Advertisement
E-Paper

লাগামহীন টোটো, নাজেহাল বাসিন্দারা

‘স্যার এ বারের মতো মাফ করে দিন।’ ‘কোনও কথা শুনবো না।’ ‘স্যার চাকাটা প্লিজ দিয়ে দিন।’ ‘চাকা দেব না।’ বার বার বারণ করা সত্ত্বেও ‘বেআইনি’ স্ট্যান্ড তৈরি করেন কয়েক জন চালক। তাতে ব্যস্ত জিটি রোডে যানজট হচ্ছিল। শেষমেশ তাঁদের শায়েস্তা করতে একটি টোটোর চাকাই খুলে নিলেন এক ট্রাফিক অফিসার। পরে অবশ্য ঊর্ধ্বতন এক অফিসারের কথায় ফেরত দেওয়া হল চাকা।

শান্তনু ঘোষ

শেষ আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০১৪ ০১:৫৬
অলঙ্করণ: সুমন চৌধুরী।

অলঙ্করণ: সুমন চৌধুরী।

‘স্যার এ বারের মতো মাফ করে দিন।’

‘কোনও কথা শুনবো না।’

‘স্যার চাকাটা প্লিজ দিয়ে দিন।’

‘চাকা দেব না।’

বার বার বারণ করা সত্ত্বেও ‘বেআইনি’ স্ট্যান্ড তৈরি করেন কয়েক জন চালক। তাতে ব্যস্ত জিটি রোডে যানজট হচ্ছিল। শেষমেশ তাঁদের শায়েস্তা করতে একটি টোটোর চাকাই খুলে নিলেন এক ট্রাফিক অফিসার। পরে অবশ্য ঊর্ধ্বতন এক অফিসারের কথায় ফেরত দেওয়া হল চাকা।

এটি একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা। তবে বালি জুড়ে টোটোচালকদের সঙ্গে প্রতি দিনই বিবাদে জড়িয়ে পড়ছেন ট্রাফিক পুলিশ কর্মীরা। অভিযোগ, হুহু করে টোটো বাড়ছে। অধিকাংশই ট্রাফিক নিয়ম মানে না। যত্রতত্র তৈরি হচ্ছে স্ট্যান্ড। প্রতি দিনই ঝামেলা বাধছে। কিন্তু টোটোর জন্য নির্দিষ্ট আইন না থাকায় পুলিশও কার্যত হাত-পা গুটিয়ে বসে। সম্প্রতি হাওড়ার পুলিশ ও প্রশাসনের কর্তারা যৌথ ভাবে টোটোর নির্দিষ্ট রুট ও আইন চালুর জন্য বৈঠক করেন। কিন্তু অটো না রিকশা কোনও যানের স্বীকৃতি দেওয়া হবে টোটোকে তা নিয়েও সংশয় থাকায় কোনও সমাধান সূত্র মেলেনি।

হাওড়া সিটি পুলিশের এক কর্তা বলেন, “স্থানীয় পুরসভা টোটোকে স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়ে ভাবনাচিন্তা হচ্ছে।” কিন্তু তত দিন কি টোটোর দৌরাত্ম্য সহ্য করতে হবে? এক পুলিশ কর্তার কথায়: “আইন নেই বলে তো টোটোর জন্য ব্যস্ত রাস্তায় যানের গতি শ্লথ হতে দিতে পারা যায় না।”

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, মাস সাতেক আগে পরিবেশ বান্ধব ব্যাটারি চালিত গাড়ি টোটো প্রথম চালু হয় বেলুড় স্টেশনে। তখন গাড়ি ছিল ৬৫টি। এখন বালি পুর এলাকায় মোট ৮০০টি টোটো চলে। স্থানীয় সূত্রের খবর, এই গাড়িগুলিকে নিয়ন্ত্রণ করছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতারা। বিনিময়ে চাঁদা দিতে হচ্ছে। টোটোচালকদের একাংশ জানান, প্রতি দিন পাঁচ টাকা করে প্রতি মাসে প্রায় এক লক্ষ কুড়ি হাজার টাকা চাঁদা উঠছে। কিন্তু তা কে নিচ্ছেন, কোথায় জমা হচ্ছে তার সদুত্তর মেলেনি। এ দিকে, প্রতি দিন টোটো নিয়ে বাসিন্দারা পুলিশের কাছে অভিযোগ করছেন।

বালির তৃণমূল বিধায়ক সুলতান সিংহ বলেন, “চাঁদা না নিলে রুটের নানা খরচ চলবে কি করে? তবে চাঁদা তোলা এখনও শুরু হয়নি। কে টাকা তুলছে বলতে পারব না।” তবে সুলতানবাবু এই চাকা খুলে নেওয়াকে সমর্থন করছেন না। তাঁর কথায়, “পুলিশ চাকা খুলে, আলো ভেঙে ঠিক করছে না। তবে টোটোদেরও নিয়ম মেনে চলা উচিত। আইন না মানলে পুলিশ আইন মোতাবেক ব্যবস্থা নিতে পারে।”

দৌরাত্ম্যের দশকাহন

• রুট নির্দিষ্ট নয়।

• হুহু করে বাড়ছে সংখ্যা।

• ভাড়ার নির্দিষ্ট তালিকা নেই।

• বালিখাল-নিমতলায় যত্রতত্র স্ট্যান্ড।

• হুগলির টোটো বালিতে এসে দাঁড়াচ্ছে।

• বিমা নেই, তবু বেশি যাত্রী তোলা হয়।

• ব্যাটারি বাঁচাতে রাতেও হেডলাইট বন্ধ থাকে।

• চালকদের লাইসেন্স ও রেজিস্ট্রেশন নম্বর নেই।

• স্থানীয় নেতাদের হস্তক্ষেপ।

• যাত্রী তুলতে যত্রতত্র দাঁড়ায়।

santanu ghosh bali toto southbengal
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy