বলতে কুলিয়া থেকে গোপীগঞ্জ ঘাট পর্যন্ত এবং মিনি বাজার থেকে উত্তর ভাটোরা পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার রাস্তা। এ ছাড়া, গ্রামীণ রাস্তার পরিমাণ ২০ কিলোমিটারের বেশি। যার ৯০ শতাংশই মাটির, ১০ শতাংশ ইটের। বলাবাহুল্য সেটাও ফি-বর্ষায় প্লাবনে নষ্ট হয়। ফলে এই রাস্তায় কোনও যানবাহন চলে না। হাঁটাই একমাত্র উপায়। ছাত্রছাত্রীদের স্কুলে যাতায়াত করতে হয় ৩ থেকে ৫ কিলোমিটার হেঁটে।

উত্তর ভাটোরার সাঁতরাপাড়া এবং আলুপাড়ার দুই বাসিন্দা স্বপন সাঁতরা এবং প্রশান্ত আলু বলেন, “এখানে কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে মুমূর্ষু রোগীকে চিকিত্‌সা করাতে নিয়ে যেতে হয় কাঁধে চাপিয়ে। প্লাবনে ডুবে যায় রাস্তা। তখন ভরসা নৌকা। প্রতি বছর বন্যার ফলে একমাত্র স্বাস্থ্যকেন্দ্রটির অবস্থাও বেহাল। এখানে চিকিত্‌সক আসেন না। ফার্মাটিস্ট, নার্স এবং চতুর্থ শ্রেণির কর্মীরাই স্বাস্থ্যকেন্দ্র চালান। যোগাযোগের অব্যবস্থায় পড়াশোনার জন্য ছাত্রছাত্রীদেরও এলাকার বাইরে যেতে প্রচণ্ড সমস্যায় পড়তে হয়। যাতায়াত ও যান চলাচলের সুবিধার্থে রাস্তার পাশাপাশি সেতুরও দাবি জানিয়েছেন দ্বীপ এলাকার মানুষ।

ভাটোরা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আশিস চট্টোপাধ্যায় বলেন, “ঢালাই রাস্তার সঙ্গে সঙ্গে যাতে সেতু তৈরি করা হয়, সে দিকে প্রশাসন নজর দিলে এই দ্বীপ এলাকার অনেক সমস্যা মেটে।”

গঙ্গায় নিখোঁজ কিশোর। গঙ্গা থেকে জল আনতে গিয়ে তলিয়ে গেল দশম শ্রেণির এক ছাত্র। বুধবার ঘটনাটি ঘটেছে হুগলির গুপ্তিপাড়া ঘাটে। নিখোঁজ কিশোরের নাম শুভঙ্কর সাধু। বাড়ি গুপ্তিপাড়া নীচ গঙ্গা গভর্নমেন্ট কলোনিতে। সে গুপ্তিপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের পড়ুয়া। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, এ দিন দুপুরে সে বাড়ির পুজোর জন্য গঙ্গায় জল আনতে যায়। সেই সময় কোনও ভাবে পা পিছলে জলে পড়ে যায়। স্থানীয় এক বাসিন্দা তাকে তলিয়ে যেতে দেখে চিত্‌কার করে লোক জড়ো করেন। খবর পেয়ে পুলিশ আসে। খবর দেওয়া হয় বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরে। তারা এসে তল্লাশি শুরু করলেও রাত পর্যন্ত ছেলেটির সন্ধান মেলেনি। শুভঙ্করের বাবা গৌরাঙ্গবাবু বলেন, “ছেলে সাঁতার জানে না। তাই এমনটা হল।”

southbengal bhatora ghoraberia uluberia
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy