কল্যাণ ঘোষ। নিজস্ব চিত্র
পঞ্চায়েত নির্বাচনে হাওড়া জেলা পরিষদের ৩৮ নম্বর আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে নির্দল প্রাথীর কাছে হেরে গিয়েছিলেন আগের বোর্ডের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ তথা তৃণমূল প্রার্থী কল্যাণ ঘোষ। তারপরেও তাঁকে জেলা পরিষদে ফিরিয়ে আনা হল।
জেলা পরিষদের মেন্টর হিসাবে তাঁকে নিয়োগ করার জন্য হাওড়া জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছে রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর। একইসঙ্গে একজন কো-মেন্টরও নিয়োগ করা হয়েছে। তাঁর নাম অরুণাংশু ভট্টাচার্য। তবে অরুণাংশুবাবু রাজনীতির মানুষ নন।
জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানান, সোমবার কল্যাণবাবুকে মেন্টর এবং অরুণাংশবাবুকে কো-মেন্টর করার জন্য পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর থেকে চিঠি এসেছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জেলা প্রশাসনকে বলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, কল্যাণবাবুর হেরে যাওয়া নিয়ে জেলা তৃণমূলে বিস্তর জলঘোলা হয়। কল্যাণবাবুর কেন্দ্রটি রাজ্যের অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণ দফতরের মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিধানসভাকেন্দ্র ডোমজুড়ের মধ্যে পড়ে। জেলা তৃণমূল সূত্রের খবর, রাজীববাবু কল্যাণবাবুকে প্রার্থী হিসাবে মানেননি পারেননি।
কল্যাণবাবুর বিরুদ্ধে একজন নির্দল প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জিতেও যান। পুরো বিষয়টিকে দলের অভ্যন্তরীণ গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বলেই মেনে নেন জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। কল্যাণবাবু দলের রাজ্য নেতৃত্বের কাছে নালিশ করেন, ডোমজুড়ে দলের প্রভাবশালী নেতার মদতেই তাঁকে হারানো হয়েছে। যদিও রাজীবের দাবি ছিল, কল্যাণবাবুর হেরে যাওয়ার সঙ্গে তাঁর কোনও সম্পর্ক ছিল না।
জেলা তৃণমূল সূত্রের খবর, জেলা পরিষদের মোট আসন ৪০টি। কল্যাণবাবু না জিততে পারায় তৃণমূলের জয় হয় ৩৯টি আসনে। সব আসন না পাওয়ার জন্য তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষুব্ধ হন বলেও দলের জেলা নেতৃত্বের একটি বড় অংশ জানান।
এ দিকে পঞ্চায়েত নির্বাচনের পরেই জেলা পরিষদগুলিতে মেন্টর নিয়োগ করার কথা বলে রাজ্য সরকার। পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের আধিকারিকদের একটি অংশের মতে বিভিন্ন জেলায় দলের যে সব প্রার্থী হেরে গিয়েছেন বা সংরক্ষণ ও গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কারণে টিকিট পাননি মূলত তাঁদের পুনর্বাসনের জন্যই মেন্টর পদ তৈরি করা হবে।
একটি নির্বাচিত সংস্থার মাথায় মেন্টর বসানো কতটা আইনসঙ্গত তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন বিভিন্ন মহল। কিন্তু তাতে যে সরকার কর্ণপাত করেনি তার প্রমাণ হাওড়া জেলা পরিষদে এই মেন্টর নিয়োগ।
রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়নমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মেন্টররা জেলা পরিষদকে পরামর্শ দেবেন। তাঁকে সহায়তা করবেন কো-মেন্টর। এটা বেআইনি নয়।’’ আর কল্যাণবাবু বলেন, ‘‘আমি এই সংক্রান্ত নিয়োগপত্র এখনও হাতে পাইনি। তাই কোনও মন্তব্য করব না।’’
আর এই প্রসঙ্গে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মেন্টর ও কো-মেন্টর নিয়োগ কাকে করা হবে এটা দল ও সরকারের সিদ্ধান্ত। আমি সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাচ্ছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy