উদ্বিগ্ন: শুক্রবার পুরসভায় ধীরেন্দ্রকুমার দাস। নিজস্ব চিত্র
স্ত্রীর সঙ্গে মোবাইলে শেষ কথা হয়েছে বৃহস্পতিবার রাতে। তার পরে আর বাড়ির সদস্যদের সঙ্গে কোনও ভাবেই যোগাযোগ করতে পারছেন না। কলকাতা পুরসভার সদর দফতরে কেয়ারটেকারের ঘরে বসে তাই তাঁর চোখ বারবারই চলে যাচ্ছে টিভির দিকে।
কলকাতা পুরসভার কর্মী ধীরেন্দ্রকুমার দাসের বাড়ি ওড়িশার বালেশ্বরের খয়রা থানা এলাকার প্রত্যন্ত একটি গ্রামে। বৃদ্ধা মা, স্ত্রী, পুত্র, কন্যা থাকেন সেখানেই। দীর্ঘ দিন ধরে ধীরেন্দ্রবাবু খিদিরপুরে কলকাতা পুরসভার আবাসনে একাই থাকেন। শুক্রবার বিকেলে কেয়ারটেকারের ঘরের পাশের ঘরে, কন্ট্রোল রুমে থাকা মেয়র, পুর আধিকারিকদের চা-জল দিতে ব্যস্ত তিনি। তার মধ্যেই ফাঁক পেলে চোখ বুলিয়ে নিচ্ছেন টিভিতে। চল্লিশোর্ধ্ব ধীরেন্দ্রবাবুর কথায়, ‘‘বুধবার জানতে পেরেছিলাম, ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’ ধেয়ে আসছে। বাড়ি যাওয়ার ইচ্ছা থাকলেও উপায় তো নেই। ছুটি পাওয়া মুশকিল। তার উপরে জানতে পারলাম, ওখানে যাওয়ার ট্রেনও বাতিল হয়ে গিয়েছে।’’
বৃহস্পতিবার গভীর রাতে স্ত্রীর মুখ থেকে শুনেছিলেন, বৃষ্টিতে তাঁর গ্রামে বেশ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। গাছ ছাড়াও কয়েকটি মাটির বাড়ি পড়ে গিয়েছে। স্ত্রীর সঙ্গে বৃহস্পতিবার রাতে শেষ কথা হওয়ার পরে বারবার ফোন করলেও আর যোগাযোগ করতে পারেননি ধীরেন্দ্রবাবু। তিনি বলেন, ‘‘বৃহস্পতিবার রাতে স্ত্রী জানিয়েছিল, মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছে। বৃষ্টিতে কিছু দেখা যাচ্ছে না। বাড়িতে আটকে রয়েছে ওরা। বুঝতেই পারছেন, মনটা তো ওখানেই পড়ে থাকার কথা!’’ তিনি জানান, আবহাওয়ার জন্য বুধবার থেকেই মেয়ের কলেজে ছুটি ঘোষণা করা হয়েছিল। ছেলের স্কুলেও তাই।
শুক্রবার বিকেলে কাজের ফাঁকে মোবাইলে বারবার বাড়িতে ফোন করার চেষ্টা করতে দেখা যায় ধীরেন্দ্রবাবুকে। ধরা গলায় বলেছিলেন, ‘‘জানি না, বাড়ির সবাই কী অবস্থায় রয়েছে।’’ তবে তাঁর পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন কলকাতা পুরসভার সহকর্মীরা। আর এক কেয়ারটেকার দীপঙ্কর দত্ত বলেন, ‘‘আমরাও ধীরেন্দ্রর বাড়ির সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছি। আমরা ওঁর পাশে সর্বদাই রয়েছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy