Advertisement
E-Paper

আয় বাড়লেও ঋণের বোঝা শোধ করতে কূল পাচ্ছে না পুরসভা

চলতি আর্থিক বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত পুরসভার বিভিন্ন বিভাগে কর আদায় হয়েছে ১৪১৭ কোটি টাকা। যার মধ্যে সম্পত্তিকর ৮৮০ কোটি। ২০২১-২২ অর্থবর্ষে সব মিলিয়ে আদায় হয়েছিল ১৩৪১ কোটি টাকা।

মেহবুব কাদের চৌধুরী

শেষ আপডেট: ২১ জানুয়ারি ২০২৩ ০৭:৪২
কলকাতা পুরসভা।

কলকাতা পুরসভা। ফাইল ছবি।

চলতি অর্থবর্ষে গত আট বছরের নিরিখে কর আদায় বাড়লেও স্বস্তিতে নেই কলকাতা পুরসভা। কারণ, পুরসভার ঋণের বোঝা এতটাই বেড়ে গিয়েছে যে, বকেয়া টাকা পরিশোধ করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। অবস্থা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, ঠিক সময়ে বেতন হবে কি না, তা নিয়েও পুরসভার কর্মী-আধিকারিকেরা দুশ্চিন্তায়!

চলতি আর্থিক বছর শেষ হতে এখনও দু’মাসের বেশি বাকি। রাজস্ব আদায় নিয়ে পর্যালোচনা করতে শুক্রবার কর ও রাজস্ব বিভাগের সমস্ত আধিকারিকের সঙ্গে বৈঠকে বসেন পুর কমিশনার বিনোদ কুমার। আগামী দু’মাসে রাজস্ব সংগ্রহ বাড়ানোর জন্য আধিকারিকদের সচেষ্ট হতে নির্দেশ দেন কমিশনার। ইনস্পেক্টরদের অফিসে বসে না থেকে ওয়ার্ডে ঘুরে কাজ করতে বলেছেন তিনি। সেই সঙ্গে নতুন আর্থিক বছরের শুরু থেকেই আদায় বাড়ানোর উপরে জোর দেন।

পুর অর্থ বিভাগ সূত্রের খবর, শুধু ঠিকাদারদের পাওনাই রয়েছে প্রায় ১৩০০ কোটি টাকা। তা-ও এখন তাঁদের ২০২১ সালের মার্চের বকেয়া মেটানো হচ্ছে। ওই মাসেরই বকেয়া ছিল প্রায় ৩২০ কোটি টাকা। যার মধ্যে এখনও প্রায় ১২০ কোটি শোধ করা বাকি। পুর অর্থ বিভাগের এক শীর্ষ আধিকারিক বলেন, ‘‘কোষাগারের অবস্থা ভয়াবহ। আদায় বাড়লেও দায় (দেনা) বেশি থেকে যাচ্ছে। বকেয়া কী ভাবে পরিশোধ করা হবে, তা নিয়ে আমরা ঘোর চিন্তায়।’’

ঠিকাদারদের বকেয়ার পাশাপাশি অবসরপ্রাপ্ত কর্মীরা বেশ কয়েক মাস ধরে গ্র্যাচুইটি ও কমিউটেশন বাবদ প্রাপ্য টাকা পাননি। যা মেটাতে কয়েকশো কোটি টাকা দিতে হবে। ওই টাকা পেতে আগেই পুর পেনশন বিভাগের তরফে কন্ট্রোলার অব মিউনিসিপ্যাল ফিনান্স অ্যান্ড অ্যাকাউন্টস-কে জানানো হয়েছে। গত বুধবার পুর অধিবেশনে ৪৮ নম্বর ওয়ার্ডের পুরপ্রতিনিধি বিশ্বরূপ দে-র প্রস্তাব ছিল, বিভিন্ন ওয়ার্ডে খেলাধুলোর মানোন্নয়নের জন্য আলাদা বরাদ্দ করা হোক। উত্তরে মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘‘ভাঁড়ারের যা হাল, তাতে অর্থ বরাদ্দ করার ক্ষেত্রে অসুবিধা রয়েছে।’’

চলতি আর্থিক বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত পুরসভার বিভিন্ন বিভাগে কর আদায় হয়েছে ১৪১৭ কোটি টাকা। যার মধ্যে সম্পত্তিকর ৮৮০ কোটি। ২০২১-’২২ অর্থবর্ষে সব মিলিয়ে আদায় হয়েছিল ১৩৪১ কোটি টাকা। গত আট বছরে সব থেকে বেশি কর আদায় হয় ২০১৭-’১৮ সালে (১৪১৬ কোটি টাকা)। তার থেকেও চলতি আর্থিক বছরে কর আদায় বেড়েছে।

পুর আধিকারিকদের একাংশের প্রশ্ন, তা হলে কি পুর তহবিল অন্য খাতে ব্যয় হচ্ছে? না কি লাগামছাড়া খরচের কারণেই এই অবস্থা? বাম পুরপ্রতিনিধি তথা অ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারপার্সন মধুছন্দা দেব বলেন, ‘‘খোদ মেয়রই আর্থিক সঙ্কটের কথা স্বীকার করেছেন। পুরপ্রতিনিধি তহবিলের টাকা আটকে রাখা হচ্ছে। তা হলে কি উন্নয়নের টাকা অন্য খাতে ব্যবহার করা হচ্ছে? পুর তহবিলের অবস্থা জানতে শীঘ্রই অ্যাকাউন্টস কমিটির বৈঠক ডাকা হবে।’’ পুর অর্থ বিভাগের এক কর্তার পর্যবেক্ষণ, ‘‘রোপা ২০১৯ চালু হওয়ায় কর্মী ও অবসরপ্রাপ্তদের বেতন, পেনশন বেড়েছে। তার পরেই করোনা শুরু হওয়ায় পরিস্থিতি সঙ্গিন হয়ে পড়ে। তাই আদায় বাড়লেও দেনা বেশি থেকে যাচ্ছে।’’

Kolkata Municpal Corporation Unpaid Debt
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy