খালি: দার্জিলিঙের রাস্তায় ফাঁকা টয়ট্রেন। —নিজস্ব চিত্র।
দিগন্তে ঝকঝকে তুষারাবৃত কাঞ্চনজঙ্ঘা। বাতাসিয়া লুপের রাস্তায় ছুটছে টয়ট্রেন। নীল আকাশে পাক খেয়ে মিলিয়ে যাচ্ছে ইঞ্জিনের ধোঁয়া। কিন্তু দু’টি কামরা মিলিয়ে যাত্রী সাকুল্যে পাঁচ।
নভেম্বরের বিকেল। তায় রবিবার। পুজোর পর থেকে ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত দার্জিলিঙে শীতকালীন পর্যটন মরসুম। বছরখানেক আগেও ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে ভিড়ে ঠাসা ছিল দার্জিলিং। চলতি বছরে টানা তিন মাস বন্ধ, গুলি, বোমা, লাগাতার অশান্তির পরে পাহাড়ের জনজীবন স্বাভাবিক হলেও পর্যটকদের দেখা নেই। তাই টয়ট্রেনে পর্যটকদের জন্য বিশেষ জয় রাইডেও যাত্রী নেই। তবে রেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, যাত্রী কম থাকলেও পর্যটনের স্বার্থে টয়ট্রেন চালিয়ে যাওয়া হবে।
পাহাড়ে বন্ধের সময় টয়ট্রেনও বন্ধ ছিল। এখনও শিলিগুড়ি থেকে দার্জিলিং যাত্রীবাহী টয়ট্রেনের যাতায়াত বন্ধ রয়েছে। কবে চলাচল শুরু হবে জানাতে পারেনি রেল। শুধুমাত্র পর্যটকদের জন্য দার্জিলিং থেকে ঘুম এবং ফিরতি পথে বিশেষ জয়রাইড চালাচ্ছে দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ে। কিন্তু ট্রেন চললেও কামরা খাঁ-খাঁ করছে।
প্রতিদিন তিনটি জয়রাইড হয়। মোট ছ’বার চলাচল করে টয়ট্রেন। গত দু’সপ্তাহ মিলিয়ে যাত্রী সংখ্যা হাজারও ছাড়ায়নি বলে রেলসূত্রে দাবি। এক ট্রেনচালকের কথায়, ‘‘দু’জন যাত্রী নিয়েও দার্জিলিং স্টেশন থেকে ট্রেন ছাড়তে হয়েছে।’’ দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ের (ডিএইচআর) এরিয়া ম্যানেজার নরেন্দ্র মোহন বলেন, ‘‘প্রতি বছর এই সময়ে জয়রাইডের টিকিটের জন্য যাত্রীদের লম্বা লাইন পড়ত দার্জিলিং স্টেশনে। ইন্টারনেটেই অর্ধেক বুকিং হয়ে যেত। এ বছর ফাঁকা কাউন্টারে বসে থেকে বুকিং কর্মীরা হাঁপিয়ে উঠছেন।’’
ডিএইচআর কর্তৃপক্ষ অবশ্য আশ্বস্ত করেছেন, যাত্রী কম হলেও আপাতত পরিষেবা বন্ধ করা হচ্ছে না। নরেন্দ্র মোহন জানিয়েছেন, ‘‘লাভ-ক্ষতি হিসেব করে দার্জিলিঙে টয়ট্রেন চালানোর কথা এখনই ভাবা হচ্ছে না। দার্জিলিঙে পর্যটক এখন কম। তবে যে ক’জনও আসছেন তাঁদের জন্যই চলবে ট্রেন। নরেন্দ্র মোহনের কথায়, ‘‘দার্জিলিঙের পর্যটন প্রসারে রেলেরও তো দায়িত্ব আছে।’’
আপাতত ট্রেন চললেও জয়রাই়ড নিয়ে কিন্তু আশঙ্কা দানা বেঁধেছে নানা মহলে। কারণ রেলের একটি সূত্রের খবর, এমন যাত্রী সঙ্কট চলতে থাকলে জয়রাইড বন্ধও হয়ে যেতে পারে। এমনটাই নিয়ম রেলের।
ট্যুর অপারেটরদের একাংশের দাবি, এখনও হাতেগোনা যে ক’জন পর্যটক আসছেন, তাঁরা ঝকঝকে কাঞ্চনজঙ্ঘা এবং টয়ট্রেনের টানেই আসছেন। জয়রাইড বন্ধ হয়ে গেলে পর্যটকের সংখ্যা আরও কমে যেতে পারে। রাজ্যের পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেবও এ নিয়ে উদ্বিগ্ন। গৌতমবাবুর কথায়, ‘‘পর্যটক এমনিতেই কম। তার মধ্যে দার্জিলিঙের অন্যতম আকর্ষণ টয়ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে গেলে তাতে তো আরও বিরূপ প্রতিক্রিয়া হতেই পারে।’’ তিনি নিজেই রেলের সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy