Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

পরিবার টেনে ইন্দ্রনীলের কটাক্ষ, জবাব বুদ্ধ-কন্যার

তৃণমূলের নির্বাচনী জনসভা থেকে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য ও তাঁর পরিবারকে জড়িয়ে আক্রমণে গেলেন গায়ক-নেতা ইন্দ্রনীল সেন। পত্রপাঠ পাল্টা জবাব দিলেন বুদ্ধ-কন্যা সুচেতনা ভট্টাচার্যও। বাম সরকার থাকাকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধবাবুর সঙ্গে শিল্পী ইন্দ্রনীলের ‘ঘনিষ্ঠতা’ ছিল বলে নানা মহল থেকেই প্রচার করা হয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০১৫ ০৩:০৭
Share: Save:

তৃণমূলের নির্বাচনী জনসভা থেকে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য ও তাঁর পরিবারকে জড়িয়ে আক্রমণে গেলেন গায়ক-নেতা ইন্দ্রনীল সেন। পত্রপাঠ পাল্টা জবাব দিলেন বুদ্ধ-কন্যা সুচেতনা ভট্টাচার্যও।

বাম সরকার থাকাকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধবাবুর সঙ্গে শিল্পী ইন্দ্রনীলের ‘ঘনিষ্ঠতা’ ছিল বলে নানা মহল থেকেই প্রচার করা হয়। পাইকপাড়ায় বৃহস্পতিবার তৃণমূলের প্রচার-সভা থেকে ইন্দ্রনীল নিজেই বলেন, ‘‘বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত সম্পর্ক ছিল। তাঁর মেয়ে সুচেতনার সঙ্গেও আমার ব্যক্তিগত সম্পর্ক ছিল।’’ এর পরেই তাঁর কটাক্ষ, ‘‘কিন্তু বুদ্ধদেব এক দিনের জন্যও মেয়ে সুচেতনাকে রাজনীতিতে আনতে চাননি। কারণ উনি যে কুৎসিত রাজনীতি করেন, উনি চাননি তাঁর পরিবারের কেউ সেই রাজনীতিতে আসুক!’’ যে সভা থেকে ইন্দ্রনীল ওই মন্তব্য করেছেন, মূল বক্তা ছিলেন তৃণমূলের ‘যুবরাজ’ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। যিনি সম্পর্কে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাইপো। ইন্দ্রনীলের যুক্তি ছিল, আজকাল ছেলেমেয়েরা রাজনীতিতে আসতে চায় না। অভিষেক এসেছেন মমতাকে দেখে উদ্বুদ্ধ হয়ে। ইন্দ্রনীলের সংযোজন, ‘‘আমার মেয়ে যদি মমতার নেতৃত্বে তৃণমূলে যোগ দেয়, তা হলে আমি গর্বিত বাবা হব!’’ এই সূত্রেই বুদ্ধবাবুর রাজনীতি ও তাঁর পরিবারকে কটাক্ষ করেছেন তৃণমূলের ‘জয়হিন্দ বাহিনী’র রাজ্যের চেয়ারম্যান ইন্দ্রনীল।

প্রকাশ্য সভায় এমন আক্রমণের কথা জেনে সুচেতনা অবশ্য স্পষ্ট করে দিতে চেয়েছেন, বুদ্ধবাবু বা তাঁর পরিবারের কারও সঙ্গেই গায়ক-নেতার ‘ঘনিষ্ঠ’ বা ‘ব্যক্তিগত’ সম্পর্ক ছিল না। সুচেতনার কথায়, ‘‘ইন্দ্রনীল সেন কি মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের সরকারি দফতর বা দলীয় দফতরে গান শোনাতে যেতেন? পাম অ্যাভিনিউয়ের বাড়িতে আসতেন? বুদ্ধবাবুর গাড়িতে উঠতেন? পাবলিক ফাংশন ছাড়া বুদ্ধদেব, সুচেতনা বা মীরা ভট্টাচার্যের সঙ্গে তাঁর কোথাও দেখা হয়েছে?’’ এক সময়ে ইন্দ্রনীলের একটি সংস্থায় চাকরিসূত্রে জড়িত ছিলেন বুদ্ধ-কন্যা। যে চাকরি তিনি ছেড়ে দেন ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে। সুচেতনার বক্তব্য, ‘‘আরও অনেক সংস্থাতেই চাকরি করেছি। এই সিদ্ধান্তের কোনওটাই আমার বাবার প্রভাবে নয়। আমাদের পরিবার ব্যক্তিস্বাতন্ত্রে বিশ্বাস করে।’’ বুদ্ধবাবুদের রাজনীতি ‘কুৎসিত’ বলে যে আক্রমণ ইন্দ্রনীল করেছেন, তার প্রেক্ষিতেও সুচেতনার জবাব, ‘‘আমি রাজনীতি করিনি আমারই সিদ্ধান্তে। আমি সিপিএমের সুদিনেও সেই দলে যোগ দিতে যাইনি!’’ তৃণমূলের ‘সুসময়ে’ ইন্দ্রনীল যে রাতারাতি মুখ্যমন্ত্রীর ‘ঘনিষ্ঠ’ হয়ে গুছিয়ে বসেছেন, সে দিকেই ইঙ্গিত করতে চেয়েছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর কন্যা।

ইন্দ্রনীল অবশ্য এ দিন ছিলেন পুরোদস্তুর তৃণমূল নেতারই ভূমিকায়। ভোটের আগেই ১ নম্বর বরোর ৬টি ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থীকে ‘জয়ী’ বলে ঘোষণা করে অভিনন্দন জানিয়ে তিনি এ দিন বলেন, ‘‘কলকাতার ১৪৪টি ওয়ার্ডেই বিরোধী প্রার্থীদের জন্য ১৪৪ ধারা জারি হয়ে গিয়েছে!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE