Advertisement
০২ মে ২০২৪
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়

অবশেষে সিসিটিভি বসানোর উদ্যোগ শুরু

গত বছর ১ জুলাই কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের ঘরের বাইরে এক শ্রেণির ছাত্র এবং কিছু বহিরাগতের হাতে নিগৃহীত হতে হয়েছিল শিক্ষকদের। সেই ঘটনার তদন্তের জন্যে উপাচার্য সুগত মারজিত একটি কমিটি গড়ে দেন। তদন্তে প্রাথমিক ভাবে কয়েক জনকে দোষী বলে মনে হলেও সাক্ষ্যপ্রমাণ জোগাড় করা যায়নি। চিহ্নিত করা যায়নি দোষী ছাত্রদের। তখনই ক্যাম্পাসে সিসিটিভি বসানোর দাবি উঠেছিল। কিন্তু হয়নি।

সুপ্রিয় তরফদার
শেষ আপডেট: ২৩ মে ২০১৬ ০২:০২
Share: Save:

গত বছর ১ জুলাই কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের ঘরের বাইরে এক শ্রেণির ছাত্র এবং কিছু বহিরাগতের হাতে নিগৃহীত হতে হয়েছিল শিক্ষকদের। সেই ঘটনার তদন্তের জন্যে উপাচার্য সুগত মারজিত একটি কমিটি গড়ে দেন। তদন্তে প্রাথমিক ভাবে কয়েক জনকে দোষী বলে মনে হলেও সাক্ষ্যপ্রমাণ জোগাড় করা যায়নি। চিহ্নিত করা যায়নি দোষী ছাত্রদের। তখনই ক্যাম্পাসে সিসিটিভি বসানোর দাবি উঠেছিল। কিন্তু হয়নি।

সে বার ছিল তৃণমূল ছাত্র-পরিষদের বিরুদ্ধে অভিযোগ। এ বছর ফেব্রুয়ারি মাসে রাতের অন্ধকারে ওই বিশ্ববিদ্যালয়েরই কলেজ স্ট্রিট ক্যাম্পাসে তৃণমূল পরিচালিত ছাত্র সংসদের জানলা-দরজায়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ছবিতে কে বা কারা কালি লেপে দিয়েছিল। সে বারেও তদন্ত কমিটি গড়া হয়েছিল। অভিযোগ উঠেছিল এসএফআই-এর বিরুদ্ধে। কিন্তু, সে বারেও কাউকে চিহ্নিত করা যায়নি। আবারও সিসিটিভি বসানোর দাবি ওঠে এবং আবার তা উপেক্ষা করেন কর্তৃপক্ষ। সে বার শুধু বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ঢোকার সময়ে পরিচয়পত্র দেখানোটা বাধ্যতামূলক করে দেওয়া হয়। তবে, সেই কড়াকড়ি কিছু দিন চলার পরে যথারীতি আর থাকেনি।

শেষ ঘটনাটির সঙ্গে জড়িত একা এক মহিলা। চলতি মাসেই এক দিন দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ স্ট্রিট ক্যাম্পাসের আশুতোষ ভবনের উপরে উঠে বাংলা বিভাগে ভাঙচুর চালান ওই যুবতী। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ওই ছাত্রীর বাড়ি দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিষ্ণুপুরে। ‘ঠিক মতো পড়াশোনা হচ্ছে না’, এই অভিযোগ তুলে ওই যুবতী ভাঙচুর চালান বলে জানা যায়। পরে ওই যুবতীকে ধরে নিয়ে গিয়ে পুলিশ জানিয়েছিল, তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন।

কর্তৃপক্ষের টনক নড়েছে তার পরে। এত দিনে ঠিক হয়েছে সিসিটিভি বসবে। শুধু কলেজ স্ট্রিট ক্যাম্পাস নয়, আলিপুর, সল্টলেক, রাজাবাজার এবং বালিগঞ্জ সায়েন্স কলেজ ক্যাম্পাসেও ক্লোজ্‌ড সার্কিট ক্যামেরা বসানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ উপাচার্য (শিক্ষা) স্বাগত সেন বলেন, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে ঢোকার ক্ষেত্রে এমনিতেই বেশ কিছু নজরদারি শুরু হয়েছে। তবে তা আরও সুনিশ্চিত করতে সিসিটিভি বসানোর সিদ্ধান্তই নেওয়া হয়েছে।’’

প্রাথমিক ভাবে প্রতিটি ক্যাম্পাসের প্রবেশ পথে বসানো হবে সিসিটিভি। তা মনিটর করা হবে একটি ঘর থেকে। বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্তা জানান, তাঁদের কয়েক জন অফিসারকে নিয়ে একটি কমিটি গঠন করে ক্যাম্পাসগুলির অবস্থা খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে। তাঁদের দেওয়া রিপোর্টের উপর ভিত্তি করেই প্রথম পর্যায়ে বসানো হবে সিসিটিভি।

এই সিসিটিভি বসানো নিয়ে কম বিতর্ক হয়নি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে। ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য অভিজিৎ চক্রবর্তী গোটা ক্যাম্পাস এবং তাঁর ঘরের সামনে সিসিটিভি বসিয়েছিলেন। তা নিয়ে অসন্তুষ্ট হয়েছিলেন পড়ুয়াদের একাংশ। বর্তমান উপাচার্য সুরঞ্জন দাস দায়িত্ব নিয়েই সব সিসিটিভি খুলে ফেলেন। সেখানে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে সিসিটিভি বসালে পড়ুয়ারা সেটা কি ভাল ভাবে নেবেন?

এক শিক্ষকের কথায়, ‘‘এ ক্ষেত্রে ছাত্র সংসদই পাশে রয়েছে। বিতর্কের কোনও সম্ভাবনাই নেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kolkata University CCTV
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE