Advertisement
E-Paper

জাল ওষুধের শিকড় কি ভিন্ রাজ্যেই

গোয়েন্দাদের বক্তব্য, শ্রীরামপুরে এক সরবরাহকারীর কাছে এপ্রিলে পাওয়া কিছু জাল ওষুধ এবং ধরা পড়া লোকজন আসলে হিমশৈলের চূড়া মাত্র। ওখানে নমুনা মিলেছিল এক আন্তঃরাজ্য জাল ওষুধ চক্রের।

সুরবেক বিশ্বাস

শেষ আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০১৭ ০৩:৪৬
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

বিষবৃক্ষের একটা ডাল মিলেছিল হুগলির শ্রীরামপুরে। সেটা ধরে এগিয়ে প্রথমে মনে হয়েছিল, শিকড় রয়েছে বেহালায়। সেখানে থাকা চাঁইকে ধরতে পারলেই গোটা বিষবৃক্ষ উপড়ে ফেলা যাবে। সাত মাস পালিয়ে থাকার পরে সেই অভিযুক্ত ধরাও পড়েছে। কিন্তু এখন পুলিশের সন্দেহ, জাল ওষুধ চক্রের শাখাপ্রশাখা ছড়িয়ে আছে পড়শি রাজ্য ঝাড়খণ্ড-ওডিশাতেও। এবং শিকড় সম্ভবত এই রাজ্যের বাইরেই।

গোয়েন্দাদের বক্তব্য, শ্রীরামপুরে এক সরবরাহকারীর কাছে এপ্রিলে পাওয়া কিছু জাল ওষুধ এবং ধরা পড়া লোকজন আসলে হিমশৈলের চূড়া মাত্র। ওখানে নমুনা মিলেছিল এক আন্তঃরাজ্য জাল ওষুধ চক্রের।

গত মঙ্গলবার রাতে শুকদেব ঘোষ ওরফে কচি নামে জাল ওষুধ চক্রের এক সন্দেহভাজন চাঁইকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। গোয়েন্দাদের দাবি, কচির কাছ থেকেই জানা গিয়েছে, একটি জাল ওষুধের একটি আন্তঃরাজ্য চক্র কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গ জুড়ে কাজ করছে।

এপ্রিলে শ্রীরামপুর স্টেশনের কাছে ড্রাগ কন্ট্রোল ও রাজ্য পুলিশের এনফোর্সমেন্ট শাখা (ইবি)-র এক দল অফিসার জাল ওষুধ বাজেয়াপ্ত করেন। জাল ওষুধ সরবরাহের অভিযোগে দু’জনকে গ্রেফতারও করা হয়। পুলিশ কয়েকটি জায়গা থেকে ‘কচিদা’ নামটি জানতে পারে। জাল ওষুধের সূত্রে যাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়, তারা জানায়, জিনিস পেতে বরাবর ‘কচিদা’-কেই বলতে হতো।

তদন্ত এগোলেও ওই জাল চক্রের গঠনতন্ত্রে কচি-র উপরে থাকা আর কারও নাম তখন পাওয়া যায়নি। সেই জন্য পুলিশের মনে হয়, শুকদেব ঘোষই জাল ওষুধের প্রস্তুতকারক। তবে তার নিজের কোনও কারখানা যে নেই, সেটাও তদন্তকারীরা আগেই জানতে পারেন। তাঁদের ধারণা ছিল, কচির নিজের কোনও কারখানা নেই। সে অন্য কোনও কারখানায় ওই সব ওষুধ তৈরি করায় এবং সেখানে কারখানায় হয়তো তৈরি হয় আরও বহু ধরনের জাল ওষু‌ধ।

তবে কচিকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জেনেছে, ওড়িশার এক ব্যক্তি ঝাড়খণ্ডে ঘাঁটি গেড়ে ওই জাল ওষুধ এই রাজ্যে পাঠায়। কিন্তু জাল ওষুধ কোথায় তৈরি হচ্ছে, একাধিক জায়গায় তার কারখানা আছে কি না, সেটা তদন্তকারীরা নিশ্চিত ভাবে বলতে পারছেন না। তদন্তে ইঙ্গিত, পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা, ঝাড়খণ্ড ছাড়াও চক্রটি অসমে জাল বিছিয়েছে।

কী ভাবে মিলল চক্রের খোঁজ?

শ্রীরামপুরে যে-ওষুধের জাল সংস্করণ মিলেছিল, সেটি সাধারণত হরমোন সাপ্লিমেন্ট হিসেবে মহিলাদের দেওয়া হয়। নির্দিষ্ট ব্র্যান্ড নেমের ওষুধটি তৈরি করে একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা, ভারতে যাদের সদর দফতর মুম্বইয়ে এবং কারখানা গোয়ায়। সংস্থাটি খবর পায়, ওই ওষুধ অনেক সস্তায় বিকোচ্ছে শ্রীরামপুরে।

প্রথমে সংস্থার কেউ কেউ ভেবেছিলেন, বিক্রয়কর ফাঁকি দিয়ে অন্য রাজ্যে বিক্রির জন্য বরাদ্দ ওই ওষুধ সস্তায় পশ্চিমবঙ্গে এনে বিক্রি করা হচ্ছে। পরে একটি বেসরকারি গোয়েন্দা সংস্থাকে নিয়োগ করে তাদের রিপোর্ট থেকে সংস্থাটি নিশ্চিত হয়, এখানে বিক্রি হচ্ছে তাদের ওষুধের নকল। ড্রাগ কন্ট্রোলে অভিযোগ জানায় ওই সংস্থা। ড্রাগ কন্ট্রোল খবর দেয় ইবি-কে।

‘‘ওই জাল ওষুধ মৃত্যুও ডেকে আনতে পারে। তাই আমরা এই চক্রের গোড়ায় পৌঁছতে চাইছি,’’ বলেন রাজ্য পুলিশের এক কর্তা।

Fake Medicine জাল ওষুধ Drugs
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy