ধসের গর্তে বসে গিয়েছে চাকা। শুক্রবার, টালিগঞ্জে। —নিজস্ব চিত্র।
ফের রাস্তায় ধস। এ বার টালিগঞ্জ-করুণাময়ী এলাকার মহাত্মা গাঁধী রোডে। রাস্তার একাংশ বসে যাওয়ায় গর্তে আটকে যায় একটি লরির চাকা। প্রায় দুই বাই চার ফুট গর্ত হয়ে যায় সেখানে। শুক্রবার সকাল থেকে লরিটি আটকে থাকায় যান চলাচল ব্যাহত হয়। পরে ক্রেন ডেকে সেটিকে উদ্ধার করা হয়।
কেন ফের ধস?
এ ব্যাপারে পুরসভার নিকাশি দফতরের এক অফিসার জানান, ওই রাস্তার নীচ দিয়ে গলির মধ্যে যে নিকাশি নালা গিয়েছে, তা ফেটে যাওয়াতেই এই বিপত্তি। তিনি জানান, কয়েক দিন আগেই পাইপটি ফেটে যায়। ফাটা পাইপ থেকে ক্রমাগত জল বেরিয়ে যাওয়ায় নীচের মাটি আলগা হয়ে গিয়েছিল। তার উপর দিয়ে মালবাহী লরি যেতেই এলাকাটি আরও বসে যায়। তার পরে গর্ত বাড়তে থাকে। এর ফলে ওই রাস্তায় যান চলাচলও বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। পরে পুলিশ গিয়ে রাস্তার এক ধার দিয়ে গাড়ি যাতায়াতের ব্যবস্থা করে।
মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমার জানান, খবর পাওয়ার পরেই তা মেরামতের জন্য পুরকর্মীদের পাঠানো হয়। কাজ চলছে। আগামী দু’-এক দিনের মধ্যেই এই কাজ শেষ হয়ে যাবে বলে পুর-কর্তৃপক্ষের দাবি।
সম্প্রতি শহরের সাতটি জায়গায় রাস্তা বসে গিয়েছে। শ্যামবাজারে, ঢাকুরিয়ায়, উল্টোডাঙায়, শোভাবাজারে, চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ে, আমহার্স্ট স্ট্রিটে এবং এ দিন টালিগঞ্জে।
কিন্তু শহরের রাস্তায় বারবার ধস নামার কারণ কী?
ভূগর্ভস্থ জলের পাইপলাইন ফেটে অথবা নিকাশির পাইপ ফেটে শহরের বিভিন্ন জায়গায় ধস নামতে পারে। পুরসভার নিকাশি দফতরের এক আধিকারিক জানান, মাটির তলায় ইটের তৈরি পুরনো বহু ম্যানহোল রয়েছে। সেগুলি কী অবস্থায় রয়েছে, তা জানা নেই। সেগুলি ভেঙে গিয়ে অনেক সময়ে রাস্তা বসে যায়। এ ছাড়াও বারবার রাস্তায় ধসের কারণের জন্য রাস্তা সারানো এবং ইঁদুরের উৎপাতকে দায়ী করেছে পুরসভা। এমনকী একাংশ বিশেষজ্ঞের মতে, শহরের অনেক জায়গায় অবৈধ নির্মাণকাজও সমান ভাবে দায়ী।
পুরসভার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের মেয়র পারিষদ অতীন ঘোষের বক্তব্য, রাস্তা খারাপ হলে মেরামতির জন্য যে সময় দরকার হয়, তা পুরসভা পায় না। কারণ শহরের ট্রাফিক ব্যবস্থা ঠিক রাখার জন্য বেশি দিন রাস্তা আটকে কাজ করা সম্ভব নয়। ফলে সেই জায়গা অনেক সময়ে নড়বড়ে থাকায় সেখানে ধস নামার আশঙ্কা থাকে। একই কথা স্বীকার করেছেন রাজ্য পূর্ত দফতরের আধিকারিকেরাও। মাটির তলায় পুরনো নিকাশি বা পানীয় জলের পাইপের অবস্থা কী রকম, তা জানতে পুরসভা ছবি তুলে রাখার পরিকল্পনা করেছিল। সে ক্ষেত্রে আগে থেকেই ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে। পুর-কর্তৃপক্ষ জানান, কাজ চলছে। তবে তা সময়সাপেক্ষ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy