রাস্তায় পড়ে রয়েছে ছোট্ট রাজদীপের জুতো। —নিজস্ব চিত্র।
চলন্ত অটোয় মায়ের কোল থেকে পড়ে মৃত্যু হল দেড় বছরের শিশুর। মঙ্গলবার দুর্ঘটনাটি ঘটে বরাহনগরের অক্ষয়কুমার মুখার্জি রোডের বিবেক মোড়ে।
টবিন রোড থেকে প্রমোদনগর রুটের একটি অটোতে একমাত্র সন্তান রাজদীপকে নিয়ে উঠেছিলেন নোয়াপাড়া বীরেশ্বরনগরের বাসিন্দা রিঙ্কি সর্দার। বরাহনগরের বঙ্গলক্ষী মোড় থেকে বাজার করে বাড়ি ফিরছিলেন তিনি।
অটোতে তাঁর সহযাত্রীরা পুলিশকে জানিয়েছেন, রিঙ্কির হাতে ছিল বাজার ভর্তি কয়েকটা প্লাস্টিকের ব্যাগ। শিশুটি প্রথমে মায়ের কোলেই বসেছিল। বিটি রোড ছেড়ে অক্ষয়কুমার মুখার্জি রোডে ঢোকে অটো। তার মধ্যেই দেড় বছরের রাজদীপ কোল থেকে নেমে মায়ের সামনে দাঁড়ায়। তার হাতে একটা চিপসের প্যাকেট ছিল। অটো তত ক্ষণে বিবেক মোড়ের কাছে।
দেখুন ভিডিয়ো...
আরও পড়ুন: বাঁচাও বাবা! তারকেশ্বরে পুজো দিল ৩ চোর, তারপর...
বরাহনগর পুরসভার ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অঞ্জন পাল। তিনি বিবেক মোড়ে তার দলীয় কার্যালয়ে বসেছিলেন। অঞ্জন বলেন, “আমার সামনেই ঘটনাটা ঘটল। হঠাৎ একটা আওয়াজ। সবাই চেঁচিয়ে উঠল। দেখি বাচ্চাটা রাস্তায় পড়ে রয়েছে। অটোটা একটু সামনে দাঁড়ি়য়ে গেল। শিশুটা তখনও কাঁদছে। আমরা সবাই শিশুটিকে বরাহনগর স্টেট জেলারেল হাসপাতালে পাঠালাম। বাইরে থেকে কোনও রকম আঘাত ছিল না শিশুটির।”
হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরেই ছোট্ট রাজদীপকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসক। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, রাজদীপের শরীরে বাইরে থেকে কোনও আঘাত ছিল না। প্রাথমিক ভাবে তাঁদের ধারণা, মস্তিস্কে অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ বা মেরুদণ্ডে আঘাত থেকেই এই মৃত্যু।
দীপক দাসও ছিলেন ঘটনাস্থলেই। তিনি বলেন, “অটোতে চার জন যাত্রী ছিল। শিশুটির মা পেছনে এক দম বাঁ দিকে বসেছিলেন। অক্ষয় মুখার্জি রোড গোটাটাই আঁকা বাঁকা। সেই সঙ্গে যথেষ্ট ঘিঞ্জিও। অটোটি খুব একটা জোরেও যাচ্ছিল না।”
মৃত শিশু (ইনসেটে) ও তার মা। —নিজস্ব চিত্র।
তা হলে কী ভাবে ঘটল এ রকম মর্মান্তিক দুর্ঘটনা?
ঘটনাটি যেখানে ঘটেছে সেটা একটা রাস্তার বাঁকের মুখ। প্রাথমিক ভাবে তদন্তকারীদের ধারণা, অটোটি বাঁক ঘোরার সময় আচমকা ব্রেক কষে। রাজদীপ মায়ের সামনে দাঁড়িয়ে থাকলেও তার হাত ধরা ছিল না। উল্টে তার হাতে ছিল চিপসের প্যাকেট। তাই অটোটি বাঁক ঘুরতেই বেসামাল হয়ে পড়ে যায় ছোট্ট রাজদীপ।
ঘটনার আকস্মিকতায় প্রথমে কিছুই বুঝতে পারেননি মা রিঙ্কি। পরে হাসপাতালে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। তিনিও কাঁদতে কাঁদতে জানান, অটোটি আচমকাই ব্রেক কষে। ইতিমধ্যে অবস্থা বেগতিক দেখে চম্পট দেয় অটোটি।
বরাহনগর থানা অটোচালকের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ২৭৯ এবং ৩০৪ এ ধারায়, বেপরোয়া অটো চালানো এবং গাফিলতির জন্য মৃত্যুর অভিযোগে এফআইআর করেছে। ওই অটো রুটের সেক্রেটারি সন্দীপ দে ওরফে বাবলা বলেন, ‘‘অটোচালকের নাম ভোলা দত্ত। তাঁকে অবিলম্বে থানায় আত্মসমর্পন করতে বলা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy