Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
ডানলপ-জেসপ

শিয়রে ভোট, অন্তর্বর্তী ভাতা কর্মীদের

অধিগ্রহণের বিল পাশ হয়ে গিয়েছে সংখ্যার জোরে। রাষ্ট্রপতির সম্মতি এসে বিল কার্যকর হতে সময় লাগবে। কিন্তু বিধানসভা ভোট তত ঘাড়ের কাছে! অতএব, অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া চূড়ান্ত না হওয়া পর্যন্ত ডানলপ ও জেসপের কর্মীদের মাসিক ১০ হাজার টাকা করে অন্তর্বর্তী ভাতা (এক্স-গ্রাসিয়া) দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য সরকার।

মুখ্যমন্ত্রীর ডানলপ অধিগ্রহণের ঘোষণার পর শ্রমিকদের আবির খেলা। ডানলপ গেটে।—ফাইল চিত্র

মুখ্যমন্ত্রীর ডানলপ অধিগ্রহণের ঘোষণার পর শ্রমিকদের আবির খেলা। ডানলপ গেটে।—ফাইল চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০১ মার্চ ২০১৬ ০৪:১০
Share: Save:

অধিগ্রহণের বিল পাশ হয়ে গিয়েছে সংখ্যার জোরে। রাষ্ট্রপতির সম্মতি এসে বিল কার্যকর হতে সময় লাগবে। কিন্তু বিধানসভা ভোট তত ঘাড়ের কাছে! অতএব, অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া চূড়ান্ত না হওয়া পর্যন্ত ডানলপ ও জেসপের কর্মীদের মাসিক ১০ হাজার টাকা করে অন্তর্বর্তী ভাতা (এক্স-গ্রাসিয়া) দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য সরকার।

ডানলপ ও জেসপ অধিগ্রহণের বিষয়ে তৈরি মন্ত্রিগোষ্ঠীর বৈঠকের পরে সোমবার নবান্নে অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র বলেন, ‘‘বিল পাশ হওয়ার পরে তার আইনি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এর মধ্যে শ্রমিকদের কষ্টের কথা ভেবে মানবিকতার দিকটি বিবেচনা করে অন্তর্বর্তী এক্স-গ্রাসিয়া দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। দুই সংস্থার মাস্টার রোলে যাঁরা আছেন, তাঁদের প্রতি মাসে ১০ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে।’’ অর্থমন্ত্রী জানান, জেসপে ৪৬৪ জন এবং ডানলপে ৫৫০ জন মাস্টার রোলে আছেন। এঁদের মাসিক এক্স-গ্রাসিয়া দিতে সরকারের ১ কোটি টাকার মতো খরচ হবে। রাজ্যের রাষ্ট্রায়ত্ত উদ্যোগ এবং শিল্প পুনর্গঠন দফতর থেকে ওই অর্থ দেওয়া হবে।

নবান্ন সূত্রের বক্তব্য, দুই কারখানা অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে যে-হেতু সরকারের আর্থিক খরচের বিষয় জড়িত, তাই এই ধরনের বিলের ক্ষেত্রে নিয়মমাফিক রাষ্ট্রপতির অনুমতি লাগবে। রাজ্য প্রশাসনের এক কর্তার কথায়, ‘‘বিল রাষ্ট্রপতির অনুমতি নিয়ে আসতে বছর ঘুরে যেত। কিন্তু ভোটের আগে অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া না এগোলে জনমানসে বিরূপ প্রতিক্রিয়া হতে পারে। তাই অন্তর্বর্তী ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।’’ ওই কর্তা জানান, অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করতে এক জন কমিশনার নিয়োগ করবে সরকার। কমিশনারের নেতৃত্বে একটি বোর্ড দু’টি সংস্থার যাবতীয় বিষয় খতিয়ে দেখবে।

বিরোধীরা অবশ্য রাজ্য সরকারের এমন উদ্যোগ নিয়ে ফের প্রশ্ন তুলেছে। কংগ্রেস বিধায়ক মানস ভুঁইয়ার বক্তব্য, ‘‘রাজ্য সরকারি ও আধা-সরকারি কর্মচারীদের ৪৫% মহার্ঘ ভাতা বাকি। এই অবস্থায় এই রকম একটা সিদ্ধান্ত!’’ মানসবাবুর দাবি, শিল্প পুনর্গঠন দফতরের পরিকল্পনা-বহির্ভূত খাত থেকে এই খরচা না করে মুখ্যমন্ত্রীর উচিত ছিল অর্থমন্ত্রীর দ্বারস্থ হওয়া। কারণ অমিতবাবু বারবার দাবি করেন, তিনি সরকারের ঘরে প্রচুর টাকা তুলেছেন! বকেয়া মহার্ঘ ভাতার প্রসঙ্গ তুলেই আইএনটিইউসি-র রাজ্য সভাপতি রমেন পাণ্ডেও ডানলপ-জেসপ সংক্রান্ত সিদ্ধান্তকে ‘রাজনৈতিক চমক’ বলেছেন। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সুজন চক্রবর্তীও বলেছেন, ‘‘শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষা হোক, কে না চায়। কিন্তু দু’টো কারখানার শ্রমিকদের এক্স-গ্রাসিয়া দেওয়া গেলে বাকি বন্ধ কারখানার শ্রমিকেরা কী দোষ করলেন?’’ বস্তুত, একই আশঙ্কা শ্রম দফতরের একাংশেরও। যদিও রাজ্যের এক মন্ত্রীর যুক্তি, ‘‘অন্য বন্ধ কারখানার শ্রমিকদেরও তো মাসিক ক্ষতিপূরণ (ফাউলাই প্রকল্পে) দেওয়া হয়। ডানলপ ও জেসপের কর্মীদের এক্স-গ্রাসিয়া দিলে ক্ষতি কী আছে!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

interim allowance dunlop jessop
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE