ধীর গতিতে চলছে শিলান্যাসের কাজ। ছবি: সুব্রত জানা।
শিলান্যাসের চার মাস কেটে গিয়েছে। কিন্তু উলুবেড়িয়ার স্পোর্টস কমপ্লেক্স প্রকল্পের জায়গায় এখনও একটাও ইট পাতা হয়নি।
গত ফেব্রুয়ারি মাসে ক্রীড়ামন্ত্রী মদন মিত্র এই স্পোর্টস কমপ্লেক্সের শিলান্যস করে বলেছিলেন আগামী ন’মাসের মধ্যে একটি ঝাঁ চকচকে কমপ্লেক্স উপহার দেওয়া হবে উলুবেড়িয়ার বাসিন্দাদের। ক্রীড়ামন্ত্রীর এই কথায় স্বাভাবিক ভাবেই খুশি হয়েছিলেন জেলার ক্রীড়াপ্রেমীরা। কিন্তু এতদিন পরেও কমপ্লেক্স তৈরির কাজের তেমন অগ্রগতি না হওয়ায় স্থানীয় বাসিন্দারা স্পষ্টতই ক্ষুব্ধ এবং হতাশ। উল্টে নির্মাণ কাজের জন্য মাঠের মধ্যে মালপত্র ফেলে রাখায় খেলাধুলাও শিকেয়। উলুবেড়িয়া হাইস্কুলের কয়েক জন পড়ুয়ার কথায়, মাঠের মধ্যে ইট, বালি, যন্ত্রপাতি পড়ে থাকার জন্য খেলা যাচ্ছে না। কাজ কবে শেষ হবে কেউ বলতে পারছে না। স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক পুলক রায় অবশ্য বলেন, “নির্বাচনের কারণে কাজে সমস্যা হয়েছে। তবে শীঘ্রই কাজ দ্রুত গতিতে শুরু হয়ে যাবে।”
উলুবেড়িয়া পুরসভা এবং স্থানীয় সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধার্থশঙ্কর রায়ের আমলে তৎকালীন বিধায়ক অবণী বসুর উদ্যোগে হোগলা বন কেটে মাঠ তৈরি করা হয়। এবং পরবর্তী কালে বিধায়ক রবীন ঘোষ এবং সাংসদ হান্নান মোল্লার সময়ে মাঠটি স্টেডিয়ামে পরিণত হয়। তখন থেকেই এখানে খেলাধুুলো চলে। রাজ্যস্তরের বিভিন্ন প্রতিযোগিতার আয়োজনও করা হয়েছে এই স্টেডিয়ামে। পরে স্টেডিয়ামের চারপাশ পাঁচিল দিয়ে ঘেরা হয়। তৈরি করা হয় দর্শকদের বসার জন্য গ্যালারি। বর্তমানে রাজ্য সরকারের অধীনে স্টেডিয়ামটির পরিচালনায় রয়েছে ‘মহকুমা স্পোর্টস অ্যাসোসিয়েশন’। কিন্তু উপযুক্ত দেখভালের অভাবে বর্তমানে স্টেডিয়ামটি বেহাল হয়ে পড়েছে। ভেঙে গিয়েছে গ্যালারি। চলতি বছরের গোড়ার দিকে রাজ্য সরকার এই স্টেডিয়ামের সংস্কারের ব্যাপারে উদ্যোগী হয়। ফেব্রুয়ারি মাসে স্টেডিয়ামটিকে স্পোর্টস কমপ্লেক্স হিসাবে গড়ে তোলার নির্মাণ কাজের শিলান্যাস করেন রাজ্যে ক্রীড়ামন্ত্রী মদন মিত্র। তিনি বলেছিলেন, “নতুন করে সাজিয়ে তোলা হবে সাড়ে ১৫ হাজার বর্গমিটারের এই স্টেডিয়ামটিকে। ফুটবলের পাশাপাশি ব্যাডমিন্টন, কবাডি খেলার কোর্টও তৈরি করা হবে এখানে। ন’মাস পরে একটি সম্পূর্ণ স্টেডিয়াম হিসাবে আত্মপ্রকাশ করবে এটি।” প্রকল্পে যা বলা হয়েছে তা হল, স্টেডিয়ামে ১২০০ দর্শকের বসার জায়গা থাকবে। গড়ে তোলা হবে আধুনিক মানের ড্রেসিংরুম। থাকবে গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা এবং চিকিৎসকের চেম্বার। বিদ্যুৎ ব্যবস্থা-সহ স্পোর্টস কমপ্লেক্সের পরিকাঠামো গড়ে তুলতে বরাদ্দ হয়েছে ৯ কোটি টাকা।
কিন্তু অভিযোগ, বাস্তবে এখনও সে সব কাজের ছিটেফোঁটাও দেখা যাচ্ছে না। মাঠে গিয়ে দেখা গেল, ঢিমেতালে কাজ চলছে। মাঠে পড়ে বালি, ইট, স্টোনচিপস। চারজন কর্মী ঢালাইয়ের জন্য লোহার খাঁচা তৈরি করছেন। তবে নির্মাণ কাজে নিযুক্ত বাস্তুকাররা ইতিমদ্যেই মাঠের নিকাশি ব্যবস্থা নিয়ে অভিযোগ তুলেছেন। তাঁদের অভিযোগ, মাঠের চারপাশে অপরিকল্পিত ভাবে বাড়িঘর তৈরি হওয়ায় নিকাশি নালা প্রায় বন্ধ। পূর্ত দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে সেচ দফতরই মাঠের নিকাশি নালার কাজ করে দেবে। কিন্তু সেই কাজও কবে হবে তার কোনও উত্তর মেলেনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy