Advertisement
০৭ মে ২০২৪
Tree Cutting

ঝাড়খণ্ডে যাচ্ছে কাঠকয়লা, কাঁচামাল তৈরিতে দু’তিন টাকা কেজি দরে বিকোচ্ছে পেল্লাই গাছ

পুরুলিয়ার ডিএফও দেবাশিস শর্মার কার্যত স্বীকার করেন, এলাকায় অবৈধ কারবার চলছে।

—নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ১৪ জুন ২০২২ ২২:৪২
Share: Save:

পেল্লাই গাছ কেটে সাফ করে দেওয়া হচ্ছে জঙ্গল। জলের দরে বিকিয়ে দেওয়া হচ্ছে সেই জঙ্গলের জীবন্ত গাছ। সেই গাছের কাঠ পুড়িয়ে বেআইনি ভাবে তৈরি করা হচ্ছে কাঠকয়লা-সহ নানা সামগ্রী। সে সবই পাড়ি দিচ্ছে ঝাড়খণ্ডে। পুরুলিয়ার আড়শা থানা এলাকার এ ভাবেই রমরমিয়ে চলছে গাছ বিক্রির কারবার। বৈধ এবং অবৈধ দু’ভাবেই চলছে কাঠ মজুত। অভিযোগ, গোটা পর্বে কাঠকয়লার কাঁচামাল তৈরিতে দু’তিন টাকা কেজি দরে বিকোচ্ছে পুরুলিয়ার জঙ্গলের পেল্লাই গাছগুলি।

স্থানীয় সূত্রে খবর, পুরুলিয়ার আড়শা থানা এলাকার পাতুয়ারাতে রমরমিয়ে চলছে কাঠ পুড়িয়ে তা থেকে কাঠকয়লা তৈরির বেআইনি কাজ। ওই গ্রামের এক বাসিন্দার দাবি, ‘‘দু’তিন টাকা কেজি দরে এই কাঠগুলো বিক্রি হয়। তার পর এগুলো থেকে কাঠকয়লা তৈরি করা হয়। এই কাঠকয়লা চলে যায় ঝাড়খণ্ড। লাক্ষা এমনকি লোহা গলানোর কাজেও লাগে এই কাঠকয়লা।’’

সম্প্রতি পাতুয়ারা গ্রামের এক বাসিন্দার পুরুলিয়ার জেলাশাসকের কাছে এই মর্মে লিখিত অভিযোগ করার পর বিষয়টি প্রকাশ্যে এসেছে। পাতুয়ারা এলাকার একটি কোচিং সেন্টারের মালিক শ্যামলকুমার মাঝি জেলাশাসকের কাছে একটি লিখিত আবেদনে অভিযোগ করেন, এলাকায় প্রচুর কাঠ মজুত করে বেআইনি ভাবে কাঠকয়লা তৈরির কাজ চলছে।

স্থানীয়দের দাবি, এ ভাবে কাঠ পুড়িয়ে কাঠকয়লা তৈরি করার ফলে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। যার জেরে অসুবিধা হচ্ছে এলাকার বাসিন্দাদের। এই বেআইনি কারবার বন্ধের দাবিও করেছেন শ্যামলকুমার। এই চিঠির প্রতিলিপি মুখ্যমন্ত্রীকেও পাঠানো হয়েছে বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি। অথচ ঘটনার কথা জানা সত্ত্বেও কোনও পদক্ষেপ করেনি বলে বন দফতরের বিরুদ্ধে অভিযোগ তাঁর। যদিও ওই এলাকার রেঞ্জার শাহনাজ ফারুখ আহমেদ বলেন, ‘‘অভিযোগ পেয়েই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ২৪টি ভাটি ভেঙে দেওয়া হয়েছে।’’

গোটা ঘটনায় পুরুলিয়া জেলার জেলাশাসক রজত নন্দার কাছ থেকে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে পুরুলিয়ার ডিএফও দেবাশিস শর্মার কার্যত স্বীকার করেন, এলাকায় অবৈধ কারবার চলছে। তাঁর কথায়, ‘‘ওই এলাকায় কিছু কাঠ বৈধ থাকলেও অবৈধ কাঠ ছিল। অবৈধ কাঠগুলি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।’’ গোটা ঘটনায় পুরুলিয়া জেলা বিজেপি সভাপতি বিবেক রাঙার দাবি, ‘‘এই সরকারের নিচুতলা থেকে উপরতলা, সকলেই কাটমানির সঙ্গে যুক্ত। কোথাও অভিযোগ করে লাভ নেই। শুধু কাঠ নয়, বালি, পাথর, কয়লা সবেতেই চেন সিস্টেম চলছে।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ

অন্য বিষয়গুলি:

Tree Cutting Environment purulia
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE