প্রতীকী ছবি।
আদালতের নির্দেশ অমান্য করায় অভিযুক্ত প্রোমোটারের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছিল বছর চারেক আগেই। তা-ও এখনও অভিযুক্ত ধরা না পড়ায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
ক্রেতা সুরক্ষা দফতর সূত্রের খবর, বেলেঘাটার বাসিন্দা দুই বৃদ্ধা ফ্ল্যাট কেনার জন্য ২০০৫ সালে প্রোমোটারকে লক্ষাধিক টাকা দিয়েও তা হাতে পাননি। প্রোমোটারের কাছে দরবার করেও কাজ না হওয়ায় ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে যান তাঁরা। সেখান থেকে ওই মামলা দিল্লির জাতীয় ক্রেতা সুরক্ষা আদালত পর্যন্ত গড়ায়। জাতীয় ক্রেতা সুরক্ষা আদালতও প্রোমোটারকে ক্ষতিপূরণ-সহ টাকা ফেরতের নির্দেশ দেয়। কিন্তু আদালতের নির্দেশ অমান্য করায় প্রোমোটারের বিরুদ্ধে ফের মামলা করেন দুই বৃদ্ধা। এর পরেও টাকা না দেওয়ায় প্রোমোটারের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়। কিন্তু চার বছর পরেও তা কার্যকর না হওয়ায় ক্ষুব্ধ মামলাকারী দুই বৃদ্ধা।
বেলেঘাটা অঞ্চলে দু’টি পাড়ায় এক চিলতে ঘরে থাকেন মমতা গুহ ও ক্ষমা দাস। বিয়ের চার বছর পরেই মমতাদেবীর স্বামী মারা যান। কিডনির অসুখে শয্যাশায়ী মমতাদেবীর অভিযোগ, ‘‘সাড়ে তিনশো বগর্ফুটের ফ্ল্যাট বুক করতে প্রোমোটারকে আগাম প্রায় সাড়ে চার লক্ষ টাকা দিয়েছিলাম। ২০০৭ সালেও ফ্ল্যাট না পাইনি। প্রোমোটারকে বারবার বলেও কাজ হয়নি।’’ ক্ষমাদেবীও চার তলার ফ্ল্যাট বুক করতে ওই প্রোমোটারকে অগ্রিম প্রায় তিন লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন। ফ্ল্যাট না পেয়ে দু’জনেই ২০০৯ সালে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে মামলা করেন। আদালত প্রোমোটারকে নির্দেশ দেয়, দু’জনকেই ক্ষতিপূরণ-সহ টাকা ফেরত দিতে হবে। এই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে রাজ্য ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে যান অভিযুক্ত প্রোমোটার। ২০১২ সালে রাজ্য ক্রেতা আদালতও ক্ষতিপূরণ-সহ বাড়তি দশ হাজার টাকা ফেরত দিতে নির্দেশ দেয়।
এর পরে মামলা জাতীয় ক্রেতা আদালত পর্যন্ত গড়ায়। অভিযোগ, জাতীয় আদালতের নির্দেশের পরেও ওই প্রোমোটার টাকা না দেওয়ায় মামলাকারীরা নিম্ন আদালতে ফের মামলা করেন। তার পরেই প্রোমোটারের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়। ক্ষমাদেবী ও মমতাদেবীর অভিযোগ, ‘‘চার বছর আগে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হওয়া সত্ত্বেও অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা গেল না!’’ মামলাকারীদের আইনজীবী দেবাশিস ভাণ্ডারির অভিযোগ, ‘‘চার বছর আগের রায় সত্ত্বেও পুলিশ অভিযুক্তকে ধরতে পারছে না। এর থেকেই বোঝা যায়, আদালতের নির্দেশ কতটা মানা হয়েছে!’’ বিধাননগর (দক্ষিণ) থানার পুলিশ আধিকারিক পার্থ শিকদারের দাবি, ‘‘অভিযুক্ত দীর্ঘদিন ধরে ফেরার। খোঁজ চলছে।’’