Advertisement
১১ মে ২০২৪

অস্ত্র দেখিয়ে দুই ডাকাতি, সঙ্গে উঠছে কিছু প্রশ্নও

প্রতিবেশীর ফাঁকা বাড়ি পাহারা দিতে সেখানে ঘুমোতে গিয়েছিলেন তিনি। আর গভীর রাতে ওই বাড়িতেই ঢুকে পড়ল ডাকাতেরা। তালা ভেঙে ঘরে ঢুকে গলায় চপার ঠেকিয়ে আলমারির চাবি চাইলে বাগুইআটির রবীন্দ্রপল্লির বাসিন্দা শম্পা সাহা তাদের জানান, ওই বাড়ির মালকিন পুরী বেড়াতে গিয়েছেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৯ জুন ২০১৪ ০০:৪৮
Share: Save:

প্রতিবেশীর ফাঁকা বাড়ি পাহারা দিতে সেখানে ঘুমোতে গিয়েছিলেন তিনি। আর গভীর রাতে ওই বাড়িতেই ঢুকে পড়ল ডাকাতেরা। তালা ভেঙে ঘরে ঢুকে গলায় চপার ঠেকিয়ে আলমারির চাবি চাইলে বাগুইআটির রবীন্দ্রপল্লির বাসিন্দা শম্পা সাহা তাদের জানান, ওই বাড়ির মালকিন পুরী বেড়াতে গিয়েছেন। চাবি রয়েছে তাঁর কাছেই। তিনি শুধুই সেখানে ঘুমোতে এসেছেন। সে কথা অবশ্য বিশ্বাস করেনি ডাকাতেরা। শাবল ঢুকিয়ে তারা আলমারির দরজা বেঁকিয়ে দেয়, তার পরে লুঠপাট চালায়। যাওয়ার আগে শম্পাদেবীরও হার, দুল, আংটি, চুড়ি ছিনিয়ে নেয় তারা। বাগুইআটির এই ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার। শনিবার রাত পর্যন্ত অবশ্য দুষ্কৃতীদের কারও হদিস পায়নি পুলিশ।

এ দিকে, শনিবার দুপুরে লালবাজারের অদূরে নেতাজি সুভাষ রোডে একটি অফিসে ডাকাতির অভিযোগ উঠেছে। তবে সেটি ঘিরে কিছু প্রশ্নও রয়েছে। তদন্তকারীদের বক্তব্য, ওই অফিসের কর্মীদের প্রাথমিক ভাবে জিজ্ঞাসাবাদের পরে বেশ কিছু অসঙ্গতি পেয়েছেন তাঁরা।

বাগুইআটির রবীন্দ্রপল্লির যে বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে, সেটি ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায়। শনিবার শম্পাদেবীর স্বামী রণজিত্‌ সাহা বলেন, “প্রতিবেশী কৃষ্ণা সাহার পরিবারের সঙ্গে আমাদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। তাঁরা কোথাও গেলে আমি বা আমার স্ত্রী রাতে ওই বাড়িতে থাকি। এ বার স্ত্রী ওই বাড়িতে ছিলেন।” শম্পাদেবী বলেন, “রাত আড়াইটে নাগাদ দরজায় শব্দ হতেই ঘুম ভেঙে যায়। দেখি শোয়ার ঘরের ছিটকিনি ভেঙে তিন জন ঢুকে পড়েছে। প্রত্যেকের মুখ কালো কাপড় দিয়ে ঢাকা।” তিনি পুলিশকে জানান, ডাকাতেরা তাঁর মাথায় চপার ধরে আলমারির চাবি চায়। বন্দুক দেখিয়ে বলে, চাবি না দিলে তাঁকে মেরে ফেলা হবে। চাবি তাঁর কাছে নেই জানালেও আলমারির দরজা বেঁকিয়ে ডাকাতেরা লুঠপাট চালায় বলে জানান শম্পাদেবী। তিনি জানান, এর পরে ডাকাতেরা বলে তারা পাশের বাড়িতে ডাকাতি করতে যাচ্ছে। তিনি চিত্‌কার করলে বোমা মেরে বাড়ি উড়িয়ে দেওয়া হবে। যদিও আর কোনও বাড়িতে হানা দেয়নি ডাকাতদলটি।

এ দিন সকালে পুলিশ এসে দেখে, গ্রিলের দরজার তালা ভাঙা। ভাঙা রয়েছে তিনটে দরজার ছিটকিনিও। পুলিশ এলে ক্ষোভে ফেটে পড়েন বাসিন্দারা। রবীন্দ্রপল্লির ওই বাড়িটির কাছেই মাস দু’য়েক আগে চুরির ঘটনা ঘটে। তারও কোনও কিনারা হয়নি। বাসিন্দাদের অভিযোগ, বাগুইআটি এলাকায় চুরি-ডাকাতি বেড়ে গিয়েছে। গত তিন মাসে সাত-আটটি বাড়িতে চুরি হয়েছে। কিন্তু পুলিশ কোনও ঘটনার কিনারা করে উঠতে না পারায় চুরিও বন্ধ হয়নি। পুলিশ অবশ্য এই অভিযোগ মানতে চায়নি। বিধাননগর কমিশনারেটের এক পুলিশকর্তা বলেন, “ওই এলাকায় অসামাজিক কাজ বন্ধ করতে স্থানীয় মানুষের সুপারিশে নাগরিক সভা হয়েছিল। সেই সভায় কিছু প্রস্তাব দেয় দুই পক্ষই। সেই মতো নজরদারি চলছে।” এলাকাবাসীর পাল্টা অভিযোগ, সব নজরদারি চলছে কাগজে-কলমে। রাতের রাস্তায় পুলিশ দেখা যায় না। তাঁদের প্রস্তাব, বাসিন্দারা চাঁদা তুলে পুলিশকে সাইকেল কিনে দেবেন। তারা যেন এলাকায় টহল দেন।

এ দিকে পুলিশ জানিয়েছে, শনিবার ১৪ নম্বর নেতাজি সুভাষ রোডের ওই বেসরকারি আর্থিক সংস্থার অফিসে দুপুর আড়াইটে নাগাদ তিন জন সশস্ত্র দুষ্কৃতী চড়াও হয়। অফিসের দু’জন কর্মীকে বন্দুক দেখিয়ে লকার খুলিয়ে প্রায় সাড়ে পাঁচ লক্ষ টাকা নেয় তারা। যাওয়ার আগে দুই কর্মীকে বেঁধে রেখে যায়। বন্দুকের বাঁট দিয়ে তাঁদের মাথায় আঘাত করারও অভিযোগ উঠেছে। পুলিশ জানায়, সন্ধ্যা সাড়ে ছ’টা নাগাদ ওই অফিসের কর্মীরা হেয়ার স্ট্রিট থানায় খবর দেন। পুলিশ গিয়ে কর্মীদের জিজ্ঞাসাবাদ করে। তবে তদন্তকারীদের দাবি, পুলিশে খবর দিতে দেরি করা হল কেন, তার কোনও সদুত্তর মেলেনি। পাশাপাশি, বন্দুকের বাঁটের আঘাতেরও চিহ্ন মেলেনি বলে দাবি পুলিশের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE