Advertisement
০৪ মে ২০২৪

শিল্পায়ন নিয়ে নিজের বক্তব্যে অনড় চেল্লুর

তাঁর বক্তব্যের অপব্যাখ্যা হচ্ছে বলে অভিযোগ করা হয়েছিল এবং এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি এবং পরামর্শও ছিল। কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি কিন্তু তাতে সাড়া দিলেন না। এবং রাজ্যে শিল্পায়ন নিয়ে নিজের বক্তব্যেই অনড় থাকলেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৮ জুন ২০১৫ ০৩:৫৪
Share: Save:

তাঁর বক্তব্যের অপব্যাখ্যা হচ্ছে বলে অভিযোগ করা হয়েছিল এবং এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি এবং পরামর্শও ছিল। কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি কিন্তু তাতে সাড়া দিলেন না। এবং রাজ্যে শিল্পায়ন নিয়ে নিজের বক্তব্যেই অনড় থাকলেন।

হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি মঞ্জুলা চেল্লুর বুধবার নিজের এজলাসে বসার সঙ্গে সঙ্গেই প্রসঙ্গটি তোলেন রাজ্যের স্ট্যান্ডিং কাউন্সিল তথা কলকাতা হাইকোর্টের বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি প্রণব দত্ত এবং সরকারি আইনজীবী জহরলাল দে। রাজ্যে শিল্পায়ন নিয়ে প্রধান বিচারপতি মঙ্গলবার যা বলেছিলেন, সংবাদমাধ্যম তার অপব্যাখ্যা করেছে বলে অভিযোগ করেন তাঁরা। দু’জনেই অভিযোগ তোলেন, এর ফলে রাজ্যের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে। সংবাদপত্রগুলির বিরুদ্ধে নোটিস জারির আর্জিও জানান তাঁরা।

প্রধান বিচারপতি জানিয়ে দেন, তিনি সংবাদমাধ্যমের বাক্‌স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করায় বিশ্বাসী নন। সেই সঙ্গে জানিয়ে দেন, তিনি কী বলেছেন, সেটা তিনি বিলক্ষণ জানেন। জানেন, কোনটা তাঁর কাজ আর কোনটা নয়।

পশ্চিমবঙ্গে লগ্নির পরিবেশ কতটা জটিল, তা বোঝাতে গিয়ে প্রধান বিচারপতি মঙ্গলবার তেলঙ্গানা, কেরল, কর্নাটকের মতো দক্ষিণী রাজ্যের প্রসঙ্গ তোলেন। বিশেষ করে বলেন জমি-জটের কথা। অর্থ লগ্নি সংস্থা এমপিএসের আমানতকারীদের টাকা ফেরতের একটি মামলায় সেবি-র কৌঁসুলি জানান, আইনি জটিলতা থাকায় ওই সংস্থার জমির ক্রেতা পাওয়া যাচ্ছে না। প্রধান বিচারপতি তখনই লগ্নির সমস্যার কথা বলেন।

বুধবার ঠিক কী হয়েছে প্রধান বিচারপতির এজলাসে?

প্রণব দত্ত: বাংলার শিল্প-বিনিয়োগ নিয়ে প্রধান বিচারপতির মন্তব্য এ দিন বিভিন্ন সংবাদপত্রে এবং অন্য সংবাদমাধ্যমে যে-ভাবে তুলে ধরা হয়েছে, তাতে রাজ্যের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে।

জহরলাল দে: এই বিষয়টি নিয়ে বিরোধীরা রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে প্রচার চালাচ্ছে। এই ঘটনা নিয়ে তোলপাড় হয়ে যাচ্ছে বিধানসভা।

প্রণব: আপনাকে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিতে হবে।

প্রধান বিচারপতি: আমি কী ব্যবস্থা নেব?

জহরলাল: আমরা জানি, সংবাদমাধ্যম আপনাকে ‘মিসকোট’ (ভুল ভাবে উদ্ধৃত) করেছে। আপনি অবিলম্বে সংবাদমাধ্যমগুলোর বিরুদ্ধে নোটিস জারি করুন।

প্রধান বিচারপতি: আমি কী বলেছি, আমি জানি। আমি সংবাদমাধ্যমের বাক্‌স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করায় বিশ্বাসী নই। সেটা আমার কাজও নয়। সুপ্রিম কোর্টের একাধিক বিচারপতির সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে আমার কথা হয়েছে। তাঁরা জানিয়েছেন, সংবাদমাধ্যমের কাজ আলাদা এবং বিচার ব্যবস্থার কাজ আলাদা।

বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী: সংবাদমাধ্যমের কাজে হস্তক্ষেপ করা শোভন নয়।

জহরবাবু তখন প্রধান বিচারপতির সামনে বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রকাশিত (বিশেষত ইংরেজি সংবাদপত্র) শিল্প বিনিয়োগ সংক্রান্ত সংবাদগুলি পড়তে থাকেন।

জহরলাল: মানুষের কাছে ভুল বার্তা যাচ্ছে।

প্রধান বিচারপতি: আমি হয়তো এ ভাবে বলতে চাইনি।

প্রণব ও জহরলাল: আপনি অবিলম্বে সংবাদপত্রের বিরুদ্ধে নোটিস জারি করুন।

প্রধান বিচারপতি: কোনও শিল্প বিনিয়োগকারী আমার কাছ থেকে শংসাপত্র নিয়ে বিনিয়োগ করতে আসেন না। এটা আমার কাজ নয়। এটা রাজ্য প্রশাসনের কাজ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE