পাশাপাশি: মমতার পাশে গৌতম, পিছনে রবীন্দ্রনাথ।নিজস্ব চিত্র
উত্তরবঙ্গ উৎসব আয়োজনের আগে থেকেই দু’জনের ঠান্ডা লড়াই। সেই প্রতিযোগিতায় কখন, কে এগিয়ে থাকবেন, মুখ্যমন্ত্রীর স্বীকৃতি কে আগে আদায় করবেন, তার জন্য চাপানউতোর কম হয়নি উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ এবং পর্যটনমন্ত্রী তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন পর্যদের চেয়ারম্যান গৌতম দেবের মধ্যে। সোমবার কাঞ্চনজঙ্ঘা ক্রীড়াঙ্গণে উত্তরবঙ্গ উৎসবের উদ্বোধনেও ‘দফতরের’ আগেই মুখ্যমন্ত্রীর মুখে এল ‘পর্ষদের’ নাম। মুখ্যমন্ত্রীর পাশে পাশেই দেখা গেল গৌতমকে। সেখানে রবি রইলেন কয়েক কদম পিছিয়ে।
তৃণমূলের অন্দরে প্রশ্ন, এই কয়েক কদম পিছিয়ে থাকাটা কি প্রতীকী?
এ দিন উৎসব মঞ্চে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘উত্তরবঙ্গে, বিশেষ করে শিলিগুড়িতে আমাদের সরকার অনেকগুলি কাজ করেছে ক্ষমতায় আসার পর। এসজেডিএ বলুন, উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন পর্ষদ বলুন, উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর বলুন— টাকা অনেক বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।’’ উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরই বরাবর এই উৎসবের আয়োজক। গত বছর কোচবিহারে উদ্বোধন হয়েছিল উৎসবের। এ বার হয়েছে শিলিগুড়িতে। এ দিন মঞ্চে বঙ্গরত্ন প্রাপকদের পুরস্কার বিতরণ থেকে শুরু করে যাবতীয় কর্মকাণ্ডে কিন্তু গৌতম দেবই মঞ্চের কর্তৃত্ব বজায় রাখলেন। উৎসব চলবে ৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। তা পরিচালনার ভার দেওয়ার সময়ও আগে গৌতম দেব, পরে রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যকে রাখেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘এখনও অনেক দিন এই অনুষ্ঠান চলবে। গৌতম, রবি সবাই মিলে তা সুষ্ঠুভাবে চালাবে।’’
তা হলে কি গৌতম কয়েক ধাপ এগিয়ে গেলেন? রবীন্দ্রনাথ ঘোষের শিবির এই দাবি খারিজ করে দিয়েছে। তাদের দাবি, উদ্বোধন শিলিগুড়িতে, তাই স্বাভাবিকভাবেই আয়োজনের ভার গৌতমকেই নিতে হয়েছে। হয়তো মুখ্যমন্ত্রী ওই রকম ভাবেই বলেছেন, কিন্তু নাম আগে-পরে দেওয়ার জন্য কী আর রাজনীতিতে কিছু হেরফের হয়? গৌতম দেবের শিবির অবশ্য এ সব নিয়ে বিতর্ক এড়িয়েই গিয়েছে। তাদের দাবি, অনুষ্ঠান সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করতে বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এসব নিয়ে একেবারেই মাথা ঘামাচ্ছেন না তিনি।
মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্যে আবার কেউ কেউ মনে করছেন, ভোটের আগে দলে মতভেদ কমাতে গৌতম-রবির নাম এক বন্ধনীতে এনে কৌশলে বার্তা দিলেন মমতা। রবি এবং গৌতম কি সেটা বুঝতে পেরে নিজেদের মধ্যেকার ঠান্ডা লড়াই শেষ করতে পারবেন? তৃণমূলেরই কেউ কেউ বলছেন, এই লড়াই বন্ধ না হলে আখেরে দলেরই ক্ষতি। আসন্ন লোকসভা ভোটে সেটা দলীয় কর্মীদের কাজের উপরে প্রভাব ফেলতে পারে। বিশেষ করে কোচবিহারেও তো দ্বন্দ্বের অভাব নেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy