ফাইল চিত্র।
কোভিডের জেরে সব আবাসনেই এ বছরও বন্ধ পুজো মণ্ডপের সামনে পাত পেড়ে খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা। কোথাও আবার পুজোর ক’দিন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও তা হবে ভার্চুয়ালি। কোথাও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করবেন শুধু আবাসিকেরাই, বাইরের শিল্পীদের নিয়ে হই-হুল্লোড়ে ‘নিষেধাজ্ঞা’ জারি হয়েছে। কোনও আবাসন কমিটি আবার এ বছরও নিয়মরক্ষার খাতিরে পুজোটা সেরে ফেলে সব আনন্দ তুলে রাখতে চাইছে আগামী বছরের জন্য। দুর্গাপুজোর এক সপ্তাহ আগে শহরের আবাসনগুলির উৎসব-চিত্র এমনই। প্রতিটি আবাসন কমিটির ইচ্ছে থাকলেও জাঁকজমক করে ‘ঝুঁকি’ নিতে নারাজ সকলেই।
দুর্গাপুজোর ঢাকে কাঠি পড়তে বাকি আর কয়েকটা দিন। শহরের প্রায় প্রতিটি আবাসনেই শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি তুঙ্গে। তবে করোনার দাপটে এ বছরও বাজেট কমিয়ে পুজো করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রায় প্রতিটি আবাসন। কোনও কোনও আবাসন জাঁকজমক বাদ দিয়ে দুঃস্থদের সাহায্য করবে বলে ঠিক করেছে, কোনও আবাসনের বাসিন্দারা আবার কোভিড সুরক্ষার দিকেই বাড়তি টাকা খরচের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এর জন্য যেমন পুজোর ক’দিন মণ্ডপ চত্বরে আসা আবাসিকদের শরীরের তাপমাত্রা পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হচ্ছে, তেমনই রাখা হচ্ছে বিশেষ মেডিক্যাল দল। গত বছরই প্রায় সব আবাসনেই একসঙ্গে বসে খাওয়াদাওয়া বন্ধ রেখে খাবারের প্যাকেট পৌঁছে দেওয়া হয়েছিল প্রতিটি ফ্ল্যাটে। এই বছরও সেই পথে হাঁটছে শহরের আবাসনগুলি। পাশাপাশি, প্রসাদেও কাটা ফল না রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আবাসনগুলির একাংশ।
মুকুন্দপুরের একটি আবাসনে খোঁজ নিয়ে জানা গেল, কোনও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে না এই বছর। আবাসনের উৎসব কমিটির সভাপতি সোমা ঘোষ বলেন, ‘‘আমরা জাঁকজমক কমিয়ে দুঃস্থ শিশুদের পড়াশোনার সামগ্রী দেওয়ার পথেই হাঁটছি। খাওয়া-দাওয়া, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সব কিছুই বাতিল করা হয়েছে। সব আনন্দ তুলে রাখছি আগামী বছরের জন্য।’’ অন্য দিকে, বাজেট কমিয়ে প্রায় অর্ধেক করে ফেলেছে কবি সুভাষ মেট্রো স্টেশনের পাশের একটি আবাসনের উৎসব কমিটি। সরকারি নির্দেশিকার পাশাপাশি ছ’জন চিকিৎসক ও এক জন স্বাস্থ্যকর্মীকে নিয়ে তৈরি কোভিড-কমিটির দেওয়া গাইডলাইন মেনে পুজো করা হচ্ছে বলে জানালেন আবাসিকেরা। এই আবাসনের উৎসব কমিটির সভাপতি, চিকিৎসক সুবীর বসাকের কথায়, ‘‘আবাসিকদের সুরক্ষার ক্ষেত্রে কোনও ভাবেই ঢিলেমি নয়। এমনকি, আমরা বসার জায়গাতেও আসন সংখ্যা নির্দিষ্ট করে দিয়েছি। একসঙ্গে সকলে যাতে মণ্ডপের সামনে ভিড় না করেন, তারও ব্যবস্থা করা হয়েছে।’’ গড়িয়াহাটের ম্যান্ডেভিল গার্ডেন্সের একটি পুরনো আবাসনের পুজো কমিটির অন্যতম সদস্য রঙ্গন কোলে বলেন, ‘‘পুজোর আয়োজন অনেক কমানো হয়েছে।’’ একই ভাবে খুব ছোট করে পুজো করার পথে হাঁটছে উল্টোডাঙা, কসবা-সহ শহরের একাধিক বড় আবাসনের উৎসব কমিটি।
তবে সুরক্ষার বিষয়ে নজর দেওয়ার কথা সব আবাসনের তরফে বলা হলেও কার্যক্ষেত্রে সে সব কতটা মানা হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন থাকছেই। গত বছর কোভিডের দাপটের মধ্যে আবাসনের পুজোগুলিতে একাধিক বিধিনিষেধের কথা বলা হলেও পুজোর দিনে নিয়মভঙ্গের ছবি ধরা পড়েছিল। এই বছর তুলনামূলক ভাবে কোভিডের দাপট কম থাকায় এবং অধিকাংশ আবাসিক প্রতিষেধকের দু’টি ডোজ়ই পেয়ে যাওয়ায় বিধি-ভঙ্গ লাগাম ছাড়াবে কি না, সেই শঙ্কার কথা তুলছেন আবাসিকদেরই কেউ কেউ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy